আমেরিকার ভিসা পেতে দিতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্য
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:২৮ পিএম, ২ জুন ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ১২:৩৫ পিএম, ২ জুন ২০১৯ রবিবার
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দিতে নতুন আইন চালু করছে ট্রাম্প প্রশাসন। আইন অনুযায়ী ভিসা পেতে হলে আবেদনকারীকে অন্যান্য তথ্যের পাশাপাশি এখন থেকে দিতে হবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিস্তারিত তথ্য। গত বছরের মার্চ মাসে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন এই বিধি আরোপের প্রস্তাব করেছিল।
তবে, কূটনীতিক ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের ভিসার ক্ষেত্রে অবশ্য এই বিধির কঠোরতা থাকছে না। তবে কেউ সোশ্যাল মিডিয়া সংক্রান্ত ভুল তথ্য দিয়ে ভিসা পাওয়ার চেষ্টা করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, আবেদনকারীকে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহৃত নাম এবং গত পাঁচ বছর যাবত ব্যবহার করছে এমন ই-মেইল এবং ফোন নম্বর জমা দিতে হবে।
গত বছর যখন এই নিয়মের প্রস্তাব করা হয়, তখন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর হিসেব করে দেখেছিল যে, এর ফলে এক কোটি সাতচল্লিশ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করবে।
যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ কিংবা পড়াশুনার জন্য যারা যেতে আগ্রহী তাদের জন্য মূলত এ আইন। তবে কেউ যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার না করে, তাহলে তার ক্ষেত্রে এ আইন প্রযোজ্য নয় বলে জানানো হয়েছে।
বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিসা আবেদনকারীদের সোশ্যাল মাধ্যমের কর্মকাণ্ড নজরদারীতে রাখতেই এমন আইন চালু করতে চায় মার্কিন প্রশাসন।
দেশটির প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে দেখা গেছে যে সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডের জন্য একটি ক্ষেত্র হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এর মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের বাছাই করা সম্ভব হবে বলে মনেকরেন কর্মকর্তারা।
সেময় মার্কিন সরকারের এমন প্রস্তাবে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়ন নামে একটি মানবাধিকার সংস্থা বলেছিল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নজদারী করে ইতোপূর্বে কোন ইতিবাচক ফল আসছে এমন প্রমাণ নেই।
সংস্থাটির দাবি, এর ফলে মানুষ অনলাইনে তাদের মতপ্রকাশের বিষয়টি নিজে থেকেই সীমিত করে ফেলবে।
সাম্প্রতিক সময়ে সন্ত্রাসী হামলার বিভিন্ন ঘটনা আমেরিকান সরকারকে এ আইন প্রণয়নে যৌক্তিক পথ দেখিয়েছে।
গত মার্চে ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে নৃশংস হামলা চালিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি ছড়িয়ে দিয়ে ভিতির সৃষ্টি করেছিল অস্ট্রেলিয়ান এক সন্ত্রাসী। ওই হামলায় ৪০ জন মুসলিম নিহত হয়।
পরের মাসে শ্রীলংকায় ইস্টার সান্ডের দিনে ভয়াবহ হামলায় ৩৬০ জনের বেশি লোক মারা যায়। এ হামলার ঘটনায় দেশটির মুসলিমদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালায় বৌদ্ধরা। নতুন করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্ম নেয়।
এসব কিছু বিবেচনায় এনে ২০১৮ সালের করা এমন আইনের প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে আমেরিকান প্রশাসন।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
আই//এমএইচ//