ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

১০ টাকায় চিকিৎসা ও ওষুধ মিলে যে হাসপাতালে

নিলয় মামুন

প্রকাশিত : ০৬:৩৯ পিএম, ২ জুন ২০১৯ রবিবার

বেসরকারি মেডিকেলে যেখানে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে গুণতে হয় শত শত টাকা, সেখানে মাত্র ১০ টাকায় রাজধানী ঢাকার একটি হাসপাতালে মিলছে সব চিকিৎসা সেবা। শুধু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নয়, বিনা মুল্যে পাওয়া যায় ওষুধও।

রাজধানীর উত্তরায় আজমপুরের অবস্থিত কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে পাওয়া যায় এ সেবা। রয়েছে ২৪ ঘণ্টা জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থাও। সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত এখানে চিকিৎসকরা রোগী দেখেন। রাজউক স্কুল অ্যান্ড কলেজের পিছনে অবস্থিত এ হাসপাতালে রয়েছে সব অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিও।

২০০১ সালে কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটির অর্থায়নে উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরের ঈশা খাঁ রোডে তিন একর জমির ওপর নির্মাণ করা হয় এ হাসপাতাল। ওই বছরের ১০ জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন। একই বছরের অক্টোবরে সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে। এরপর ২০০২ সালে আর্থিক সংকটের কথা জানিয়ে কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটি ওই হাসপাতাল থেকে তাদের সহায়তা তুলে নেয়। একপর্যায়ে চুক্তি করে ওই বছরের ১৮ ডিসেম্বর হাসপাতাল ভবনটিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মাধ্যমে আমেরিকান হসপিটাল কনসোর্টিয়ামের কাছে হস্তান্তর করা হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ২০০৮ সালের ৩০ জুনের মধ্যে আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতালে উন্নীত করার কথা থাকলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। এরপর হাসপাতালটি সরকারি ব্যবস্থাপনায় নেওয়ার প্রস্তুতির মুহূর্তে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আদালতের শরণাপন্ন হলে লিজ চুক্তি বাতিলের বিষয়টি ঝুলে যায়। পরে সরকারের আওতায় এনে হাসপাতাল চালু করা হয়। এর পর ২০১৭ সালের মে মাসের দিকে চিকিৎসা সেবা শুরু হয় এতে।

হাসাপাতালের প্রতিটি কক্ষেই রয়েছে চিকিৎসক ও মেডিকেল অফিসার। সিরিয়াল অনুযায়ী অপেক্ষমাণ রোগীদের ডেকে নেন হাসপাতালের আয়ারা। হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর পাশাপাশি আছে আলট্রাসনোগ্রাফি, এক্স-রে, ইসিজি, ইকো ও রক্তের কয়েকটি টেস্টের ব্যবস্থা। আছে অপারেশন থিয়েটার, পরীক্ষা-নিরীক্ষা বিভাগ, আইসিইউ, ওয়ার্ড, কেবিন, বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগসহ অন্তত ২২টির মতো বিভাগ।

১০ টাকায় উন্নতমানের বিশেষজ্ঞের চিকিৎসা পেয়ে খুশি রোগীরাও। রোগীদের কয়েকজন স্বজন জানান, বাহিরে বেসরকারি মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে গেলে অনেক টাকা ফি দিতে হয় ডাক্তারকে। কিন্তু এখানে চিকিৎসার পাশাপশি ওষুধও আমাদের দেওয়া হচ্ছে। এমন সুবিধার কারণে আমাদের মত গরিব রোগীরা বাহিরে কোথাও যেতে হচ্ছে না।

ছুটির দিনেও সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগ খোলা রয়েছে। আর সেখানে বিভিন্ন ধরনের রোগী জরুরি চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক শারমিন সুলতানা জানান, আমরা ২৪ ঘণ্টা রোগীদের এভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। ছুটির দিনেও বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে রোগীরা আসেন। আমারা আমাদের সাধ্যমত সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। 

 

এনএম/এসএইচ/