ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

টাইগারদের জয়ের ৫ কারণ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২৩ এএম, ৩ জুন ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ০৪:১৪ পিএম, ৪ জুন ২০১৯ মঙ্গলবার

এবারের বিশ্বকাপে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ১৫০ রানের গণ্ডি অতিক্রম করতে পারেনি প্রথম ম্যাচে। সেখানে নিজেদেরই রেকর্ড ভেঙে ৩৩১ রানের লক্ষ্যমাত্রা রেখে ২১ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দিল বাংলাদেশ।

রোববার লন্ডনের ওভাল স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকা টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে পাঠায়। তবে টস হেরে গেলেও ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৩৩০ রান করে টাইগাররা।

জবাবে ৩০৯ রানে গুটিয়ে যায় প্রোটিয়ারা। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন সাকিব। এছাড়া মাত্র ২১ রানে হারলেও এ ম্যাচে শুরু থেকেই বেশকিছু জায়গায় বাংলাদেশ থেকে পিছিয়ে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। টাইগারদের এই অসাধারণ জয়ের কারণ কী? চলুন জেনে নেওয়া যাক-

টাইগারদের উড়ন্ত সূচনা

টস হেরে হাতের চোট নিয়ে খেলতে নেমে প্রত্যাশিত ব্যাটিং করতে পারেননি তামিম ইকবাল। ইনিংসের শুরু থেকে সৌম্য সরকার একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকালেও উইকেটের অন্য প্রান্ত আগলে রাখেন তামিম।

কিন্তু আন্দিলে ফিলোকাওয়ের গতির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন দেশসেরা ওপেনার। তার আগে ২৯ বলে দুটি চারের সাহায্যে ১৬ রান করেন তামিম।

তবে অন্য প্রান্তে দৃষ্টিনন্দন সব শটে ৩০ বলে ৯ চারে ৪২ রান করেন সৌম্য সরকার। তার ব্যাটিংটাই দলকে আত্মবিশ্বাস এনে দেয় বড় স্কোরের।

দলীয় ৭৫ রানে ক্রিস মরিসের বাউন্সি বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে বিপদে পড়েন দুর্দান্ত খেলতে যাওয়া সৌম্য। ক্রিস মরিসের করা বলটি সৌম্যর মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছিল।

সাকিব-মুশফিকের জুটি

বাংলাদেশ প্রথমে ৭৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি বাঁধেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম এবং সাকিব আল হাসান। তারা দুজন গড়ে তোলেন ১৪২ রানের বড় জুটি। মুশফিক ৭৮ ও সাকিব খেলেন ৭৫ রানের ইনিংস।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩৪তম ফিফটি করেন মুশফিক। আর ক্যারিয়ারের ৪৩তম অর্ধশত করেন সাকিব।

এই দুই সিনিয়র ক্রিকেটার বাংলাদেশকে শক্ত ভিতের উপরে দাঁড় করিয়ে দেন। এই কারণেই আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যায় টাইগারদের। এ রকম পার্টনারশিপের পর এবারের বিশ্বকাপ জমে উঠেছে বলছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।

লোয়ার অর্ডারের দৃঢ়তা

সাকিব-মুশফিক আউট হলে খানিকটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে সে চাপ সামাল দেন আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মিঠুন এবং মোসাদ্দেক সৈকত দুজনেই যথাক্রমে ২১ ও ২৬ রান করে মাহমুদুল্লাহকে সমর্থন করেন। সে কারণেই শেষ ১০ ওভারে ৮৬ রান তুলতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ।

ফলে ইংল্যান্ডের মাটিতে গৌরবের নতুন ইতিহাস রচনা করল বাংলাদেশ। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের ও এই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ স্কোর করতে সামর্থ হয় মাশরাফির দল।

গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট নেওয়া

কোয়েন্টিন ডি কক তার সতীর্থ ব্যাটসম্যানের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান। এছাড়া মার্করামের সঙ্গে ডু প্লেসির জুটিটাও জমে উঠেছিল। মার্করাম যখন পঞ্চাশ এর পথে, সে সময় ৫ রান দূরে থাকতে তাকে বোল্ড করেন সাকিব। ভাঙেন ৫৩ রানের জুটি। এরপর ডু প্লেসিকেও যখন ভয়ংকর মনে হচ্ছিল, সে সময় ৬২ রানে তাকে ফেরত পাঠান মিরাজ।

এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট তুলে নেন বাংলাদেশের বোলাররা। মুস্তাফিজ ৩টি, সাইফুদ্দিন ২টি ও সাকিব-মিরাজ নেন একটি করে উইকেট।

দলীয় পারফরম্যান্সে পার্থক্য

বাংলাদেশ এ ম্যাচে পুরো দল হিসেবে খেলেছে। কারো একক পারফরম্যান্সে উপর তারা নির্ভর করেনি। মুশফিক-সাকিবের ফিফটির সঙ্গে রিয়াদ ও সৌম্যর অবদান। বোলিংয়ে উইকেট ভাগাভাগি করেছেন ৪ জন মিলে। এ দিকটাতেই পিছিয়ে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।

দলে দুটি পরিবর্তন এনেও পুরো দল হিসেবে জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। ডু প্লেসি ফিফটি করলেও অন্যরা সেট হয়েও আউট হয়েছেন।

বোলিংয়ে পেহলাকায়ো, তাহির ও মরিস দুটি করে উইকেট পেলেও রান আটকাতে পারেননি।

(বিবিসি অবলম্বনে)

একে/এমবি