ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

ভারত নাকি বাংলাদেশের নাগরিক অঞ্জু ঘোষ?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪১ এএম, ৭ জুন ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ১০:৫৪ এএম, ৭ জুন ২০১৯ শুক্রবার

বাংলাদেশের অন্যতম সফল ও জনপ্রিয় সিনেমা হচ্ছে ‘বেদের মেয়ে জোৎস্না’। এর নায়িকা হচ্ছে অঞ্জু ঘোষ। তিনি সম্প্রতি ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। যোগ দেওয়ার পরই তার নাগরিকত্ব নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেস থেকে অঞ্জু ঘোষের নাগরিকত্ব নিয়েই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। বলা হয়েছে, তিনি আসলে বাংলাদেশের নাগরিক এবং কারসাজি করে তাকে ভারতের নাগরিক বানানো হয়েছে।

একজন বিদেশি কীভাবে ভারতের একটি রাজনৈতিক দলে যোগ দেন, সেই প্রশ্ন তুলছে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল।

তবে বিজেপি দাবি করেছে ঘোষের বাবা বাংলাদেশি ছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার জন্ম কর্ম, সবই কলকাতায়।বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতেই বুধবার দলে যোগ দেন ঘোষ।

ঘোষের নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলে বিজেপি নেতা বলেন, ‘ওর জন্মের সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট, ভোটার কার্ড - সবই আমরা দেখেছি। তার বাবা বাংলাদেশের মানুষ ছিলেন, তিনি আর জীবিত নেই। কিন্তু মা এখানকার মানুষ। তিনি সল্ট লেকে থাকেন বহু বছর ধরে। সব নথিই আমরা সামাজিক মাধ্যমে তুলেও দিয়েছি। এ নিয়ে অযথা বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে।’

এই বিতর্কের প্রেক্ষিতে একটি সংবাদ সম্মেলন হয় রাজ্য বিজেপি সদর দফতরে। সেখানে দলের নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার যেসব নথি পেশ করেছেন, সেগুলো বিজেপির ‘মিডিয়া সেল’ সাংবাদিকদের দিয়েছে।

সেই নথিতে মিজ ঘোষের দুটি পৃথক জন্মতারিখ পাওয়া যাচ্ছে। কলকাতা পুরনিগমের জন্ম রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, আধার কার্ড আর ভারতীয় পাসপোর্ট অনুযায়ী তার জন্মের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৬।

জন্ম রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটটি ইস্যু করা হয়েছে অবশ্য অনেক পরে - ২০০৩ সালের ২২ ডিসেম্বর। আবার আয়কর দপ্তরের পার্মানেন্ট অ্যাকাউন্ট নাম্বারে জন্ম তারিখ দেওয়া আছে ৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৭।

দেওয়া হয়েছে ঘোষের ভোটার পরিচয়পত্রও। সেখানে ২০০২ সালের পয়লা জানুয়ারিতে তার বয়স লেখা রয়েছে ৩৫ বছর। অর্থাৎ জন্মসাল ১৯৬৭। তার দুটি পৃথক জন্ম তারিখ কীভাবে হল, বিজেপি অবশ্য এখনও পর্যন্ত তার ব্যাখ্যা দেয় নি।

অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস আবারও বলছে, কোথাও একটা কারসাজি করে অঞ্জু ঘোষকে ভারতীয় নাগরিক হিসাবে দেখানো হচ্ছে।

দলের নেতা রাহুল চক্রবর্তীর কথায়,‘২০০২ সালে তার ভোটার কার্ড ইস্যু হচ্ছে আর তিনি পাসপোর্ট পাচ্ছেন ২০১৮ সালে! এটা হয় নাকি? আমরা নিঃসন্দেহ যে ২০১৮ সালের আগেও তিনি বাংলাদেশে গেছেন, থেকেছেন, কাজ করেছেন! কীভাবে গেলেন তাহলে? আমরা এখনও বলছি, অঞ্জু ঘোষ বাংলাদেশের নাগরিক। একটা কারসাজি করা হয়েছে কোথাও।’

একজন বিদেশি নাগরিককে কীভাবে দেশের ক্ষমতাসীন দলের সদস্য করা হয়, সেই প্রশ্নও তুলছেন চক্রবর্তী।

লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে দারুণ ফলাফল করার পরে ভারতীয় জনতা পার্টিতে নানা পেশার মানুষের, নানা দলের নেতা কর্মীদের যোগদান করার ধুম লেগে গেছে। এর জন্য বিজেপি রীতিমতো যোগদান মেলারও আয়োজন করছে। এর ফলে একাধিকবার বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

এমএইচ/