ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

অ্যাসিড নিক্ষেপের বিষয়ে মুখ খুললেন মিলা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:৫২ পিএম, ৭ জুন ২০১৯ শুক্রবার

সংগীতশিল্পী মিলা। বেশ বিড়ম্বনায় আছেন ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সাবেক স্বামী পাইলট এস এম পারভেজ সানজারির শরীরে অ্যাসিড নিক্ষেপের অভিযোগে এ মমলা করা হয়েছে। রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলাটি করেছেন সানজারির বাবা এস এম নাসির উদ্দিন। গত বুধবার করা ওই মামলায় মিলা ছাড়াও আসামি করা হয়েছে তার সহকারী পিটার কিমকে। এরই মধ্যে মামলার বিষয়ে মুখ খুললেন মিলা। 

মিলা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি এখন এক নম্বর আসামি হয়ে গেছি। অ্যাটেম টু মার্ডার এবং অ্যাসিড নিক্ষেপের এক নম্বর আসামি। আমার তো জীবন শেষ এখানে। দেশের সেরা আর্টিস্ট হয়ে আমি কি এমন একটা বোকামি করব?’

এই সংগীতশিল্পী আরও বলেন, ‘আমাকে এক নম্বর আসামি করা মানে ওর (পারভেজ সানজারি) বিরুদ্ধে আমার যা যা অভিযোগ আছে, অ্যাসিড মারার পরে তা আর থাকে? আমার মামলাই তো এখানে শেষ হয়ে যায়।’

মামলার বিষয়ে পুলিশ কিছু বলেছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে মিলা বলেন, ‘পুলিশ একবার জিজ্ঞেস করেছে, কিন্তু অ্যারেস্টের (গ্রেপ্তার) বিষয়ে কিছু বলেনি। পুলিশে বলেছে, আমরা তো প্রমাণ পাইনি।’

মিলা আরও বলেন, ‘আমি কোনোভাবে বুঝতেছি না, একটা জিনিস কি মানুষের মাথায় আসার কথা না যে, এরকম একটা মামলা চলতেছে, এই পরিস্থিতিতে ও (সানজারি) যদি আমার কোনো ক্ষতি করে বা আমি যদি তার ক্ষতি করি, স্বাভাবিকভাবেই তো ওরে দোষ দেবে বা আমাকে দোষা দেবে, তাই না?’

সহকারী পিটার কিম অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে জানিয়ে মিলা বলেন, ‘নিশ্চয় আমি তো বস্তির ছ্যাঁচড়ার মতো কাজ করব না। আর যদি ছ্যাঁচড়ার মতো কাজ করাতেই হতো, আমি কি আমার অ্যাসিস্ট্যান্টরে বলাতাম যে, ‘তুই গিয়ে কর’। নিশ্চয় না, রাস্তার একটা ছেলেকে বলতাম। এখন আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট গেছে ভেগে, ছেলেটা একটু পাগল টাইপের। ও (অ্যাসিড নিক্ষেপ) করতেই পারে। এখন ছেলেটাকে তো আমরা কন্টাক্ট করার চেষ্টা করছি। কিন্তু সানজারি যেগুলো বলতেছে, আমার গাড়ি দাঁড়াই ছিল ওখানে, এগুলোর তো একটা প্রমাণ থাকতে হবে।’

সাবেক স্বামীর কাছে মিডিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে মিলা বলেন, ‘আমি যাইতেও পারতেছি না ওখানে। আমি বারবার চাচ্ছি যে ওখানে যাব, আমার যাওয়াটা কিন্তু খুব জরুরি। আমি না গেলে বার্নটাও দেখতেছি না। ওরে (পারভেজ সানজারি) আমি ভালো করে চিনি, ও একমাত্র আমার সামনেই ভয় পাবে। আমি ওর সামনে দাঁড়ালে ও কিন্তু তখন… একদম মিডিয়া নিয়ে যাওয়া উচিত ওর সামনে।’

উল্লেখ্য, গত ৪ জুন পারভেজ সানজারির বাবা এস এম নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে এসিড অপরাধ দমন আইনের ৫ (খ) ৭ ধারায় একটি মামলা করেন। এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছেন, গত ২ জুন রাত ৮টার দিকে উত্তরায় তিন নম্বর সেক্টর এলাকার ৭/বি সড়কে পারভেজের গায়ে এসিড নিক্ষেপ করা হয়।

ঘটনার পর পারভেজ সানজারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হন। এসিডে সানজারির দুই উরু, পেট, দুই হাত ও পায়ের কিছু অংশ ঝলসে গেছে বলে জানান হয়।

সানজারি জানান, গত রোববার রাতে মোটরসাইকেলে পাইলট ক্লাবে খেলা দেখতে যাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় দুর্বৃত্তরা তার পথরোধ করে শরীরে দাহ্য পদার্থ ছুড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। দুর্বৃত্তদের সঙ্গে তার সাবেক স্ত্রী মিলার সহকারী কিমকে দেখতে পান বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, কণ্ঠশিল্পী মিলার সঙ্গে ২০১৭ সালের মে মাসে পারিবারিকভাবে বৈমানিক পারভেজ সানজারির বিয়ে হয়। এরপর ওই বছরের অক্টোবরে মিলা বাদী হয়ে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় নারী নির্যাতন ও যৌতুক দাবির অভিযোগ করে সানজারির বিরুদ্ধে মামলা করেন। মিলার করা সেই মামলা এখনো চলমান। এরইমধ্যে ২০১৮ সালের ২২ মে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

এছাড়া মিলার ফেসবুকে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে গত ২১ এপ্রিল সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন তার সাবেক স্বামী সানজারি। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত চলছে।

অপরদিকে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন মিলা। তবে সানজারির অভিযোগ, বিবাহ বিচ্ছেদের পর থেকে মিলা তাকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। তারা প্রায়ই একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছেন।

এসএ/