ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

শ্রীলংকায় চাপেরমুখে মুসলিম মন্ত্রীদের পদত্যাগ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:১৫ এএম, ৮ জুন ২০১৯ শনিবার

ইস্টার সানডে হামলার ঘটনার জেরে চলমান সংকটেরমুখে শেষ পর্যন্ত চাপেরমুখে ইস্তফা দিতে বাধ্য হলেন শ্রীলংকার সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ৯ মন্ত্রী। একই সঙ্গে পদত্যাগ করেছেন দুই মুসলিম রাজ্যপালও। গত সোমবার তারা ইস্তফাপত্র জমা দেন।

২১ এপ্রিলের ওই হামলার ঘটনায় মুসলিমদের দায়ী করে আসছে দেশটির সন্ন্যাসী, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানরা। এরই অংশ হিসেবে গত কয়েকদিন ধরে মুসলিম মন্ত্রীদের পদত্যাগের দাবিতে দেশটির প্রভাবশালী বৌদ্ধ সন্ন্যাসী আথুরালিয়ে রাথানার আমরণ অনশন করে আসছিল।  এমন চাপেরমুখে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করলেন মন্ত্রীরা।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুসলিম মন্ত্রীদের গণপদত্যাগে বাধ্য করার ঘটনায় বেশ কয়েকজন সিনিয়র রাজনীতিকসহ উদারমনা অনেকেই নিন্দা জানিয়েছেন। বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর সাম্প্রদায়িক দাবি নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে।

শ্রীলঙ্কায় মোট জনসংখ্যা দুই কোটি ১০ লাখ। এর মাত্র ৯ শতাংশ মুসলিম। চলতি বছরে গত ২১ এপ্রিল ভারত মহাসাগরীয় দেশটির তিনটি চার্চ ও তিনটি বিলাসবহুল হোটেলে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে।

এতে ২৫৩ জন নিহত ও কয়েকশ’ আহত হন। এ ঘটনায় দায় স্বীকার করে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস।

স্থানীয় মুসলিমদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার পারদ বাড়তে থাকে। মুসলিমদের ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা ও ইসলামী প্রতিষ্ঠানে হামলা চালাতে থাকে বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানরা।

এরই মধ্যে দুই প্রাদেশিক গভর্নর ও এক মন্ত্রী- সিনিয়র তিন মুসলিম কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবিতে ভক্তদের নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন একাধারে প্রভাবশালী সন্ন্যাসী, পার্লামেন্টের এমপি ও প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার উপদেষ্টা আথুরালিয়ে রাথানা।

ঘোষণা দেন, প্রেসিডেন্ট ওই তিন কর্মকর্তাকে না সরানো পর্যন্ত আমরণ অনশন করবেন তিনি। সন্ন্যাসী ওই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলাকারীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করেন।

তার সমর্থনে রাজধানী কলম্বো ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভও হয়। দিনচারেক আগে মন্ত্রিসভার সংখ্যালঘু সদস্যদের সরানোর দাবিতে প্রবল বিক্ষোভও হয়। অভিযোগ ওঠে, শ্রীলংকার আঞ্চলিক ইসলামিক সংগঠন ন্যাশনাল তৈহিদ জামাতের সঙ্গে তিন মন্ত্রীর যোগাযোগ রয়েছে। সন্ন্যাসীর চার দিনের অনশনের মাথায় মন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট। এরপরই অনশন ভঙ্গ করেন ওই সন্ন্যাসী। মন্ত্রিসভার অন্য ৮ জন মুসলিম মন্ত্রীকে টার্গেট না করলেও অন্য তিন কর্মকর্তার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সোমবার একযোগে ইস্তফা দেন মন্ত্রীরা। সংখ্যালঘু মন্ত্রীরা জানিয়েছেন, সিআইডি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা মন্ত্রিসভায় ফিরবেন না।

এদিকে, আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। ১৫ নভেম্বর থেকে ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে এই নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান মাহিন্দা দেশাপ্রিয়া।

তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার এক মাস আগে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।

সূত্র: খবর নিউইয়র্ক টাইমস।

আই//