1. প্রচ্ছদ
2. খেলাধুলা

লন্ডনের দ্য ওভালে আসরের প্রথম ব্লকবাস্টার ম্যাচে আজ দেখা হচ্ছে দুই ফেভারিট অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের। বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৩টায় ম্যাচটি শুরু হবে। বর্তমান ও সাবেক দুই চ্যাম্পিয়নের অগ্নিগর্ভ লড়াই নিঃসন্দেহে বিশ্বকাপের টিআরপি বাড়িয়ে দেবে।

বিশ্বকাপের এবারের আসরে দু’দলই এখন পর্যন্ত অপরাজিত। যদিও ভারত মাত্র একটি ম্যাচ খেলেছে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ছয় উইকেটে হারিয়ে ফেভারিটের মতোই বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে ১৯৮৩ ও ২০১১ আসরের চ্যাম্পিয়নরা।

অন্যদিকে রেকর্ড পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সহজ পেলেও পরের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজেদের শক্তিমত্তার পরীক্ষা দিয়েই জিততে হয়েছে। তবে, আসল পরীক্ষাটা আজ দিতে হবে অ্যারন ফিঞ্চদের।

বিশ্বকাপের শেষ পাঁচ আসরে ভারতই একমাত্র দল যারা শিরোপা বঞ্চিত করতে পেরেছে অস্ট্রেলিয়াকে (২০১১ আসরে)।

ওয়ানডে র‌্যাংকিংয়ে ভারত এগিয়ে থাকলেও বিশ্বকাপ মঞ্চে চিরকালের ফেভারিট অস্ট্রেলিয়া। সে বিচারে অজিরা কিছুটা এগিয়ে।

এখন পর্যন্ত ফেভারিট এ দল দুটোর মধ্যে ১৩৬ বার দেখা হয়েছে। যাতে অস্ট্রেলিয়ার ৭৭ জয়ের বিপরীতে কোহলিরা জয় পেয়েছে ৪৯টিতে, পরিত্যক্ত হয়েছে ১০টি।

ক্রিকেট প্রতিযোগিতার বড় মঞ্চে এই দুই দল বার বার মুখোমুখি হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে বিশ্বকাপও। দুই দলই নিজেদের সেরাটা দিয়েছে বিভিন্ন সময়ে। যদিও জয়ের ‌নিরিখে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তবে এই বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার ঘরের মাঠে তাদের হারিয়ে এসে নিজেদের ঘরের মাঠে হারের মুখ দেখেছে ভারত।

বল টেম্পারিং কাণ্ডের জেরে মাঝে পথ হারালেও এ বছর দারুণভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপের আগেই নিজেদের প্রয়োজনে সেরা দুই ব্যাটসম্যান ডেভিট ওয়ার্নার ও স্টিভ স্মিথকে দলে ফেরানো হয়েছে। প্রত্যাশিত ফলও করছেন দুজন। যার প্রমাণ গত দু’ম্যাচে তারা দিয়েছেন।

ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া প্রথম মুখোমুখি হয়েছিল ১৯৮০ সালে। এরপর থেকে বার বার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। দুই দলের শেষ ওডিআই সিরিজে ভারতের মাটিতে পিছিয়ে পড়েও জয় তুলে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তার আগে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে জিতে ফিরেছিল ভারত।

টানা ১০টি ওয়ানডে জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে আজ মাঠে নামছে অস্ট্রেলিয়া। বিরাট কোহলির ভারতও আছে দারুণ ছন্দে। তারকা দ্যুতিতে কেউ পিছিয়ে নেই। আসল লড়াইয়ের মধ্যে থাকছে জমজমাট কিছু খণ্ড লড়াই।

একদিকে বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা, অন্যদিকে স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার। পেস বোলিংয়ে মিচেল স্টার্ক ও জাসপ্রিত বুমরাহর লড়াইটাও কম চিত্তাকর্ষক নয়। ঘূর্ণির লড়াইয়ে অবশ্য ভারতের যুজবেন্দ্র চাহালের সমকক্ষ বলা যাবে না অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম জাম্পাকে।

দু’দলের দুর্বলতার জায়গাতেও অনেকটা মিল আছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সত্যিকারের পরীক্ষা দিতে হয়নি ভারতের বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনআপকে। প্রোটিয়াদের ২২৭ রানে বেঁধে ফেলে ৮০ ভাগ কাজ বোলাররাই সেরে রেখেছিলেন।

হার না মানা সেঞ্চুরিতে বাকিটা সারেন রোহিত শর্মা। তবে বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে শর্ট বলের পরীক্ষায় ডাহা ফেল করেছিলেন ভারতের ব্যাটসম্যানরা। উইকেট থেকে একটু সহায়তা পেলে অস্ট্রেলিয়ার দুই গতি তারকা স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স আজ কাঁপিয়ে দিতে পারেন ভারতকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আগের ম্যাচে আসরের প্রথম বোলার হিসেবে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন স্টার্ক।

পন্টিংয়ের ধারণা, অস্ট্রেলিয়াকে শর্ট বলে ঘায়েল করতে ভারত তিন পেসার খেলাবে। ওয়ানডে র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষ বোলার বুমরাহকেই সবচেয়ে বড় হুমকি মনে করছেন সাবেক এ অজি অধিনায়ক। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রীতিমতো আগুন ঝরিয়েছেন বুমরাহ।

ওভালের মন্থর উইকেটে স্পিন ধরলে চাহালও ধসিয়ে দিতে পারেন অস্ট্রেলিয়াকে। ভারতের চেয়ে অস্ট্রেলিয়ার মিডল ও লোয়ার অর্ডারের গভীরতা কম। মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো পরীক্ষিত কোনো ফিনিশার নেই তাদের।

অভিজ্ঞতা ও শক্তির বিচারে দু’দলই প্রায় সমান। যদিও জয়ের নিরিখে ভারতের চেয়ে অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে। তাইতো, অস্ট্রেলিয়া-ভারত ম্যাচকে সমর্থকরা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের মতই উপভোগ করে। তাইতো আজকের ম্যাচের লড়াইটা  যে জমজমাট হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। বিশ্বের ক্রিকেট প্রেমিরা তাই তাকিয়ে থাকবে টিভির পর্দায়।  

আই//