ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

ওসি মোয়াজ্জেমকে শাস্তি পেতেই হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:১৭ পিএম, ৯ জুন ২০১৯ রবিবার

‘নুসরাত হত্যাকাণ্ডে সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন যে অপরাধ করেছেন, তাকে তার শাস্তি পেতেই হবে’- বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

আজ রোববার (৯ জুন) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘অপরাধের সঙ্গে জড়িত যেকোন ব্যক্তিকে শাস্তি পেতে হবে। সে ওসি হোক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হোক অথবা জনপ্রতিনিধি। কেউই আইনের উর্ধ্বে নন।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নুসরাত জাহানকে হত্যার ঘটনায় মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। চার্জশিটে তার নামও এসেছে। পালিয়ে গেলে খুঁজে পেতে হয়তো একটু সময় লাগবে। তবে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে।’

এদিকে গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে লুকোচুরির পর এখন পুলিশ বলছে, ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন পালিয়ে গেছেন। ফেনী ও রংপুর দুই জায়গার পুলিশই গ্রেফতারি পরোয়ানা হাতে পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে।

এবিষয়ে পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, ‘গ্রেফতারি পরোয়ানা রংপুরে এসেছে। কিন্তু মোয়াজ্জেম হোসেন অনুমতি ছাড়াই কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। পরোয়ানাটি সোনাগাজী থানার ওসির কাছে পাঠানো হয়েছে। রংপুরে পাঠানোর ক্ষেত্রে বিধি অনুসরণ করা হয়নি। বিধি মোতাবেক কাজ করার জন্য তিনি ফেনীর পুলিশকে জানাবেন।’

উল্লেখ্য, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল গত ২৭ মে পরোয়ানা জারি করেন।

৩১ মে পরোয়ানার চিঠি ফেনীর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পৌঁছায়। কিন্তু পুলিশ সুপার কাজী মনির-উজ-জামান বারবার বিষয়টি অস্বীকার করতে থাকেন। একপর্যায়ে ৩ জুন রাতে পরোয়ানা হাতে পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি।

এর দুদিন পর বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে পরোয়ানা রংপুর রেঞ্জে পাঠানো হয়। এখন আবার রংপুর রেঞ্জ বলছে, কাজটি বিধি মোতাবেক হয়নি।

গত ৬ এপ্রিল মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফীকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এর দিন দশেক আগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যান নুসরাত।

থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন সেসময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এতে করে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সারাদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

নুসরাত মারা যাওয়ার পর ওসির এ কর্মকান্ড সবার নজরে আসে। পরে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা আদালত গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তের নির্দেশ দেন।

পিবিআই গত ২৭ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে ওই দিনই ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। পরোয়ানা জারির দুইদিন পর আদালতে হাজির না হয়ে সেই ওসি অন্তরালে থেকে আইনজীবির মাধ্যমে জামিন আবেদন করেন। আগামি ১১ জুন শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

আই//