‘বাংলাদেশের পণ্য রফতানি হয় বিশ্বের ২০০টি দেশে’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:০৭ পিএম, ৯ জুন ২০১৯ রবিবার
বাংলাদেশের জিডিপিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অবদান দিনদিন বাড়ছে। বর্তমানে জিডিপির ৩৬ দশমিক ৫০ শতাংশ অবদান আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের। বাণিজ্যের এ প্রসারে বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি হয়। যেখানে বাংলাদেশ আমদানি করে ১২০টি দেশে থেকে।
বিশ্ব এ্যাক্রেডিটেশন দিবস-২০১৯ উপলক্ষে রোববার এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এ তথ্য জানান। বাংলাদেশ এ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি) এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে। সভায় ডিসিসিআই সভাপতি ওসামা তাসীর বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল হালিম।
“এ্যাক্রেডিটেশন: সাপ্লাই চেইনে মূল্য সংযোজন করে” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত এ সভায় স্বাগত বক্তব্যে বিএবি’র মহাপরিচালক মো. মনোয়ারুল ইসলাম জানান, পৃথিবীর ১৯৫টি দেশে আজ একযোগে বিশ্ব এ্যাক্রেডিটেশন দিবস পালিত হচ্ছে। তিনি বলেন, যেকোন পণ্য উৎপাদন, বিপনন ও সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক মান নিয়ন্ত্রণে এ্যাক্রেডিটেশন সনদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, এ্যাক্রেডিটেশন হলো: পণ্য ও সেবার গুণগত মানসনদের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার স্বীকৃতি এবং বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত এ পদ্ধতি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য গতিশীল করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে ইতিবাচক অবদান রেখে থাকে। তিনি আরোও বলেন, পণের কাঁচামাল থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যায়ে সরবরাহ পর্যন্ত সার্বিক সাপ্লাই চেইনেও এ্যাক্রেডিটেশনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ। শিল্পমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, বিশ্ব এ্যাক্রেডিটেশন দিবস ২০১৯ উদযাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্য এবং সেবার গুণগত মান নিশ্চিতকল্পে শিল্প কারখানার মালিক ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সাপ্লাই চেইনের গুণগত মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
শিল্প মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার শিল্প ও ব্যবসা-বান্ধব সরকার এবং দেশে দ্রুত শিল্পায়ন নিশ্চিতকরণের জন্য সরকার বদ্ধ পরিকর। তিনি দেশীয় শিল্পের বিকাশে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে উদ্যোক্তাদের সকল সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।
ডিসিসিআই সভাপতি ওসামা তাসীর বলেন, বাংলাদেশের জিডিপিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অবদান ৩৬.৫০ শতাংশ এবং প্রায় ২০০টি দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি হয় ও ১২০টিরও বেশি দেশ থেকে বাংলাদেশ পণ্য আমদানি করে। তিনি জানান, ‘দি চার্টার্ড ইন্সটিটিউট অফ প্রকিউরন্টে অ্যান্ড সাপ্লাই’ এর তথ্য অনুসারে, একটি কোম্পানীর মোট ব্যয়ের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কাঁচামাল আহরণে ব্যয় হয়ে থাকে, যেজন্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সুষ্ঠু ও দক্ষ সাপ্লাই চেইন নিশ্চিত করা একান্ত জরুরী। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, এ্যাক্রেডিটেশনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে উদ্বেগ নিরসন ও মান নিয়ন্ত্রনের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে এবং এ্যাক্রেডিটেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ অন্যান্য প্রধান রপ্তানি পণ্যকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করে রপ্তানি বহুমুখীকরণের পথে এগিয়ে যেতে পারে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল হালিম বলেন, এ্যাক্রেডিটেশন সনদ দেশীয় বাজারের পাশাপাশি বর্হিবিশ্বে পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তিনি বাংলাদেশ এ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি)-এর কার্যক্রম জনগণের মধ্যে আরো ছড়িয়ে দেওয়া এবং এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর উপর জোরারোপ করেন। শিল্প সচিব বলেন, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে চামড়া ও এসএমই নীতিমালার অনুমোদন পাওয়া গেছে এবং চুড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নীতিমালা সমূহ শীঘ্রই কেবিনেটে উপস্থাপন করা হবে। তিনি আরো বলেন, শিল্পমন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে ইতোমধ্যে আইপি নীতিমালা খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে এবং দেশের অনানুষ্ঠানিক খাতের (ইনফরমাল সেক্টর) বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।
আরকে//