ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৪ ১৪৩১

ঘুষ কেলেঙ্কারিতে ডিআইজি মিজান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৫৮ পিএম, ১০ জুন ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ০৭:৫৬ পিএম, ১০ জুন ২০১৯ সোমবার

আবারও সংবাদের শিরোনাম হলেন দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার হওয়া পুলিশের উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান। নারী নির্যাতনের অভিযোগের পর এবার ঘুষ কেলেঙ্কারির কথা নিজেই ফাঁস করেছেন। অবৈধ সম্পদের বিষয়ে তদন্ত করতে আসা দুর্নীতি দমন কমিশন’র (দুদক) কর্মকর্তাকে মোটা অংকের ঘুষ দিয়েছেন তিনি। তদন্ত প্রতিবেদন পাল্টে দেওয়ার চুক্তিতে দুদক কর্মকর্তাকে এ ঘুষ দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগের পর ঐ কর্মকর্তাকে তার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করেছে দুদক।  

২০১৮ সালে নারী নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহারের পর মিজানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের খোঁজে নামে দুদক। অবৈধ সম্পদের প্রমান পাওয়ার পর মামলার সুপারিশ করেছে দুদক। দুদকের পরিচালক ২৩ মে কমিশনে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশসহ অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে বলা হয়, ৪ কোটি ২ লাখ ৮৭ হাজার টাকার সম্পদ ডিআইজি মিজানের দখলে রয়েছে। তার এই আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ২০০৪ সালের দুদক আইনের ২৬(২) ও ২৭(১) ধারাসহ ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং আইনের ৪(২) ধারায় মামলার সুপারিশ করে অনুসন্ধান কর্মকর্তা খন্দকার এনামুল বাছির।

জানা যায়, আলোচিত মিজানুর রহমান ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় নারী নির্যাতন ও এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। জোরপূর্বক এক নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ ও বিয়ে করা এবং আরো এক সংবাদ পাঠিকাকে তুলে নেওয়ার অভিযোগে দেশজুড়ে সমালোচনার পর ওই বছর জানুয়ারিতেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে তাকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর গেল বছরের ৩ মে অবৈধ সম্পদসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে মিজানুরকে দুদক কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে মিজানুর রহমান ও তার প্রথম স্ত্রী সোহেলিয়া আনারের আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ কোটি টাকারও বেশি সম্পদের খোঁজ পায় দুদক। ডিআইজি মিজান ছাড়াও তার এক ভাই ও ভাগ্নের নামে করা সম্পদসহ মোট ৪ কোটি ২ লাখ ৮৭ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য তুলে ধরা হয়।

অনুসন্ধান শেষে তার বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করায় দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন মিজান। তার কাছ থেকে এনামুল বাছির ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে কয়েকটি গণমাধ্যমে অভিযোগ তোলেন। মিজানুর ও এনামুলের মধ্যে কথোপকথনের কয়েকটি অডিও রেকর্ডও প্রকাশ হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে মিজানুরকে অব্যহতি দেওয়া হবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে এনামুলকে এ টাকা দিয়েছিলেন বলে মিজান দাবি করলেও তা অস্বীকার করেন এনামুল। নিজের অপকর্ম ঢাকার জন্য এবং তার বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করায় এমন অভিযোগ করেছেন মিজান বলে দাবি এনামুল বাছিরের।

তবে এ বিষয়টিকে নেক্কারজনক বলে অভিহিত করছেন বিশ্লেষকরা। মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, মিজানের বিরেুদ্ধে আগের অভিযোগ গুরুতর। এর উপর সে যদি দুদক কর্মকর্তাকে ঘুষ দিয়ে থাকেন তাহলে দুজনই দোষী। এখানে তদন্ত করে দেখতে হবে।

এমএস/আরকে