ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৫১ পিএম, ১০ জুন ২০১৯ সোমবার

আসন্ন ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটেও কালো টাকা (অপ্রদর্শিত অর্থ) সাদা করার সুযোগ থাকছে। ১০ শতাংশ কর দিয়ে শিল্প স্থাপনে বিনিয়োগ করে কালো টাকা সাদা করা যাবে। তবে এ সুযোগ তারাই পাবেন, যারা শুধু উৎপাদনমুখী শিল্প খাতে বিনিয়োগ করবেন। আগামী এক বছরের জন্য এ সুযোগ দেওয়া হবে। এখন শুধু ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি আবুল বারকাত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে সম্প্রতি প্রাক-বাজেট আলোচনায় বলেছেন, দেশে বর্তমানে ৭ লাখ কোটির বেশি কালো টাকা আছে। যা সরকারের দুটি অর্থবছরের বাজেটের সমান। অর্থাৎ এ টাকা দিয়ে সরকার দুটি অর্থবছরের বাজেট পরিচালনা করতে পারবে। তিনি বলেন, সব কালো টাকা উদ্ধার করে, একসঙ্গে অর্থনীতির মূলস্রোতে আনা সম্ভব নয়। তবে কীভাবে অর্থনীতিতে আনা যায় বাজেটে তার একটি পরিকল্পনা থাকা দরকার। আসছে বাজেটে অন্তত ২৫-৩০ হাজার কোটি টাকা যাতে উদ্ধার করা যায়, সেই প্রণোদনা থাকা উচিত।

এছাড়া পাচার হওয়া টাকার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিবছর ৭০-৮০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। তা রোধেও বাজেটে সুস্পষ্ট উদ্যোগ রাখা দরকার।

অর্থনীতি সমিতির প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয় দেখানো হয়েছে ৯ লাখ ৯০ হাজার ৮২০ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রস্তাবিত বাজেট বরাদ্দের প্রায় ৮১ শতাংশের যোগান দিবে সরকারের রাজস্ব খাত। বাকি ২ লাখ ৬০ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা (১৯ শতাংশ) ঘাটতি দেখানো হয়েছে। আর এ ঘাটতি মেটাতে সরকারি ও বেসরকারি যৌথ অংশিদারিত্বের ওপর নির্ভরের কথা বলা হয়েছে।

জানা গেছে, সরকারের রাজস্ব খাতের আয় বাড়াতে করের আওতাও বাড়ছে। সামর্থবান বা করযোগ্য আয় আছে, অথচ জালে নেই, এমন সবাইকে করের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিনিয়োগ চাঙ্গা করতে প্রণোদনাসহ বিদ্যমান কর অবকাশের (ট্যাক্স হলিডে) মেয়াদ আরও বাড়ছে। ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমায় কোনো ছাড় না থাকলেও সারচার্জে (নির্দিষ্ট আয়ের বাইরে অতিরিক্ত সম্পদ) কিছুটা ছাড় দেওয়া হতে পারে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অধীনস্থ কর বিভাগকে শক্তিশালী করতে সম্প্রসারণের প্রস্তাব থাকছে। আদায় প্রক্রিয়া সহজ ও নতুন করদাতা চিহ্নিত করে নানামুখী সংস্কারের মাধ্যমে ২০১৯-২০ অর্থবছরে আয়কর খাতে সোয়া লাখ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের প্রস্তাব থাকছে। আগামী বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

মূলত ব্যক্তি তথা বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগে কয়েক বছর ধরে খরা থাকলেও সরকার আশা করছে, এ সুযোগ দেওয়া হলে দেশ থেকে অর্থ পাচার কমবে এবং উদ্যোক্তারা স্থানীয় শিল্প স্থাপনে আরও উৎসাহিত হবেন।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে শুধু ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়ে প্রতিবর্গমিটারে নির্ধারিত অংকের টাকা দিয়ে কালো টাকা সাদা করা যায়। এর বাইরে অন্য কোনো খাতে এ সুযোগ নেই। এখন নতুন করে উৎপাদনমুখী (ম্যানুফা্যকচারিং) শিল্প স্থাপনে বিনিয়োগের শর্তে টাকা বৈধ করার সুযোগ দিতে চায় সরকার।

আরকে//