৭০০ কোটি টাকার বাজেট ৫ লাখ কোটিতে
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৪৯ পিএম, ১৩ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৮:৫০ পিএম, ১৩ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার
১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে বাংলাদেশ পায় স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধু সেদিন বাংলাদেশের মানুষকে এনে দিয়েছিলেন সীমান্ত স্বাধীনতা; আর দেখিয়েছিলেন অর্থনৈতিক স্বাধীনতার পথ।
তিনি ১৯৭২ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে দিয়েছিলেন ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশটিতে উন্নয়নের বীজ মূলত ওই বাজেটেই বপন হয়েছিল।
কিন্তু মাঝখানে উন্নয়নের সেই অগ্রযাত্রা নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। তবে নানা চড়াই উৎরায় পেরিয়ে উন্নয়নের চাকা আবার ঘুরতে শুরু করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরেই। যার ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সেই বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরেই জাতি পেল অবিস্মরণীয় এক বাজেট। ঘোষণা করা হলো দেশের সবচেয়ে বড় ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট বক্তব্যে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বাজেটের সেই ব্যাপ্তি তুলে ধরা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের গত দশ বছরের সকল অর্জনের শুরু ২০০৮ থেকে নয়, বরং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে ১৯৭২ সালেই এ উন্নয়নের বীজ রোপিত হয়েছিল।
মহান স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটিতে ‘সোনার বাংলা’য় রূপান্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিকল্পিতভাবে কাজ শুরু করেছিলেন। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসের ন্যাক্কারজনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার মাধ্যমে তার সেই প্রচেষ্টাকে স্বাধানীতা বিরোধীগোষ্ঠী সাময়িকভাবে রুখে দিয়েছিল।
জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে সেই গ্রীক পুরাণে ফিনিক্স পাখির মতো ভস্ম থেকে বাংলাদেশে আবারও মাথা উচু করে উঠে দাঁড়াতে শুরু করে ২০০৮ সালের নির্বাচনের মাঝ দিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর। ২০০৯ সালে সারা বিশ্বে ছিল ভয়াবহ মন্দা। এই ভয়াবহ অবস্থাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে বুকে ধারণ করেই প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিলেন দিন বদলের সনদ ‘রূপকল্প ২০২১’।
প্রধানমন্ত্রীর সেই ‘রূপকল্প ২০২১’ অনুযায়ী দেশে আজ প্রায় শতভাগ ছেলেমেয়ে এখন স্কুলে যায়, ঝরে পড়ার হারও কমেছে। ২০২১ এর অনেক আগেই বিদ্যুৎ এখন প্রায় সবার ঘরেই পৌঁছেছে। গ্রামে গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে। দারিদ্র্য হার ২০০৫ সালের ৪০ শতাংশ থেকে কমে ২১ শতাংশে নেমে এসেছে। অতি দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ থেকে কমে ১১ শতাংশ হয়েছে। অর্থনীতিতে উচু প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার পরও মূল্যস্ফীতি রাখা হয়েছে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত। বিশ্বের অনেক দেশকেই পেছনে ফেলে আমরা সহাস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করে সারা বিশ্বের দৃষ্টি কেড়ে নিতে সক্ষম হয়েছি। হতদরিদ্র্য দেশ থেকে আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়ে ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, রাশিয়া ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও চীনের মতো দেশসমূহের সাথে একই কাতারে শামিল হওয়ার গৌরব অর্জন করেছি।
ইতিহাসের দীর্ঘ পথ চলায় আমরা এখন এমন এক ক্ষণে এসে পৌঁছেছি, যেখান থেকে পেছন ফিরে তাকালে দেখা যায় অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আসার ইতিহাস। সামনে এখনও রয়েছে চ্যালেঞ্জিং পথ পরিক্রমা। কোনো জাতির চলার পথ সবসময় সহজ ও সরল রেখার হয় না। সেখানে আসে নানা বাধা বিপত্তি। কিন্তু আমাদের রয়েছে রুখে দাঁড়াবার ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার অমিত শক্তি। গভীর সংকটেও বাঙালী জাতি বারবার সফলভাবে খুঁজে নেয় উত্তরণের পথ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতৃত্বে ইতিহাসের সাহসী সন্তানেরা উপহার দিয়েছিল এই দেশ। জাতির পিতা আমাদের সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। যুদ্ধবিদ্ধস্থ দেশটির বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠনের এক বিস্ময়কর যাত্রা তিনি শুরু করে দিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার নির্দেশিত পথেই নিয়ে যাচ্ছেন আমাদের প্রিয় মাতৃর্ভমিকে এক অনন্য উচ্চতায়।