ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশ, নেতৃত্বে শেখ হাসিনা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫৪ পিএম, ১৩ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১২:০৩ এএম, ১৪ জুন ২০১৯ শুক্রবার

বাংলাদেশ এখন আর সেই তলাবিহীন ঝুঁড়ি নয়। বিশ্ব দরবারে এখন উন্নয়নের রোল মডেল। স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীলের কাতারে উঠে এসেছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে তাই বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৩০তম। দেশের অর্থনৈতিক এ অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূদর্শী নেতৃত্ব। প্রধানমন্ত্রীর এ নেতৃত্ব শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরেও প্রশংসিত। কেননা বিশ্ব নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীর্ষ দশে স্থান করে নিয়েছেন। আজ জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও উন্নয়ন আজ দৃশ্যমান। অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব রোল মডেল। তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে মধ্যম আয়ের দেশ। ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের পথ সুগম হবে।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি উদাহরণ সৃষ্টিকারী দেশ। তিনি বলেন, একদিন আমাদেরকে উদাহরণ হিসেবে দেখিয়ে উন্নত দেশ এবং দরিদ্রতম দেশের মাঝে কি কি ব্যবধান, কি কি তফাৎ তা ক্লাসরুমে অর্থনীতির ছাত্রদের পড়ানো হতো। আমাদের পরিচয় ছিল ভুখা-নাঙ্গা, বন্যা, সাইক্লোন, হত-দরিদ্র ও অনুন্নত দেশ। কিন্তু মহান আল্লাহর রহমতে আমরা আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছি।

আইএমএফ-এর সর্বশেষ জিডিপি র‌্যাংকিং অনুযায়ী বাংলাদেশ পিপিপি ভিত্তিতে পৃথিবীতে এখন ৩০তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরই দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এখন বাংলাদেশের।

বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে বিশ্ব নেতাদের উদ্ধৃতি উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, খোদ বিশ্বব্যাংক বলছে অল্প সময়ের মাঝে ছোট্ট একটি ভূখণ্ড সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ নিয়ে যেভাবে উন্নয়ন ঘটিয়েছে তা বিশ্ববাসীর কাছে একটি বিস্ময়। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুনের মন্তব্য ‘বাংলাদেশ পারে, বাংলাদেশ হচ্ছে অর্থনীতির এলাকায় একটি রোল মডেল।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু বলেন, আজকের বাংলাদেশ পুরোটাই সাফল্যের গল্প’। বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেন, ‘বাংলাদেশের অগ্রগতি সারাবিশ্বের জন্য অনুকরণীয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, গত ১০ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলমত নির্বিশেষে দেশের প্রতিটি মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তাদের সাহায্য-সহযোগিতায় বাংলাদেশকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। তাঁর গতিশীল, বুদ্ধিদীপ্ত এবং হিরন্ময় নেতৃত্বের জন্যই আজ আমরা বিশ্ব পরিমণ্ডলে একটি সম্মানজনক স্থানে অধিষ্ঠিত। জাতিসংঘ, জাতিসংঘের একাধিক অঙ্গ সংগঠন, বিভিন্ন বৈশ্বিক সংস্থা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে তাঁর ভূমিকার জন্য নানা মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারে ভূষিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রীর পরিচয়ে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে পরিচিত। তিনি এখন একজন বিশ্বনেতা। যুক্তরাষ্ট্রের টাইম করপোরেশনের বাণিজ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন ‘ফরচুন’-এর জরিপে বিশ্বের শীর্ষ দশ নেতার তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। নিউইয়র্ক-ভিত্তিক বিখ্যাত সাপ্তাহিক, ‘টাইম’ ম্যাগাজিনে ২০১৮ সালে বিশ্বের ১০০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অর্থমন্ত্রী বলেন, পরিকল্পিত উন্নয়ন কৌশল বাস্তবায়নের ফলে ধারাবাহিকভাবে এক অবিশ্বাস্য গতিবেগে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। অর্থনীতির সকল এলাকায় আজ ইতিবাচক পরিবর্তন দৃশ্যমান। ইতিহাসের দীর্ঘ পথ চলায় আমরা এখন এমন এক ক্ষণে এসে উপনীত হয়েছি, যেখান থেকে পেছন ফিরে তাকালে দেখা যায় অনেক চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে আসার ইতিহাস। সামনে এখনও রয়েছে চ্যালেঞ্জিং পথ পরিক্রমা। কোন জাতির চলার পথ সবসময় সহজ ও সরলরেখার হয় না, আসে নানা বাধা ও বিপত্তি। কিন্তু আমাদের রয়েছে রুখে দাঁড়াবার ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার অমিত শক্তি। গভীর সংকটেও বাঙালি বার বার সফলভাবে খুঁজে নেয় উত্তরণের পথ।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ইতিহাসের সাহসী সন্তানেরা উপহার দিয়েছিল এই দেশ। জাতির পিতা আমাদের সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন; যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটির বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠনের এক বিস্ময়কর যাত্রা তিনি শুরু করে দিয়ে গেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার নির্দেশিত পথেই নিয়ে যাচ্ছেন আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে একের পর এক সিঁড়ি ভেঙ্গে অনন্য উচ্চতায়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যাওয়ার সোনালী যুদ্ধ এখনো অব্যাহত আছে এবং অব্যাহত থাকবে জন্ম জন্মান্তরে। এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে। আমাদের লাল সবুজের পতাকাটিকে ঘিরে। যতদিন এই পৃথিবীর বুকে লাল সবুজের বাংলাদেশটি থাকবে ততদিন এই লাল সবুজের পতাকাটিকে বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থানে সর্বোচ্চ মর্যাদার আসনে আসীন রাখবে আমাদের তারুণ্য, আমাদের আগামী প্রজন্ম। যারা আমাদের লাখো কোটি মহান মুক্তিযোদ্ধাদের সূর্যসন্তান। মহান মুক্তিযোদ্ধাদর রক্তের উত্তরাধিকার।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের সৃষ্টিলগ্ন থেকে সকল সময়ই আমাদের এ জাতির অনুপ্রেরণার উৎস হিসাবে তিনি আমাদের মাঝে ছিলেন, তিনি আছেন, তিনি থাকবেন সূর্যের মত দেদীপ্যমান। তাকে ঘিরেই এগিয়ে যাবে সোনার বাংলাদেশ। আর তার আহ্বানেই দেশের মানুষ এগিয়ে আসছে লাখে লাখে, কোটিতে কোটিতে। তারা আসবে, পদ্ম ফুলের মতো গভীর পানিকে ভেদ করে সূর্যের আলোকে দেখতে; আজ, কাল এবং অনাগত ভবিষ্যতে। তারা আসবে তাদের পিতা-মাতা, প্রিয় ভাইবোন, তাদের স্বজনদের রক্তের ঋণ শোধ করতে, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে। আমাদের লাল সবুজের পতাকাকে বিশ্বের শীর্ষ চূড়ায় নিয়ে যেতে।

আরকে