শাওয়াল মাসে ছয় রোজার গুরুত্ব
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৩৭ পিএম, ১৪ জুন ২০১৯ শুক্রবার
শাওয়াল মাসে অনেক আমলের মধ্যে গুরত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে ছয় রোজা। রমজানের ফরয রোজা পালনের পর শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখা মুস্তাহাব। এই রোজার অনেক ফজিলত রয়েছে যা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। রাসূল (সাঃ) নিজেও এ রোজা রাখতেন। সাহাবায়ে কেরামদেরকেও রাখার নির্দেশ দিতেন।
আবু আইয়ুব আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল, অতঃপর শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারাবছরই রোজা রাখল।’ (মুসলিম, হাদিস নং: ২/৮২২)
ধর্মপ্রাণ মুসলমান রমজানের ফরয রোজা পালনের পর আল্লাহর প্রিয় বান্দা এবং পরকালে যাতে সফলকাম হতে পারেন এ জন্য রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাঁর উম্মতদেরকে শাওয়ালের ছয় রোজা পালনের পরামর্শ দিয়েছেন।
সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘রমজানের রোজা ১০ মাসের রোজার সমতুল্য আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দুই মাসের রোজার সমান। সুতরাং এ হলো এক বছরের রোজা।’ (নাসায়ি, হাদিস নং: ২/১৬২)
মহান আল্লাহতাআলা কোরআনে কারিমে বলেন, ‘যে একটি সৎকাজ করবে, সে তার ১০ গুণ সওয়াব পাবে।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ১৬০)
উপরোক্ত আয়াতের আলোকে ওলামা কেরামগণ শাওয়ালের ছয় রোজাকে এভাবে মূল্যায়ন করেছেন- রমজানের ৩০ রোজা আর শাওয়ালের ছয়টিসহ মোট ৩৬টি রোজা হয়। পুণ্যময় কাজের সওয়াব ১০ গুণ বৃদ্ধির কথা কোরআনুল কারিমে বলা হয়েছে। অতএব ৩৬ কে ১০ গুণ বৃদ্ধি করলে ৩৬০ হয়। সুতরাং বছরে ৩৬টি রোজা রাখলে যেন পূর্ণ বছর অর্থাৎ ৩৬০ দিনই রোজা রাখা হয়।
মুমিনদের জেনে রাখা ভাল, রমজান মাস ২৯ দিন হলেও আল্লাহর তায়ালা রোজাদারকে ৩০ দিনেরই সওয়াব দান করেন।
শাওয়ালের ছয় রোজা ধারাবাহিকভাবে অথবা বিরতি দিয়ে রাখা যায়। কারও রমজানের কাজা রোজা থেকে থাকলে, তাহলে প্রথমে রমজানের কাজা আদায় করে, এরপর শাওয়ালের রোজা রাখবেন।
নফলসমূহ ফরজের ত্রুটিগুলোর ক্ষতিপূরণ করে। অর্থাৎ জ্ঞাতসারে কিংবা অজ্ঞাতসারে রোজাদার কর্তৃক যে ভুলত্রুটি হয়ে থাকে নফল রোজা তা দূর করতে সহায়তা করে।
অনুরূপভাবে শাওয়ালের ছয় রোজা রমজানের ফরজ রোজার অসম্পূর্ণতাকে সম্পূর্ণ করে এবং তাতে কোনো ত্রুটি থাকলে তাও দূর করে।
তাই প্রত্যেক মুমিন নর-নারীর উচিত শাওয়াল মাসের ফজিলতপূর্ণ ছয়টি রোজা রেখে পূর্ণ এক বছরের সওয়াব হাসিল করা। কেউ যদি ভাই-বোনসহ অন্যদেরকেও এই রোজা রাখতে উদ্বুদ্ধ করেন, সে ক্ষেত্রে উভয়ই পূর্ণ সওয়াবের ভাগিদার হবেন।
উল্লেখ্য, কেউ নফল রোজা রেখে যদি ভেঙে ফেলেন তবে তার কাজা আদায় করা ওয়াজিব।
তথ্যসূত্র : বিভিন্ন ইসলামী বই এবং ইন্টারনেট
এএইচ/এসি