মমতা স্বর্গীয় গুণ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:২৫ এএম, ২০ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার
সৃষ্টির প্রতি মমতা ও ভালবাসা প্রকাশের মাধ্যমেই আল্লাহর ভালবাসা পেতে হবে অন্য পথে নয়। কেননা আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন। তিনি আমাদের প্রার্থনা উপাসনারও মুখাপেক্ষী নন।
হাজার বার জপলেও তিনি সাড়া নাও দিতে পারেন। কিন্তু যখন তার কোন সৃষ্টির প্রতি দয়া বা মমতা করা হয় তখন তার করুণার সাগরে ঢেউ লাগে এবং তিনি প্রীত হন। সৃষ্টির প্রতি মমতা প্রদর্শন না করে আল্লাহর দয়া লাভ করা অসম্ভব।
আল্লাহতায়ালা মমতার আধার। সৃষ্টজীবের মধ্যে বিরাজমান মায়া-মমতা স্রষ্টার মমতার প্রকাশ মাত্র। যখনই কেউ সৃষ্টির প্রতি মমতা প্রদর্শন করে সে সত্যিকার অর্থে স্রষ্টার প্রতিনিধি হিসেবে মমতার প্রকাশ ঘটায় মাত্র।
আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। রাসূল (সা.) বলেন, আল্লাহতায়ালা মায়া-মমতাকে একশত ভাগে ভাগ করেছেন তার মধ্যে নিরানব্বই ভাগ রেখেছেন নিজের জন্য। আর একভাগ দুনিয়ায় প্রেরণ করেছেন। প্রাণীকূল যে একে অপরের প্রতি মায়া-মমতা দেখায় তা ওই একভাগের কারণে। এমনকি শাবক ব্যাথা পাবে এই ভয়ে ঘোড়াটি যে তার শাবকের উপর হতে পা তুলে নেয় তাও ওই মমতার কারণে। (বুখারী ৩৪৭৬)
অর্থাৎ সৃষ্টির প্রতি মমতা একটি স্বর্গীয় গুণ। যে সৃষ্টির প্রতি মমতাকে আয়ত্ত করলো সে যেন অফুরন্ত কল্যাণের অধিকারী হলো।
হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি সৃষ্টির প্রতি দয়া করে না তার প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে দয়া করা হয় না। (বুখারী ৩৪৮৮)
বস্তুত আল্লাহর সৃষ্টিকূলের প্রতি এবং মানুষের প্রতি দয়া প্রদর্শনের মাধ্যমে স্রষ্টার রহমত পেতে হবে, স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। সৃষ্টির প্রতি দয়া প্রদর্শন না করে পাহাড় পরিমাণ ইবাদত করলেও মানুষ আল্লাহর করুণা লাভে সক্ষম হবে না। সৃষ্টির প্রতি মমতাই স্রষ্টাকে পাবার রাজপথ। যুগে যুগে মহামানবরা ওই রাজপথ ধরেই স্রষ্টাকে পাবার সাধনা করেছেন। যুগ শ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন জীবের প্রতি দয়ার জীবন্ত মডেল।
তিনি বলেছেন, পৃথিবীর অধিবাসীদের প্রতি দয়া করো তাহলে আল্লাহ তোমাদের উপর দয়া করবেন। (আবদুল্লাহ ইবনে ওমর ইবনুল আস হতে আবু-দাউদ ও তিরমিযিতে বর্ণিত)
সৃষ্টির প্রতি দয়া এমন এক ধরনের সৎকর্ম যার মাধ্যমে অতি সহজে স্রষ্টাকে পাওয়া যায়। শুধু নিজে দয়ার চর্চা করলে হবে না অন্যদেরকেও দয়া করার উপদেশ দিতে হবে। আল্লাহ তায়ালা পরস্পরকে দয়ার উপদেশ দেয়ার কাজকে সৎকর্মের ঘাঁটি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তথ্যসূত্র : ডা. আহমদ মরতুজা চৌধুরীর প্রশান্তি ও প্রাচুর্যের সোপান গ্রন্থ।
এএইচ/