পরিবেশকে লালন করেই সভ্যতার বিকাশ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৫৫ পিএম, ২০ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০২:২২ পিএম, ২০ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার
পরিবেশকে লালন করেই আমাদেরকে মানব সভ্যতার বিকাশ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা-২০১৯ উদ্ধোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতি বছর ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হলেও এ বছর ওই দিন বাংলাদেশে ঈদ উদযাপিত হওয়ায় দিবসটি পিছিয়ে আজ ২০ জুন পালিত হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘গাড়ি, বিমান, যুদ্ধ জাহাজ, যুদ্ধ সরঞ্জাম থেকে শুরু করে ডিটারজেন্ট, সাবান, শ্যাম্পু এগুলোও আমাদের পরিবেশ দূষণ করছে। শিল্প কারখানা থেকে শুরু করে আমরা যা ব্যবহার করি তা পরিবেশ দূষণ করছে। আমরা আরাম আয়েশে থাকছি বিধায় এগুলো ধর্তব্যের ভেতরে আনছি না।’
মানব সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে মানবজাতির ক্ষতি সাধন হচ্ছে। তাই বলে কি সভ্যতার বিকাশ থেমে থাকবে? তা কিন্তু নয়। পরিবেশের প্রতি আমাদের সর্তক হয়ে উন্নয়ন করতে হবে। আমি উন্নয়নের বিরুদ্ধে নই কিন্তু উন্নয়ন যেন হয় পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমাদের সরকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। আমাদের দেশে ১৫.৫ ভাগ বনাঞ্চল রয়েছে। এ বনাঞ্চল ২০ ভাগ করতে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।’ সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ কর্মীদেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারা যেন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
সুন্দরবন রক্ষায় সরকার কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন রক্ষায় আমরা কাজ করছি। সুন্দরবন রক্ষার জন্য বাঘকেও বাঁচাতে হবে। কারণ বাঘ সুন্দরবন রক্ষায় অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। সুন্দরবনের পাশ্ববর্তী প্রত্যেকটি নদীর নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য আমাদের সরকার কাজ করছে।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘জলাধার সংরক্ষণ করা হবে। এতে পরিবেশ রক্ষার সাথে সাথে মিঠা পানির মাছেরও সংরক্ষণ হবে।’
খালে বক্স কালর্ভাটের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘খালে বক্স কালর্ভাট করা হয়েছিল যা খালের গতি পথ নষ্ট করে দেয়। আমরা এর বিকল্প ব্যবস্থা করব। যাতে খাল রক্ষা পায় সেই সাথে নৌযানও চলাচলে বিঘ্ন না হয়।’
জলবায়ু পরিবর্তন ও ঝুঁকি মোকাবেলায় তার সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘সরকার এ ঝুঁকি মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছে। সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে এর মোকাবেলা করতে হবে। বিভিন্ন সময় জলবায়ুর ক্ষতি সাধনকারী দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতির শিকার দেশসমূহকে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলেও অনেক ক্ষেত্রে তার বাস্তবায়ন করে না।’
মানবিক কারণে আশ্রয় দেয়া রোহিঙ্গাদের কারণে আজ পাহাড়ি বনাঞ্চল ধ্বংসের মুখে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সকল প্রতিষ্ঠান ও বাসা বাড়িতে বৃক্ষরোপনের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নতুন প্রজন্মকেও এ বিষয়ে শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করতে আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সচিববৃন্দ, বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের বিশিষ্টজনরা, সাংবাদিকবৃন্দসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এমএস/