ভালো খেলেও যেসব কারণে হারল বাংলাদেশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:০৩ এএম, ২১ জুন ২০১৯ শুক্রবার
পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারবে বাংলাদেশ, এই স্বপ্ন কেউ দেখেনি। কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্স যখন দুর্দান্ত, তখন জিততে না পারাটা দারুণ পীড়াদায়ক। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেও ৪৮ রানে ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। ফলে সেমিফাইনালে যাওয়ার পথটা অনেকটাই কঠিন হয়ে গেছে মাশরাফিদের।
ট্রেন্টব্রিজে বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে অজিদের বিপক্ষে ৩৮২ রানের পাহাড় ডিঙাতে নেমে বুক চিতিয়ে লড়াই করেন মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানরা। তাদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৮ উইকেটে ৩৩৩ রানের পাহাড় গড়তে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। তবে রেকর্ড রান করেও জয়ের দেখা পায়নি টাইগাররা। কিন্তু কেন নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স করেও জিততে পারলো না বাংলাদেশ?
আসলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত অস্ট্রেলিয়াকেও যদি ৩২০ কিংবা ৩৩০ রানের মধ্যে আটকে রাখা যেত, তাহলে জিতে যেত বাংলাদেশ। কিন্তু নিঃসন্দেহে অস্ট্রেলিয়া রান বেশিই করে ফেলেছিল। ৪৮ রানে জিতেছে অজিরা। বোঝাই যাচ্ছে উদ্বৃত্ত রানগুলোর কারণেই জয় পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
তবে এ পরাজয়ের জন্য বাংলাদেশের ইনিংসে শুরুতে উইকেট হারানোকেই কাঠগড়ায় তুললেন টাইগারদের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ম্যাচ শেষে বললেন, সৌম্য রান আউট হওয়ার পর থেকেই আমাদের পতন শুরু।
মাশরাফি বলেন, আমরা ৪০-৫০ রান বেশি দিয়েছি শেষের দিকে। না হলে ব্যাটসম্যানরা ভিন্ন মানসিকতা নিয়ে খেলতে পারত, রান তাড়ার ধরনটাও ভিন্ন হতো। তবে ওয়ার্নার এবং অন্য অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের প্রশংসা করতে হবে, তারা দারুণ ব্যাটিং করেছে। আর মুশফিক, সাকিব, তামিম এবং শেষের দিকে রিয়াদ ভালো ব্যাটিং করেছে। কিন্তু ৩৮১ রান তাড়া করা মোটেও সহজ নয়।
বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিততে হলে ইতিহাস গড়তে হতো বাংলোদেশকে। এদিন অজিদের বিপক্ষে ৩৮২ রানের পাহাড় ডিঙাতে নেমে তামিম ইকবালের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন সৌম্য সরকার। দলীয় ২৩ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙে টাইগারদের। আর ওয়ান ডাউনে খেলতে নেমে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন সাকিব আল হাসান। আগের চার ম্যাচে দুই ফিফটির পর ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করা সাকিব এদিন ফেরেন ৪১ বলে ৪১ রান করে আউট হন।
অন্যদিকে, ইনিংসের শুরু থেকে অসাধারণ ব্যাটিং করেন তামিম ইকবাল। ভালো শুরুর পরও নিজের ইনিংসটা লম্বা করতে পারেননি এ ওপেনার। ফিফটি তুলে নেওয়ার পর মারমুখি ভঙিতে খেলে যাওয়া তামিম মিসেল স্টার্কের ভুল শটে আউট হন। তার আগে ৭৪ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৬২ রান করেন তামিম।
আর আগের ম্যাচে ৬৯ বলে ৯৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে আশা জাগিয়ে ছিলেন লিটন দাস। কিন্তু গতকাল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দলের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে হতাশ করেন লিটন। অজিদের বিপক্ষে ১৭ বলে ২০ রান করে ফেরেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।
এরপর লিটন দাসের বিদায়ের পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে জুটি বেধে অনবদ্য ব্যাটিং করে যান মুশফিকুর রহিম। পঞ্চম উইকেটে তারা ১২৭ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখান। শেষ দিকে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ২৮ বলে ৮০ রান। খেলার এমন অবস্থায় নাথান কোল্টার নিলের তোপের মুখে পড়ে দুই বলে মাহমুদউল্লাহ ও সাব্বির রহমানের উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের মধ্য দিয়ে জয়ের স্বপ্ন ফিকে হয়ে যায় মাশরাফি বাহিনীর। শেষ দিকে মুশফিকুর রহিমের একার লড়াইয়ে পরাজয়ের ব্যবধান কমলেও হার এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। দলের হয়ে ৯৭ বল খেলে ৯টি চার ও এক ছক্কায় অপরাজিত ১০২ রান করেন মুশফিক।
এই হারের ফলে বাংলাদেশের সেমিফাইনালে যাওয়ার সমীকরণটি বেশ কঠিন হয়ে উঠল। বাকি তিনটি ম্যাচের সবগুলো জিতেও তাকিয়ে থাকতে হবে অন্যদের ফলাফলের দিকে।
একে//