সাকিব ঘূর্ণিতে সহজ জয় টাইগারদের
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:১৭ পিএম, ২৪ জুন ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ০৮:৪৬ এএম, ২৫ জুন ২০১৯ মঙ্গলবার
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সহজ জয় পেলো বাংলাদেশ। সোমবার টাইগাররা নিজেদের সপ্তম ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে ৬২ রানের এই সহজ জয় তুলে নেয়। এতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখেন সাকিব আল হাসান। ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটনে বিশ্বকাপের ৩১তম ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ । মুশফিকুর রহিম এবং সাকিব আল হাসানের জোড়া ফিফটিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২৬২ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। এই রান তাড়া করতে নেমে আফগানরা প্রথমে ভালোই লড়ছিলো। দারুণ সূচনা করেন আফগান দুই ওপেনার রহমত শাহ ও গুলবাদিন নাইব। আর এই অনবদ্য ব্যাটিং করে যাওয়া নাইব-রহমত শাহর জুটি ভাঙেন সাকিব। তার আগুনঝরা বোলিংয়ে তাদের স্বপ্ন ভঙ্গ হতে শুরু করে ধীরে ধীরে। ৫ উইকেট নিয়ে গুরুত্ব পূর্ণ ব্যাটসম্যানদের ফিরিয়ে খেলা নিয়ে আসেন বাংলাদেশের পক্ষে।
শেষ পর্যন্ত ৪৬ ওভার ২ বলেই অল আউট হয়ে যায় আফগানিস্তান। ৬৩ রানে জয় পায় বাংলাদেশ। ভারত যেভাবে আফগানিস্তানের সঙ্গে জেতার জন্য ঘাম ঝড়াতে হয়েছে,সেই আফগানিস্তানকে দেখা যায়নি বাংলাদেশের সঙ্গে।
এর আগে প্রথমে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই লিটন দাসের উইকেট হারায় টাইগাররা। দলীয় ২৩ রানে লিটন সাজঘরে ফেরার পর হাল ধরেন সাকিব-তামিম।
বাঁচা-মরার লড়াইয়ের ম্যাচে সাকিব-তামিম সাবধানি ব্যাটিং করে দ্বিতীয় উইকেটে ৫৯ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। তাদের জুটিতে বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখেছিল টাইগার সমর্থকরা। কিন্তু দলীয় ৮২ রানে মোহাম্মদ নবীর ঘূর্ণিতে বিভ্রান্ত হয়ে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন তামিম ইকবাল। তার আগে ৫৩ বলে ৩৬ রান করেন দেশসেরা এ ওপেনার।
তামিম আউট হলেও অনবদ্য ব্যাটিং করে যান সাকিব আল হাসান। তৃতীয় উইকেটে মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে ৬১ রানের জুটি গড়েন সাকিব। আর এই জুটিতেই ফিফটির পর মুজিব-উর-রহমানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন সাকিব। তার আগে ৬৯ বলে ৫১ রান করেন তিনি। আর এই রান করার মধ্য দিয় এবারের বিশ্বকাপে ছয় ম্যাচে ৪৭৬ রান নিয়ে শীর্ষে উঠে যান বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার।
সাকিবের বিদায়ের পর সুবিধা করতে পারেননি সৌম্য সরকার। ওপেনিংয়ের পরিবর্তে পাঁচ নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৩ রানে ফেরেন সৌম্য। দলীয় ৩২ ওভারে ১৫১ রানে লিটন দাস, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান ও সৌম্য সরকারের উইকেট পতনের পর দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ৫৬ রানের জুটি গড়েন মুশফিক। উইকেটে সেট হয়ে যাওয়ার পর নিজের ইনিংসটা লম্বা করতে পারেননি রিয়াদ। গুলবাদিন নাইবের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন তিনি। তার আগে ৩৮ বলে দুটি চারের সাহায্যে ২৭ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।
তবে লিটন-তামিমের বিদায়ের পর ১৮তম ওভারে ব্যাটিংয়ে নামা মুশফিক শুরু থেকেই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেন। সাকিব ও মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৬১ ও ৫৬ রানের জুটি গড়া মুশফিক, ষষ্ঠ উইকেটে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সঙ্গে ৪৪ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন।
অন্যবদ্য ব্যাটিং করে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন মুশফিক। কিন্তু ইনিংসের শেষ দিকে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে দৌলত জাদরানের বলে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তার আগে ৮৭ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় ৮৩ রান করে ফেরেন মুশফিক। ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে ২৪ বলে ৩৫ রান করেন মোসাদ্দেক। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ২৬২ রান তুলতে সক্ষম হয় টাইগাররা।
স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৬২/৭ (মুশফিক ৮৩, সাকিব ৫১, তামিম ৩৬, মোসাদ্দেক ৩৫, মাহমুদউল্লাহ ২৭, লিটন ১৬; মুজিব-উর ৩/৩৯)।
আফগানিস্তান: ৫০ ওভারে ২০০/১০ (সামিউল্লাহ সেনওয়ারি ৪৯, গুলবাদিন নাইব ৪৭, রহমত শাহ ২৪, নজিবুল্লাহ জাদরান ২৩, আসগর আফগান ২০; সাকিব ৫/২৯)।
ফল: বাংলাদেশ ৬২ রানে জয়ী। ম্যান অব ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন সাকিব আল হাসান।
এনএম