ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

খোমেনির ওপর ট্রাম্পের কেন এই নিষেধাজ্ঞা?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:১৫ পিএম, ২৫ জুন ২০১৯ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৫:১৭ পিএম, ২৬ জুন ২০১৯ বুধবার

চলমান উত্তেজনার মুখে এবার ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির ‍উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সোমবার নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নির্বাহী আদেশে সাক্ষর করেন তিনি। এ তালিকায় খোমেনিসহ আরো বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাদের নাম রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ইরানের এ সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার উপর নিষেধাজ্ঞার প্রথম কারণ হিসেবে গেল সপ্তাহে মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করাকে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, আটজন সিনিয়র কমান্ডার যারা দেশটির আমলাতন্ত্র ও ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ডকে শক্তিশালী করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ জোগান দেন, আয়াতুল্লাহ খোমেনি তার অন্যতম।

এ কারণে ইরানের এ সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের দাবি, এতে প্রায় ৯৫ বিলিয়ন ডলার খোয়াতে হবে ইরান সরকারকে।

ট্রাম্প অভিযোগ করে বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সরকার শত্রুতামূলক আচরণ করছে। আর এর জন্য দায়ী দেশটির ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি। 

ট্রাম্পের দাবি, নিষেধাজ্ঞার কারণে সর্বোচ্চ নেতা ও তার দফতর এবং খোমেনির ঘনিষ্ঠরা অর্থনৈতিক উৎস ও সমর্থন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।  

তবে দেশটির উপর নিষেধাজ্ঞা নতুন কিছু নয়।  ২০১৫ সালে পরমাণু সমঝোতা চু্ক্তি থেকে বেরিয়ে আসে ওয়াশিংটন। তখন থেকেই দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক বৈরিতায় রুপ নেয়। ওয়াশিংটনের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলে ইরান।

২০১৮ সালে তেহরানের উপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল রাখে পেন্টাগন। এমনকি দেশটি থেকে তেল আমদানি করা দেশসমূহকেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন ট্রাম্প।

গেল মাসে ওমান সাগরে তেল ট্যাংকারে হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করে পেন্টাগন, অস্বীকার করে তেহরান।

সবশেষ গত বৃহস্পতিবার মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করে ইরান। তাদের দাবি, ড্রোনটি ইরানের আকাশসীমায় ঢুকে পড়েছিল কিন্তু ট্রাম্প বলে আসছিলেন সেটি আন্তর্জাতিক অকাশসীমাতেই ছিল।

এর প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প তেহরানকে কঠোর হুশিয়ারি দেন। এমনকি যুদ্ধেরও অনুমতি দেন ট্রাম্প। পরে রাশিয়ার হুমকিতে পিছু হটেন।

এমন অবস্থায় কোন  উপায় না দেখে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার উপর এই নিষেধাজ্ঞা দিল ওয়াশিংটন।

এদিকে, এ সপ্তাহে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্বমন্ত্রী স্টিভ মিনুশিন এমনুচিন।  

ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তকে ঘৃণ্য কূটনীতি হিসেবে আখ্যায়িত করে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বলেছেন, ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এর পরিণতি খুব ভয়াবহ হবে বলে হুশিয়ারি দেন তিনি।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্প এখন সন্ত্রাসবাদের মদদদাতা। একদিকে শান্তিপূর্ণ আলোচনার কথা বলছেন, অন্যদিকে যুদ্ধের উস্কানি দিচ্ছেন। এর ফলে, এ অঞ্চলের মানুষের নিরাপদ জীবন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই, এমন নীতিহীন কর্মকাণ্ড থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান বিশ্লেষকরা।

আই/