ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া দ্বৈরথ
যে লড়াই শুধু দুই অধিনায়ক ও দুই পেসারের
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০২:০৪ পিএম, ২৫ জুন ২০১৯ মঙ্গলবার
বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন দেশের জন্ম হয় যে বছরে, ঠিক সে বছরেই জন্ম ওয়ানডে ক্রিকেটের, সেই ১৯৭১-এ। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া দ্বৈরথ দিয়েই শুরু। লর্ডসের সেই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আজ মঙ্গলবার আবারও মুখোমুখি। উপমহাদেশের বাইরে ক্রিকেটবিশ্বে যে দু’দলের লড়াই সবচে বেশি উত্তেজনা ছড়ায়, সে দু’দল হচ্ছে এই ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া।
বিশ্বকাপের অন্য যে কোনও ম্যাচের চেয়ে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের সমর্থকরা আজকের ম্যাচকেই বেশি গুরুত্ব দেবে। কারণ হট ফেভারিট হিসেবেই এবারের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করেছিল ইংলিশরা। আসরের মাঝপথে এসেও সেই রেসে এখনও টিকে আছে ইংল্যান্ড।
অন্যদিকে, পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার হাতে এবারও শিরোপা দেখছেন অনেকেই। সেটা তাদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণেই। তাই বিশ্বকাপে আজ নিঃসন্দেহে ‘হাইভোল্টেজ ম্যাচ’।
এই ‘হাইভোল্টেজ’ ম্যাচে দুই দলের খেলোয়াড়দের সমন্বিত লড়াই যেমন থাকছে, ঠিক তেমনি লড়াই হবে দু’দলের অধিনায়ক ইয়ন মরগান ও এ্যারোন ফিঞ্চেরও। পাশাপাশি আগুনঝরা পেসে লড়াই দেখা যাবে বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ১৫টি করে উইকেট নেয়া জোফরা আর্চার ও মিচেল স্টার্কেরও।
চলতি বিশ্বকাপে দু’দলই শুরুটা করেছিলো দারুণভাবে। তবে মাঝে দুই এশিয় পরাশক্তি পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে বেশ চাপের মধ্যে রয়েছে মরাগানের দল। তাই আজ ইংল্যান্ড হারলে তাদেরকে পরের দুই ম্যাচে অবশ্যই জিততে হবে সেমিতে যেতে হলে। কিন্তু সেটা মরগানদের জন্য হয়ে যাবে আরও কঠিন। কেননা, পরের দুই প্রতিপক্ষ যে ভারত আর নিউজিল্যান্ড। ইতিহাস বলছে, ১৯৯২ সালের পর এ পর্যন্ত এই তিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বিশ্বকাপের ম্যাচে জয় পায়নি ইংল্যান্ড। এবারও যদি তেমনটাই হয়, তাহলে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়তে হবে স্বাগতিকদের।
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়াও হেরেছে আরেক এশিয় সুপার পাওয়ার ভারতের কাছে। তাই আজ ইংল্যান্ডকে হারাতে পারলেই সেমি নিশ্চিত হয়ে যাবে। আর যদি হেরে যায় তবুও কোন ক্ষতি হবে না অজিদের। পরের দুই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার যে কোন একটি জিতলেই হবে। চলে যাবে সেমিতে।
এদিকে লর্ডসে আজ আগুনে ম্যাচের আগে চোখ থাকছে দুই ক্যাপ্টেন মরগান ও ফিঞ্চের ওপর। কারণ, দু`দলের লড়াইয়ে সর্বোচ্চ রান যে মরগানের। ৫১ ম্যাচে তিন শতকের সঙ্গে ১৩টি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন তিনি। ৪১.২৫ গড়ে ১৮১৫ রান করেছেন এই বাঁহাতি। দু`দলের দ্বৈরথে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সাবেক অজি অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের। ৩৯ ম্যাচে বিশ্বকাপ জয়ী এই অধিনায়কের রান ১৫৯৮।
এবারের বিশ্বকাপে সবচে বেশি ছক্কা মরগানের, ২২টি। দ্বিতীয় স্থানে অবশ্য ফিঞ্চই। সমান ছয় ম্যাচে ১৬টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন ফিঞ্চ। একটি করে শতক ও অর্ধশতকে ইংলিশ অধিনায়ক চলতি বিশ্বকাপে ৫৪.০০ গড়ে করেছেন ২৭০ রান। দুইশ`র বেশি রান করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তার স্ট্রাইক রেট দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, ১২৪.৪২।
দু`দলের লড়াইয়ে মরগ্যান সর্বোচ্চ রানের মালিক হলেও পারফরম্যান্সে এগিয়ে কিন্তু ফিঞ্চই। মাত্র ২৫ ম্যাচ খেলে ইংলিশদের বিপক্ষে তার শতক ছয়টি, আর অর্ধশতক চারটি। ৫০.১৩ গড়ে মোট রান ১১৫৩। বিশ্বকাপেও অজি অধিনায়ক রয়েছেন দারুণ ছন্দে। ছয় ম্যাচে একটি শতক ও তিন অর্ধশতকে ৩৯৬ রান নিয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছেন তিনি।
তবে আজকের লড়াইটা শুধু দুই অধিনায়কেরই নয়, পেস বোলিং আক্রমণেও কেউ কারো চেয়ে পিছিয়ে নেই। জোফরা আর্চার ও মিচেল স্টার্ক অবতীর্ণ হবেন একে অপরকে ছাড়িয়ে যাবার লড়াইয়ে। সমান ছয়টি করে ম্যাচ খেলে দু`জনেরই উইকেট সমান ১৫টি। তবে স্টার্কের চেয়েও ধারাবাহিক আর্চার। প্রথমে সুযোগ না পাওয়া আর্চার সুযোগ পেয়েই ইংল্যান্ডকে প্রতিদান দিয়ে যাচ্ছেন প্রতিটি ম্যাচেই। ইংলিশদের পেস আক্রমণ যে তাকে ঘিরেই।
এ বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সাতটি মেডেন ওভার করেছেন আর্চার। অন্যদিকে স্টার্কের রয়েছে একটি চার ও পাঁচ উইকেট নেয়া ইনিংস। তবে এ দু`জনের মধ্যে মিল আছে একটি জায়গায়। তা হলো- শুরুতেই তাদের নিজ নিজ গতিতে কাঁপিয়ে দিচ্ছেন প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের। আজও তার ব্যতিক্রম হবে না।