স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:৫৬ পিএম, ২৫ জুন ২০১৯ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৯:৫৮ পিএম, ২৫ জুন ২০১৯ মঙ্গলবার
বাণিজমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দেশের টাকা যাতে বাহিরে না যায়, সে জন স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলবে। মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্বর্ণকর মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগামী মাসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
বাণিজমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ব্যবসাবান্ধব। ব্যবসায়ীদের সবধরণের সুবিধা দেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, ভোক্তার অধিকার যাতে প্রতিষ্ঠিত হয়, সে ব্যাপারে কাজ করছে সরকার।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী আরও বলেন, এমন স্বর্ণ তৈরি করুন, যাতে ধনিরা বিদেশে স্বর্ণ কিনতে না যায়। দেশেই তৈরি স্বর্ণে যাতে আকৃষ্ট হোন সে ব্যাপারে কাজ করুন।
এর আগে কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সমাপনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে বাণিজমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান- মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সভাপতি গঙ্গা চরণ মালাকার, এফবিবিসিসিআই`র সহসভাপতি ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক দীলিপ কুমার আগরওয়ালা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক দীলিপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, দেশের অর্থনীতিক উন্নয়নে আমরা স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা অংশীদার হতে চাই। এ জন্য দরকার নিরাপদ পরিবেশ। অতীতে কোন নীতিমালা ছিল না, ফলে আমাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন শ্রেণি থেকে আমাদের হয়রানি করতো। এ জন্য এ নীতামালা আমাদের জন্য জরুরি ছিল।
তিনি বলেন, আমাদের তৈরি স্বর্ণ আমরা দেশের বাহিরে আমাদের রপ্তানি করতে চাই। এ জন্য আমাদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রতিষ্ঠান দরকার। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বাংলাদেশে কম দামে স্বর্ণ বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি সভাপতি গঙ্গা চরণ মালার বলেন, দেশের পোষাক খাতকে যেমন সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে, সময় হয়েছে এ খাত নিয়ে নতুন কিছু করার। স্বর্ণ শিল্প গড়তে সরকারের নিকট উপযুক্ত পরিবেশ তিরি দাবি জানান তিনি। নীতিমালা হঠাৎ হওয়ায় অনেকে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। তাই সময় আরও বাড়ানো উচিৎ বলে মত দেন মালাকার।
তিনি বলেন, বর্তমানে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। ভ্যাটের পরিমাণ বেশি হওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী ভ্যাট দিচ্ছেন না।
তাই ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশে আনার দাবি জানান তিনি। এতে সরকার অধিক পরিমাণে ভ্যাট পাবার পাশাপাশি ক্রেতারাও উপকৃত হবেন। সরকারের সহযোগীতা পেলে মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি স্বর্ণ রফতানি করা সম্ভব বলে জানান তিনি।
রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, সারাদেশের ব্যবসায়ীরা অবৈধ সোনা বৈধ করছেন। ৩০ জুনের মধ্যে দেশের প্রায় সব ব্যবসায়ী এ সুযোগ গ্রহণ করে কর প্রদান করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মোশাররফ হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন যেহেতু নীতিমালা ছিল না, তাই শুরুতে একটু সমস্যা হচ্ছে। দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের রেজিস্ট্রেন প্রতি তিন বছর অন্তর নবায়ন করতে হবে। ব্যবসায়ীদের নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে দেশের এ খাত থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব অর্জন করবে বলে জানান তিনি।
ব্যবসায়ীদের বৈধ পথে ব্যবসার করার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বিদেশ থেকে স্বর্ণ আনতে প্রতি ভরিতে ২ হাজার টাকা সরকারকে দিতে হবে। বাজারে সাধারণ ক্রেতাদের নিকট স্বর্ণ বিক্রি করলে ক্যাশ ম্যামোর সঙ্গে ভ্যাটের পরিমাণ উল্লেখ থাকতে হবে। এতে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ে স্বচ্ছতার মধ্যে থাকবে।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক দীলিপ কুমার আগারওয়ালা জানান, তিন দিনব্যাপী এ মেলায় ১ হাজার ২’শ মত স্বর্ণ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি প্রায় ১৭০ কোটি টাকার সোনা, গোল্ড ও ডায়মন্ড বৈধ হয়েছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের হাতে সম্মাননা স্বারক তুলে দেওয়া হয়।
আই/