পাকিস্তান কি বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ?
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৫৪ পিএম, ২৭ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৫:০৩ পিএম, ২৭ জুন ২০১৯ বৃহস্পতিবার
ক্রমেই বেশ উপভোগ্য ও রোমাঞ্চকর হয়ে উঠছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সেমিফাইনালে যাওয়ার লড়াই। বিশেষত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তান জয় পাবার পর। যার ফলে এখন পয়েন্ট টেবিলের সাত নম্বরে অবস্থান করছে সরফরাজের দল। কারণ নেট রান রেটে বাংলাদেশের থেকে একটু পিছিয়ে আছে তারা।
নিউজিল্যান্ড যদি পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতে যেত, সেক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার পর দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হতো কিউইদের।
গেল সপ্তাহেও সেমিফাইনালে যাওয়া চারটা সম্ভাব্য দলের তালিকা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু ইংল্যান্ডের টানা দুই হার ও নিউজিল্যান্ডের একটি হার সেমিতে ওঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছে। তবে সেমিফাইনালের দৌঁড়ে থাকা একমাত্র পাকিস্তানের বিপক্ষেই ম্যাচ বাকি আছে বাংলাদেশের।
এদিকে, ভারতের বিপক্ষে একটি ম্যাচ হাতে থাকলেও ভারত ৫ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শক্ত অবস্থানে আছে, বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগেই হয়তো তারা সেমিফাইনাল যাত্রা নিশ্চিত করে ফেলবে।
অন্যদিকে, এ বিশ্বকাপে বেশ উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলা পাকিস্তানের বাকি দুটি ম্যাচ। যে ম্যাচ দুটিতে জয় পেলে চতুর্থ স্থানের জন্য শক্তিশালী অবস্থানেই থাকবে তারা। এর একটি হলো- আফগানিস্থানের সঙ্গে, যারা এখনো কোনো দলকেই হারাতে পারেনি। তাই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার ম্যাচটি হয়ে যেতে পারে একটি `ডু অর ডাই` ম্যাচ।
সে `ডু অর ডাই` ম্যাচের আগে পাকিস্তানের বোলিং নিয়ে তেমন উদ্বেগ না থাকলেও ব্যাটিং পাকিস্তানের বরাবরের দুশ্চিন্তার কারণ। তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাবর আজমের সেঞ্চুরি সে দুশ্চিন্তা কমিয়ে দিয়েছে। বিশ্বকাপের সেরা রান সংগ্রাহকদের তালিকায় তার নাম রয়েছে।
বাবর আজম এখন পর্যন্ত ছয়টি ম্যাচে ব্যাট করে প্রায় ৬৬ গড়ে ৩৩৩ রান তুলেছেন। দুর্দান্ত ফুটওয়ার্ক ও স্পিন খেলার দক্ষতার কারণেই ক্যারিয়ারের শুরু থেকে তাকে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপে ভরসা মনে করা হয়।
যদিও এই বিশ্বকাপে পাকিস্তানের অন্যতম উদ্বেগের কারণ ছিল দুই সিনিয়র ক্রিকেটার মোহাম্মদ হাফিজ ও শোয়েব মালিকের অফ-ফর্ম। তবে শোয়েব মালিককে বেঞ্চে বসিয়ে নামানো হয় হারিস সোহেলকে। যিনি তিন ম্যাচ খেলেই তুলে নিয়েছেন ১৬৫ রান। তবে পাকিস্তানের চিরাচরিত শক্তির জায়গা পেস বোলিং। যেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বড় মঞ্চের ক্রিকেটার মোহাম্মদ আমির। ছয় ম্যাচে ১৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
তার সাথে যোগ দিয়েছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। যিনি ৩ ম্যাচে নিয়েছেন ৬ উইকেট। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ১০ ওভার বল করে ২৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছেন নিউজিল্যান্ডের টপ অর্ডারে ধ্বস নামাতে।
এদিকে, পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ গেলো ৫ বছরে কোনো ওয়ানডে ম্যাচ হারেনি। বাংলাদেশ শেষবার পাকিস্তানের বিপক্ষে হারে ২০১৪ সালের এশিয়া কাপে। এরপর বাংলাদেশের মাটিতে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও প্রতি ম্যাচে জয় পায় বাংলাদেশ।
২০১৬ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপ ও ২০১৮ সালের ওয়ানডে ফরম্যাটের এশিয়া কাপেও পাকিস্তানকে হারায় বাংলাদেশ। তাছাড়া, এবারের বিশ্বকাপে আগের থেকেও ধারাবাহিক ও ভালো ক্রিকেট খেলছে টাইগাররা। বোলিংয়েও যেমন, তার চেয়ে ভালো করছে ব্যাটিংয়ে। তার অনন্য নজির বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
দুর্দান্ত ব্যাটিং করে চলেছেন তিনি, জায়গা করে নিয়েছেন সেরা রান সংগ্রাহকের তালিকার তিন নম্বরে। এরইমধ্যে ছয় ইনিংস খেলে করেছেন দুটি সেঞ্চুরি ও তিনটি হাফ-সেঞ্চুরি। শুধু তা-ই নয়, বল হাতেও এক ম্যাচে পাঁচ উইকেটসহ নিয়েছেন মোট ১০টি উইকেট। সুতরাং ম্যাচটি বেশ উপভোগ্য হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। এখন শুধু অপেক্ষার পালা।
টিআর/