ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

রিফাত হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে মাদক!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:১২ পিএম, ২৮ জুন ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৮:৩৩ পিএম, ২৮ জুন ২০১৯ শুক্রবার

বরগুনার ঘটনায় হত্যাকারীদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আন্তরিক চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বরগুনায় এক যুবককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন- যেভাবেই হোক দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে হবে। পুলিশ বিভাগ বিষয়টি নিয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলাপকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনিও বৃহস্পতিবার এমন দাবি করেছেন।

আর এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে এখন সারা দেশে আলোচনা সমালোচনা চলছে। তবে, সবচেয়ে বড় বিষয় হলো এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে কারণ বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এই বরগুনা এলাকায় মাদকের ছড়াছড়ি। আর মাদকের কারণেই এই হত্যাকাণ্ড বলে বিভিন্ন সূত্রে বেরিয়ে আসছে। রিফাত শরীফের হত্যাকারীদের অন্যতম নয়ন বন্ড মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তার বিরুদ্ধে মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে। মাদক মামলায় তিনি এর আগে গ্রেফতারও হয়েছিলেন। আর মাদক ব্যবসায়ী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে তেমন কেউ মুখ খুলতো না।

বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ছিল এই খুনের দায়ে অভিযুক্তদের যোগসাজস। শুধু মাদক ব্যবসায়ী নয়, তাদের সঙ্গে যুক্ত ছিল স্থানীয় অনেক রাজনীতিবিদদের। তাদের ছত্র ছায়ায় এরা ভয়ংকর হয়ে উঠেন।

এদিকে জানা যায়, দেশের তরুণদের মধ্যে মাদক সেবনের প্রবণতা বাড়ছে। কোনো কারণে প্রেমে বিচ্ছেদ বা নারী ঘটিত কোনো সমস্যা দেখা দিলে চরম ভয়ংকর হয়ে উঠেন। অতিরিক্ত মাদক গ্রহণের ফলে তাদের বোঝার ক্ষমতা নেই এটি অন্যায় বা অবৈধ। যে কোন নৃশংস কাজ করতেও দ্বিধা করে না তারা। প্রতিশোধ কিংবা অন্যকোনো জিঘাংসা থেকে তারা যেকোনো কিছুই ঘটিয়ে দিতে পারে।

প্রসঙ্গত, বুধবার (২৬ জুন) সকাল ১০টার দিকে রিফাত ও তার স্ত্রী মিন্নি বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা রাম দা নিয়ে রিফাতের ওপর চড়াও হয়। এ সময় মিন্নি তাদের বাধা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। কিন্তু, তার বাধা সত্ত্বেও সন্ত্রাসীরা রিফাতকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। হাতে থাকা একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে বারবার আত্মরক্ষার চেষ্টা চালান রিফাত। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না। সন্ত্রাসীরা তার হাত-পা, বুক, পিঠসহ সারা শরীর কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায়, মিন্নি এ সময় একবার সন্ত্রাসী নয়নকে, আরেকবার নয়নের সহযোগী দুর্বৃত্ত রিফাত ফরাজীকে আটকানোর চেষ্টা করেন এবং ‘বাঁচাও, বাঁচাও, না না’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। কিন্তু, ততক্ষণে রাম দার কোপে মারাত্মক আহত হন রিফাত। এরপর তাকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বিকালে রিফাত শরীফ মারা যান।