ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চায় বিসিএসে পদ বঞ্চিতরা

তানভীরুল ইসলাম

প্রকাশিত : ১২:০৬ এএম, ২৯ জুন ২০১৯ শনিবার | আপডেট: ১২:৫৫ এএম, ২৯ জুন ২০১৯ শনিবার

দেশের চিকিৎসক সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের ঘোষণায় ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের আয়োজন করে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)। কিন্তু সুপারিশ করে মাত্র চার হাজার ৭৯২ জনকে। উত্তীর্ণ বাকি আট হাজার ৩৬০ জনকে নন-ক্যাডার পদে সুপারিশের জন্য ঝুলিয়ে রাখায় অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ। এ অবস্থায় তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য একটি খোলা চিঠি লিখেছেন।

তাদের দাবি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পাস করলেই আরো কয়েক হাজার চিকিৎসক নিয়োগ সম্ভব। ক্যাডার পদে নিয়োগের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, শূন্য পদগুলো ক্যাডারের হওয়ায় প্রয়োজনে তাদের ক্যাডার করে নেওয়া হোক।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ এপ্রিল (মঙ্গলবার) ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের (স্বাস্থ্য) চূড়ান্ত ফলাফলে প্রায় ৪ হাজার ৭৯২ জন চিকিৎসক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে ৪৫৪২ জনকে সহকারী সার্জন ও ২৫০ জনকে সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে সুপারিশ করে পিএসসি।

৩৯তম বিসিএসে উত্তীর্ণ ডা. সোনিয়া জেমিন প্রীতি একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, “দশ হাজার ডাক্তার নিয়োগের বিষয়ে দেশের মানুষের সঙ্গে কথা দেওয়া হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষর ছিল। আমরা চাই তা বাস্তবায়ন করা হোক। নতুন করে এত ব্যাপক সংখ্যক চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া সময় সাপেক্ষ ও ব্যাপক ঝামেলার। আমরা যেহেতু প্রস্তুত আছি, সেহেতু সংক্ষিপ্ত পথে—আমাদেরকে নেওয়া হোক।”

নন-ক্যাডার চিকিৎসকরা ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকের বয়স শেষ, মানবিক দিক বিবেচনায় এ বিষয়টির সমাধান জরুরি। উত্তীর্ণ প্রার্থীদের পক্ষে আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রী, ডিজি অফিসের মহাপরিচালক এবং পিএসসি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং এই সমস্যার সমাধানের জন্য চেষ্টা চালিয়েছি। কিন্তু আদতে কোনো সমাধান না হওয়ায় সবশেষে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

৩৯তম বিসিএসে উত্তীর্ণ আরেক ডা. আতিকুর রহমান আদনান একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, ২০১৮-২০১৯ সালের বাজেটে স্বাস্থ্য বিষয়ক অধ্যায়ে বলা আছে, জনগনের স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা পূরণের জন্য সরকার ৯ হাজার ৭ শত ৯২ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হবে। সেই অনুযায়ী চার হাজার ৭৯২ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাহলে বাকি ৫ হাজার জনকে কেন নেয়া হচ্ছে না? আমরা তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আশায় বুক বেঁধে ছিলাম। বিভিন্ন সময়ে মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী মহোদয়দের প্রতিশ্রুতি শুনে আমরা আশায় বুক বেঁধেছিলাম। আমরা যদি অনুত্তীর্ণ হতাম আমাদের কষ্ট হত না। সরকারি কর্মকমিশনের সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও অভিনন্দন জানিয়ে অতঃপর পদ ফাঁকা না থাকার কারণে পদায়ন করা যাচ্ছে না এরকম খবরে আমাদের তরুণ সমাজের মনোবল ভেঙেগ গেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর স্বাক্ষাৎ প্রাপ্তির আশায় তার বাস ভবনের সামনে ৯ ঘন্টা সময় অপেক্ষায় থেকেও তার দেখা পাইনি। পরবর্তী দিনও তার অপেক্ষায় ৬ ঘন্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম। ইতিমধ্যে শুনেছি তিনি একটি টিভিতে দেয়া স্বাক্ষাতকারে বলেছেন, ২০২০ সালে বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে আরও ৫ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হবে। যদি পদ শূণ্য না থাকে, তাহলে কিভাবে নতুন ৫ হাজার নিয়োগ দেয়া সম্ভব? আর ৩৯ তম বিসিএসে উত্তীর্ণ ৮ হাজার ৩ শত ৬০ জন থেকেই কেন এই ৫ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া সম্ভব নয়? স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এরকম বক্তব্যে আমাদের দিক ভ্রান্ত হওয়া স্বাভাবিক নয় কি? আমরা চাই নতুন করে বিসিএসের আয়োজন না করে আমাদের থেকে সরাসরি নিয়োগ দিয়ে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা হোক।

৩৯তম বিশেষ বিসিএস (স্বাস্থ্য) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চিকিৎসকদের দেয়া প্রধানমন্ত্রী বরাবর খোলা চিঠিটি পাঠকদের কাছে তুলে ধরা হলো:

হে জননেত্রী

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশকে বাস্তবে রূপদান করতে আপনি যা গত ১০ বছরে করেছেন তা বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বরণের পরে এই বাংলার মাটিতে কোনদিন হয়নি। আপনি এই ছোট্ট বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। তার একটা অংশ স্বাস্থ্যখাত। আপনার নেতৃত্বে ২০০৯ সালে গণমুখী স্বাস্থ্যনীতির ধারায় একবিংশ শতাব্দীর ঊষালগ্নে স্বাস্থ্যকে জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেবার যে চেষ্টা শুরু হয়েছিল তা গত এক দশকে শতধারায় বিকশিত হয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে নিয়ে গেছে এক অন্য উচ্চতায়, সারা বিশ্বে তা এক অনুসরণীয় মানদণ্ড।

হে লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প

বাংলাদেশের চিকিৎসক সংকট দূরীকরণের লক্ষ্যে আপনার মহতী উদ্দ্যোগ ছিল ২০১৭ সালে আপনার স্বাক্ষরিত ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগের অনুমোদনপত্র। যেটা দেখে আমরা প্রায় ৪০ হাজার ডাক্তার পোস্টগ্রাজুয়েশন, সংসার, চাকরি ছেড়ে নিজেদের সবটুকু বাজি রেখে চেষ্টা করতে লাগলাম নিজেদেরকে যোগ্য প্রমাণ করার জন্য। পিএসসি সেখান থেকে আমাদের প্রায় ১৩ হাজার ২০০ ডাক্তার লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ঘোষণা করে। তারই ধারাবাহিকতায় মৌখিক পরীক্ষা শেষে গত ৩০ এপ্রিল চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। আমরা আশায় বুক বেঁধে ছিলাম, আপনার অনুমোদনপত্রের বাস্তবায়ন এবারই হবে, যেমনটা বারবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে। কিন্তু আমরা যে অভিনন্দন জেনে মেসেজ পেলাম তার চিত্রটা হলো চার হাজার ৭৯২ জনকে ক্যাডার হিসেবে সুপারিশ করা হয়েছে এবং আরো আট হাজার ৩৬০ জনকে উত্তীর্ণ কিন্তু নন-ক্যাডার হিসেবে রাখা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে তো নন ক্যাডারভুক্তির কথা ছিল না। আমরা জানতে পারি পর্যাপ্ত পদ ফাঁকা না থাকার কারণে আমাদের সুপারিশ করা যায়নি।

হে মমতাময়ী

আমরা এতগুলো ডাক্তার দিন রাত এক করে ক্যাডারভুক্ত হবার আশায় পরিবার পরিজনকে ছেড়ে সুদীর্ঘ ১ বছর অনেক চাপ নিয়ে নিজেদেরকে তৈরি করেছি। আমাদের অনেকের এটাই শেষ সুযোগ। দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন ছিল আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় সরকারিভাবে চিকিৎসা সেবা দেবো। MDG র মতো SDG অর্জনের অংশিদারিত্ব অর্জন করবো। আমাদের অনেকেই পোস্টগ্রাজুয়েশন করেছি। উপজেলা লেভেলে কনসালটেন্ট পর্যায়ের চিকিৎসা দেবো—এরকম স্বপ্ন দেখেছি। বিভিন্ন সময়ে মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী মহোদয়দের প্রতিশ্রুতি শুনে আমরা আশায় বুক বেঁধেছি। আমরা যদি অনুত্তীর্ণ হতাম আমাদের কষ্ট হত না। সরকারি কর্মকমিশনের সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও অভিনন্দন জানিয়ে অতঃপর পদ ফাঁকা না থাকার কারণে পদায়ন করা যাচ্ছে না এরকম খবরে আমাদের তরুণ সমাজের মনোবল ভেঙেগ গেছে।

হে গণমানুষের নেত্রী

আপনি বিগত ১০ বছরে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে গতিশীল করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ভাগ করেছেন দুটি ভাগে। ১২ হাজার নারীকে দিয়েছেন স্কিলড বার্থ এ্যাটেনডেন্ট প্রশিক্ষণ, ১৩ হাজার ৮৮২টি কমিউনিটি ক্লিনিক করেছেন। আপনি প্রতিষ্ঠা করেছেন এশিয়ার মধ্যে সব থেকে বড় বার্ন ইউনিট-শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইএনটি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সাইন্সসহ আরো কত কি! দেশে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। অধিকাংশ জেলা সদর হাসপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যা কোনটিতে ১০০ থেকে ১৫০ শয্যা এমনকি ২৫০ শয্যা পর্যন্ত উন্নীত করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখ হয়, শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সে অনুপাতে জনবলের পদ সৃষ্টি হয়নি। এখনও ২০০৮ সালের কাঠামো দিয়েই চলছে। যার নিদারুণ পরিণতি ভোগ করছেন এসব হাসপাতালে কর্মরত সীমিত জনবল এবং চিকিৎসা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কোটি কোটি মানুষ।

হে চ্যাম্পিয়ান অব দ্য আর্থ

বাংলাদেশে এখন তিনটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ১১১টি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ৪২৮টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত ১৬ হাজারের অধিক কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন সাব সেন্টারগুলোতে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক স্বাস্থ্য কর্মী এ দেশের ১৬ কোটি মানুষের সেবায় দিনরাত নিরলসভাবে আাপনার নির্দেশনায় কাজ করে যাচ্ছে।

প্রতিটি পর্যায়ে এখনও প্রচুর পদ ফাঁকা আছে। অর্ধেকের মতো পদে চিকিৎসক এটাচমেন্টে অন্য জায়গায় কর্মরত আছে। এভাবে কাগজে-কলমে চিকিৎসক থাকলেও আদতে একজন চিকিৎসক দুই জায়গায় পদায়ন আছেন আর ভুগছেন বাকি সবাই।

হে প্রিয় নেত্রী

মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে চলমান চিকিৎসা সংকট মেটাতে বিপুল সংখ্যক ক্যাডার চিকিৎসক নিয়োগ প্রদান এখন সময়ের দাবি। নতুন পদ সৃষ্টি ও সৃজন করার মাধ্যমে আমাদের নিয়োগ দেওয়া আপনার জন্য কঠিন কোনো বিষয় নয়। নিম্ন-আয়ের দেশ হিসেবে অপ্রতুল চিকিৎসক দিয়ে যেভাবে চলেছে—এখন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে হলে এ সংখ্যাটা মোটেও যথেষ্ট নয়। ডাক্তারগণ লোকবলের অভাবে গড়ে প্রায় ১৬ ঘণ্টা করে ডিউটি করে যাচ্ছেন। এ সংকট ঘোচানোর জন্য WHO-এর হিসাব মতে, এদেশে আারো ৫৬ হাজার সরকারি ডাক্তার প্রয়োজন। আমাদের বিশ্বাস আপনার স্নেহের হাত ধরে এ চিকিৎসক সংকট খুব দ্রুত নিরসন হবে।

হে বঙ্গবন্ধু কন্যা

দেশের যে কোনো প্রান্তে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন একটি অবিস্মরণীয় পদক্ষেপ। দেশে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৮২২টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপিত হয়েছে। যেখানে সপ্তাহে ১ দিন চিকিৎসক যাবেন। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা ১ জনের পক্ষে সম্ভব নয়। এই আট হাজার ৩৬০ জন ডাক্তারকে ক্যাডারভুক্তিকরণ এই পদক্ষেপে রাখতে পারে অনেক বড় অবদান। সপ্তাহের সবগুলো দিনই পেতে পারে এই সেবা।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নীতিমালা চিকিৎসা শাস্ত্রের মৌলিক বিষয়গুলোতে (বেসিক সায়েন্স) প্রতি ১০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন শিক্ষক থাকতে হবে। কিন্তু বাস্তবে সেই অনুপাতে সরকারি মেডিকেল শিক্ষক নেই। চিকিৎসা বিজ্ঞান হল হাতে-কলমে শেখার বিষয়। যথাযথ শিক্ষক না থাকলে শিক্ষার মানে ঘাটতি রয়ে যাবে।

হে মাদার অব হিউম্যানিটি

আপনি আামাদের এই ছোট দেশে প্রায় দশ লক্ষ রোহিঙ্গাকে ঠাঁই দিয়ে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত গড়েছেন, যা সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। আপনার ভালবাসার ছোঁয়ায় আাপনি চাইলেই পারেন আমাদের তথা আট হাজার ৩৬০টি পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে।

হে জননী

আরো বিপুল সংখ্যক চিকিৎসক নিতে হবে—এমনটাই জেনেছি। তাহলে আমাদের দোষটা কোথায়? আমরা উত্তীর্ণ চিকিৎসকেরা অপেক্ষারত আছি, আমাদের থেকে ধাপে ধাপে পদায়ন করে আমাদের সম্ভাবনার দুয়ারটা খুলে দিন। এতগুলো চিকিৎসক উত্তীর্ণ বলে অভিনন্দন যখন জানানোই হলো আবার নতুন করে পরীক্ষা নিয়ে চিকিৎসক পদায়নের প্রয়োজন কোথায়? আমাদের সবাইকে পদায়ন করলেও চিকিৎসক সংকট নিরসন হচ্ছে না, আরও প্রয়োজন থাকছে। নতুনদের জন্য পথ তো খোলা আছেই। আমাদের বিভিন্নজন বিভিন্ন বয়সী। পদসৃজন করে ধাপে ধাপে নিয়োগ প্রদান করলে তারা অবসরেও বিভিন্ন সময়ে যাবে। একই সঙ্গে নিয়োগ দিলে একইসঙ্গে অবসরে গিয়ে সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কাও নেই।

আমরা প্রতিনিধি দল এই ৮৩৬০ জন বিসিএস উত্তীর্ণ চিকিৎসক সরকারি সেবাদানের নিশ্চয়তা পেতে বেশ কিছুদিন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় পদ সংখ্যার জট খুলতে ছোটাছুটি করেছি এবং শান্তিপূর্ণ কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের কারণে যেন কোনো দুর্ভোগ না তৈরি হয় এ উদ্দেশ্যে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন করে শান্তিপূর্ণভাবে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।

আমরা এতই হতভাগা। কত শত মানুষ আমাদের জননেত্রীর দেখা পান, কথা বলার সুযোগ পান। আমরা প্রতিনিধিদল শত চেষ্টা করে যাচ্ছি একবার আপনার সাক্ষাত প্রাপ্তির জন্য। একটাবার আমাদের দিকে সদয় দৃষ্টি দিবেন, একবার দেখা করার সুযোগ হবে—এটা কি খুব বড় দুরাশা?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী

আমরা চাই দেশের উন্নয়নে নিজেদের আত্মনিয়োগ করে আপনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে। এই ৮৩৬০ জন চিকিৎসক এর পক্ষ থেকে আশ্বাস দিচ্ছি যে, আপনার সারথী হতে চাই, আপনার সরকার আমাদেরকে দেশে যেখানে পদায়ন করবে সেখানে চিকিৎসা সেবা দিতে বাধ্য থাকবো।

মাননীয় নেত্রী, মহান সৃষ্টিকর্তা আপনার মঙ্গল করুক।

নিবেদক,
৩৯তম বিশেষ বিসিএস (স্বাস্থ্য) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিন্তু সুপারিশবিহীন আট হাজার ৩৬০ চিকিৎসক।

টিআই/এসি