ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

ফরিদপুরে নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু মানমন্দির

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪১ এএম, ২৯ জুন ২০১৯ শনিবার

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ সমহিমায় এগিয়ে চলছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুনিপুন হাতের নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে দেশ। ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে এ জাতি। মহাকাশে পাঠানো হয়েছে নিজেদের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১।

নতুন এ চিরায়ত স্বপ্নের নাম বঙ্গবন্ধু মানমন্দির। ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় দেশের প্রথম মানমন্দির নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, লেখক ও পদার্থবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বিভিন্ন গণমাধ্যমে শুক্রবার ‘একটি স্বপ্ন’ নামে একটি প্রবন্ধের মাধ্যমে এ মানমন্দির নির্মাণের উদ্যোগের কথা জানা যায়।

বঙ্গবন্ধু মানমন্দির স্থাপনের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রথমে একটি সমীক্ষা করা হবে। এরপর শুরু হবে নির্মাণ কাজ বলে একটি জাতীয় দৈনিককে জানিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।

অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল জানান, সম্প্র্রতি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিষয়টি তুলে ধরা হয়। পরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এরই মধ্যে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করে সভাও করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু মানমন্দির স্থাপনে ফরিদপুরের ভাঙ্গাকে আদর্শ জায়গা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কেননা ঢাকা থেকে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার পথ হচ্ছে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে এবং এশিয়ান হাইওয়ের করিডোর-১ এর অংশ। এখানে বঙ্গবন্ধুর নামে মানমন্দির নির্মিত হলে তা হয়ে উঠবে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।

ড. জাফর ইকবাল তার প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন, পৃথিবীতে তিনটি পূর্ব-পশ্চিম বিস্তৃত রেখা আছে, সেগুলো হলো কর্কটক্রান্তি, মকরক্রান্তি এবং বিষুবরেখা। ঠিক এরকম চারটি উত্তর-দক্ষিণ বিস্তৃত রেখা আছে, সেগুলো হলো- শূন্য ডিগ্রি, ৯০ ডিগ্রি, ১৮০ ডিগ্রি এবং ২৭০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা। চারটি উত্তর-দক্ষিণ রেখা এবং তিনটি পূর্ব-পশ্চিম রেখা সব মিলিয়ে বারো জায়গায় ছেদ করেছে। বারোটি বিন্দুর দশটি বিন্দুই পড়েছে সাগরে-মহাসাগরে। এর মধ্যে শুধু দুটি ছেদবিন্দু পড়েছে স্থলভাগে। এর একটি পড়েছে সাহারা মরুভূমিতে আর অন্য বিন্দুটি বাংলাদেশে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে কর্কটক্রান্তি এবং ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমার ছেদবিন্দুটি পড়েছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায়। তাই এখানেই মানমন্দির নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহাকাশের প্রতি মানুষের আকর্ষণ সহজাত। সূর্য-চাঁদ এবং গ্রহ-নক্ষত্রের গতিপ্রকৃতি ও আকৃতি নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই কারও। সেই প্রাচীনকাল থেকেই এই কৌতূহল মেটাতে নানা তৎপরতা চলছে। আকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য লোকালয় থেকে দূরে উঁচু পাহাড় বা খোলা প্রান্তরে অবকাঠামো গড়ে তোলার রেওয়াজও শুরু হয়েছে বহু আগেই। এসব অবকাঠামো মানমন্দির নামে পরিচিত। ধারণা করা হয়, খ্রীষ্ট-পূর্ব ৩৫০০ সালের দিকে মিসরে মানমন্দির গড়ে ওঠে। প্রাচীন মিসরের পাশাপাশি মায়া, চৈনিক, ভারতীয় ও গ্রিক সভ্যতায় মানমন্দির বানিয়ে আকাশ পর্যবেক্ষণের নিদর্শন পাওয়া গেছে। সতেরশ` শতকের শুরুতে গ্যালিলিও প্রতিসরণ দূরবীন আবিস্কারের পর মহাকাশ পর্যবেক্ষণে বিপ্লব ঘটে। ধীরে ধীরে আধুনিক যন্ত্রপাতি উদ্ভাবিত হয়। মানুষের দৃষ্টি সম্প্রসারিত হয় কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরে। এখন মহাকাশেও হাবল টেলিস্কোপের মতো মানমন্দির গড়ে উঠেছে।