ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৮ ১৪৩১

হজ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহর নির্দেশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:৪৬ পিএম, ২৯ জুন ২০১৯ শনিবার

আল্লাহর বিধান যে হৃদয় ধারণ করে। সেই হৃদয়ে আল্লাহ-সচেতনতা সৃষ্টি হলেই ধর্মের নির্দেশনাবলিকে সম্মান করতে পারে। আল্লাহ হজের নির্দেশ দিয়েছেন। অবশ্যই তাতে মানুষের কল্যাণ রয়েছে।

এবার জেনে নেওয়া যাক হজ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ যা বলেছেন:

‘তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ ও ওমরাহ পূর্ণ করো। কিন্তু যদি তোমরা বাধা পাও তবে সহজলভ্য কোরবানি করো। আর কোরবানি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত মস্তক মুণ্ডন করো না। কিন্তু অসুস্থতা বা মাথায় কোন রোগের কারণে আগেই মস্তক মুণ্ডন করে ফেললে ‘ফিদিয়া’ বা প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে রোজা রাখবে, কোরবানি বা সদকা দেবে। নিরাপদ পরিস্থিতিতে কেউ হজের আগে ওমরাহ করে উপকৃত হতে চাইলে সে সহজলভ্য কোরবানি করবে। কিন্তু যদি কেউ কোরবানির কোন পশু না পায়, তবে সে হজের সময় তিন দিন ও ঘরে ফিরে সাত দিন, এভাবে মোট ১০ দিন রোজা রাখবে। মসজিদুল হারামের কাছে পরিবার-পরিজনসহ বাস করে না এমন লোকদের জন্যে এ নিয়ম প্রযোজ্য। অতএব হে মানুষ! আল্লাহ-সচেতন হও। আল্লাহর ধর্মবিধান লঙ্ঘন হতে দূরে থাকো। জেনে রাখো, আল্লাহ মন্দ কাজের শাস্তিদানে কঠোর। (সূরা বাকারা, আয়াত ১৯৬)

‘হজের মাস সমূহ সবারই জানা। যারাই এ মাসে হজের নিয়ত করবে, তারা হজের সময় (এক) যৌনাচার, (দুই) অন্যায়, (তিন) দুর্ব্যবহার, (চার) ঝগড়া-বিবাদ থেকে বিরত থাকবে। আর তোমরা যে সৎকর্ম করো, আল্লাহ তা জানেন। আর যাত্রাকালে সঙ্গে পাথেয় নিয়ে যাবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ-সচেতনতাই উত্তম পাথেয়। অতএব হে বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ! সব সময়ই তোমরা আল্লাহ-সচেতন থেকো।’ (সূরা বাকারা, আয়াত ১৯৭)

‘তবে হজের সময় আল্লাহর অনুগ্রহ-সম্পদ অনুসন্ধানে কোন দোষ নেই। যখন তোমরা আরাফাত থেকে ফিরে মাশয়ারে হারাম-এ (মুজদালিফায়) থাকবে তখন আল্লাহকে সেভাবে স্মরণ করবে, যেভাবে তিনি তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন (পথের দিশা দিয়েছেন)। কারণ ইতোপূর্বে তোমরা বিভ্রান্ত ছিলে। (সূরা বাকারা, আয়াত ১৯৮)

‘এরপর তাওয়াফের জন্যে জনস্রোতের সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে সেখান থেকে ফিরে যাও যেখান থেকে সবাই ফিরে যায় এবং জীবনের সকল পাপের জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। নিঃসন্দেহে আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সূরা বাকারা, আয়াত ১৯৯)

‘হজের অনুষ্ঠানাদি সম্পন্ন করার পরে আল্লাহকে এমনভাবে স্মরণ করবে, যেভাবে তোমরা তোমাদের বাপ-দাদাদের স্মরণ করতে। বরং আল্লাহকে তার চেয়েও আরো গভীর নিমগ্নতায় স্মরণ করো, প্রার্থনা করো। এদের মধ্যে যারা প্রার্থনা করে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! দুনিয়াতেই আমাদের সবকিছু দাও’, কার্যত এদের জন্যে আখেরাতে কিছুই পাওয়ার নেই। (সূরা বাকারা, আয়াত ২০০)

‘আবার যারা প্রার্থনা করে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের দুনিয়ার কল্যাণ দান করো। আখেরাতের কল্যাণ দান করো। আর আগুনের শাস্তি থেকে আমাদের রক্ষা করো। এরাই তাদের কর্ম অনুসারে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় স্থানেই ফল লাভ করবে। আল্লাহ যথাযথ হিসাব গ্রহণকারী।’ (সূরা বাকারা, আয়াত ২০১-২০২)

‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা সততার সঙ্গে চুক্তিনামা মেনে চলো, ওয়াদা পালন করো। পরে জানানো হবে, এমন কিছু ব্যতিক্রম বাদে তৃণলতাভোজী সকল পশুর মাংস তোমাদের জন্য হালাল। তবে হজ বা ওমরাহর সময় এহরাম বাঁধা অবস্থায় শিকার করা হালাল নয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের মঙ্গলের জন্যে তাঁর ইচ্ছানুসারে বিধান প্রদান করেন।’ (সূরা মায়েদা, আয়াত ১)

‘হে নবী! মানুষের কাছে হজের ঘোষণা দাও। তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে বা উটের পিঠে চড়ে। দূর-দূরান্ত থেকে তারা এসে যেন কল্যাণময় স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে। আর তিনি তাদেরকে জীবনোপকরণ হিসেবে যে গবাদি পশু দিয়েছেন, তা থেকে নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নামে জবাই করতে পারে। তা থেকে তোমরা খাও এবং অভাবী দরিদ্রদের খাওয়াও।’ (সূরা হজ, আয়াত ২৭-২৮)

‘তারপর তারা যেন তাদের অপরিচ্ছতা দূর করে, তাদের মানত পূর্ণ করে এবং পুনরায় কাবাঘর তাওয়াফ করে।’ (সূরা হজ, আয়াত ২৯)

‘নিঃসন্দেহে সাফা ও মারওয়া আল্লাহর করুণার নিদর্শনগুলোর অন্যতম। তাই যে কেউ কাবাঘরে হজ বা ওমরাহ করে, তার জন্যে এ দুটি পাহাড়ের মধ্যে সা’ঈ করলে কোন পাপ নেই। আর যে ব্যক্তি স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকর্ম করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তার উত্তম পুরস্কারদাতা, সেই সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত।’ (সূরা বাকারা, আয়াত ১৫৮)

‘এই হচ্ছে হজের বিধান। কেউ আল্লাহর পবিত্র বিধানকে সম্মান করলে তা প্রতিপালকের দৃষ্টিতে সেই ব্যক্তির জন্যেই উত্তম বলে গণ্য হবে। তোমাদের জন্যে যা হারাম বলে ঘোষিত হয়েছে, তাছাড়া সকল চতুষ্পদ পশু হালাল। সুতরাং মূর্তির অপবিত্রতা থেকে দূর থেকো। মিথ্যাচার পরিহার করো।’ (সূরা হজ, আয়াত ৩০)

এএইচ/কেআই