ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

অবশেষে বাবা-মা খুঁজে পেল হারানো শিশুটি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২৩ পিএম, ১ জুলাই ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ১২:১৬ এএম, ২ জুলাই ২০১৯ মঙ্গলবার

অবশেষে বাবা-মা খুঁজে পেল হারানো শিশু রানা। আজ রাত ৯টার দিকে ছেলে শিশুটির বাবা-মায়ের কাছে তাদের সন্তানকে বুঝে দেওয়া হয়। এ সময় তেজগাঁও থানার পুলিশ কর্মকর্তারা, ইটিভি সাংবাদিকরা ও হারানো শিশুর স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

হারানো শিশুটির খবর একুশে টেলিভিশন অনলাইনে প্রকাশের পরদিন সোমবার তার পরিবার জানতে পারে। ওই সংবাদে উল্লেখিত নম্বরে আবু বক্কর কিদ্দিককে ফোন দেয় শিশুটির পরিবার। তারপর ইটিভি কার্যালয়ে এসে শিশুটির বাবা-মা ছেলে হারানোর ঘটনা তুলে ধরে। পরে ইটিভির সাংবাদিকরা তেজগাঁও থানায় গিয়ে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পরিচয় নিশ্চিত করে ছেলেকে ফেরৎ দেয়।

এর আগে গতকাল রোববার একুশে টেলিভিশন অনলাইনে ‘ঢাকা মেডিকেলের সামনে ৫ বছরের শিশু’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২ নম্বর ভবনের সামনে থেকে একটি প্রতিবন্ধী শিশু পাওয়া গেছে। শিশুটি থেমে থেমে কান্না করছে। নিজের নাম ও বাবার নাম ছাড়া আর কিছুই বলতে পারছে না। মাঝে মাঝে মায়ের কাছে যাব, মায়ের কাছে যাব বলে চিৎকার করছে। সে পরিস্কার ভাষায় কথা বলতে পারে না।

জানা যায়, রোববার বিকাল সাড়ে ৩ টার সময় বৃষ্টিতে ভেজা অবস্থায় শিশুটিকে পাওয়া যায়। শিশুটি নিজের নাম রানা ও বাবার নাম ইয়ার হোসেন বলে জানিয়েছে। অস্বাভাবিক আচরণের এ শিশুটিকে দেখে পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মচারী আবু বক্কর সিদ্দিক রিক্সায় উঠিয়ে তাকে (শিশুটির দেখানো) বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়। এরপর শাহবাগ থানায়ও নিয়ে যায় আবু বক্কর। কিন্তু থানায় রাখতে অস্বীকৃতি জানায়। বিভিন্ন দ্বারে ঘুরে ঘুরে ব্যর্থ হয়ে সর্বশেষ সে একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) কার্যালয়ে আসে। পরে ইটিভি অনলাইনে শিশুটি হারানোর সংবাদ প্রকাশ হয়। কিন্তু ওইদিন রাত ১২টা পর্যন্ত শিশুটির কোন অবিভাবক খুঁজে পাওয়া যায় না।

এরপর কোনো উপায় না দেখে একুশে টেলিভিশনের সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে শিশুটিকে তেজগাঁও থানায় নেয়া হয়। পরে ওই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. সেন্টু মিয়া শিশুটির বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে অনেক আন্তরিকতা ও সহযোগিতা করেন। পার্শবর্তী সব থানায় শিশুটি হারানোর সংবাদ জানিয়ে দেন। পাশাপাশি শিশুটির অবিভাবকের সন্ধ্যান পাওয়া মাত্র তেজগাঁও থানায় জানানোর নির্দেশ দেন।

এ অবস্থায় একটি দিন পেরিয়ে আজ সোমবার বিকালে শিশুটির পরিবার থেকে আবু বক্করকে ফোন দেওয়া হয়। জানানো হয় তাদের শিশুটি গতকাল রোববার সকাল ৮টার দিকে হারিয়ে গেছে। কোথাও খুঁজে তারা শিশুটিকে পায়নি। এমনকি পার্শবর্তী চকবাজার থানায় যোগাযোগ করেও শিশুটির সন্ধ্যান মেলেনি।

এ কথা শোনার পর আবু বক্কর ও শিশুটির বাবা ইয়ার হোসেন, মা নার্গিস বেগম সহ স্বজনরা তাদের বাসা ঢাকার লালবাগ থানার শহীদ নগর এলাকা থেকে ইটিভি কার্যালয়ে আসে। এরপর ইটিভির সাংবাদিকরা শিশুটির পরিবারসহ তেজগাঁও থানায় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে যায়। সেখানে সবার উপস্থিতিতে শিশু রানার পরিচয় নিশ্চিত করে পরিবারের কাছে তাকে তুলে দেওয়া হয়।

শিশুটির মা নার্গিস বেগম তার হারানো সন্তানের সন্ধ্যান দিয়ে কোলে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ইটিভি পরিবার, আবু বক্কর সিদ্দিক ও পুলিশ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, সন্তানহারা মায়ের কোলে তার সন্তানকে ফিরিয়ে দিয়ে যে মানবিকতার কাজ আপনারা করেছেন, তার ঋণ আমি কোনদিন-ই শোধ দিতে পারবো। আমি এ উপকার কোনদিন ভুলবো না।

আরকে//