‘নয়নের পিঠে তিনটি গুলি লেগে বুক দিয়ে বেরিয়ে যায়’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৩৬ পিএম, ৩ জুলাই ২০১৯ বুধবার
বরগুনায় প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে শাহ নেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড (২৫) গতকাল মঙ্গলবার ভোর রাতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
বরগুনা সদর উপজেলার পুরাকাটা এলাকায় পায়রা নদীর তীরে এ ঘটনা ঘটে।
তার নিহতের পর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, নয়নের পিঠে বন্দুকের তিনটি গুলি বিদ্ধ হয়ে বুক দিয়ে বেরিয়ে গেছে।
বরগুনা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সোহরাব হোসেনের নেতৃত্বে তিন জন চিকিৎসক নয়নের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নয়নের নিহতের ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, নয়ন বন্ডকে পুলিশ ধরার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সে অস্ত্র প্রদর্শন করেছে। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে গুলিবিনিময়ে নয়ন নিহত হয়।
তবে এ বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি নয়নকে আটক করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিচারিক আদালতে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এদিকে রিফাত হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ২ নম্বর আসামি রিফাত ফরাজীকে আজ বুধবার ভোর রাতে রিফাত ফরাজীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তাকে বরগুনা আদালতে হাজির করা হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম।
বুধবার সকাল ১০টায় পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
এ সময় রিফাত ফরাজীকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকালে বরগুনা শহরের কলেজ রোডে রিফাত শরীফকে স্ত্রীর সামনেই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এলাপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে একদল যুবক। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রিফাতের মৃত্যু হয়। হামলার সময় মুঠোফোনে ধারণ করা একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক রামদা হাতে রিফাতকে উপযুপরি দা’এর কোপ দিচ্ছে। অন্যদিকে রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি স্বামীকে বাঁচানোর জন্য হামলাকারীদের নিবৃত করার চেষ্টা করছেন। বরগুনার সরকারি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্রী ও রিফাতের স্ত্রী মিন্নি হামলাকারী সবাইকে চিনতে না পারলেও নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীর নাম বলেছেন।
প্রায় ২ মাস আগে রিফাতকে বিয়ে করেন মিন্নি। বিয়ের আগে থেকেই নয়ন তাকে উত্ত্যক্ত করতেন, হুমকি দিতেন। এমন কি বিভিন্ন সময় চলার পথে হেনস্তাও করেছেন বলে জানা যায়।
রিফাত হত্যার ঘটনায় পরের দিন বিকালে তার বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে স্থানীয় থানা বরগুনা সদর থানায় ১২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।