ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১

বৃষ্টি হলেই সড়ক নালায় পরিণত হয়

দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ০৮:০০ পিএম, ৩ জুলাই ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ০৮:০৬ পিএম, ৩ জুলাই ২০১৯ বুধবার

ঢাকার নবাবগঞ্জের বান্দুরা ব্রিজ থেকে শিকারীপাড়া পর্যন্ত সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিকল্প কোন সড়ক না থাকায় উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের জনগণকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

উপজেলার চারটি ইউনিয়নসহ পাশ্ববর্তী মানিকগঞ্জ জেলার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একমাত্র সড়কটির বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। সামান্য বৃষ্টি হলেই গর্তগুলো পানিতে ছোট নালায় পরিণত হয়।

স্থানীয়রা জানান, বান্দুরা-শিকারীপাড়া সড়কটি দিয়ে বান্দুরা ইউনিয়নের আংশিক এবং বারুয়াখালী, জয়কৃষ্ণপুর ও শিকারীপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা নিয়মিত যাতায়াত করে। উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়েই উপজেলা সদরে যেতে হয়। এছাড়া ঢাকা থেকে যাতায়াত সহজ হওয়ায় পাশ্ববর্তী মানিকগঞ্জের লোকজনও সড়কটি ব্যবহার করে। অথচ সর্বশেষ কবে সড়কটি সংস্কার হয়েছিল মনে করতে পারছে না স্থানীয় বাসিন্দারা।

সরজমিনে শনিবার সকালে দেখা যায়, শুক্রবার বৃষ্টি হওয়ায় সড়কটির বিভিন্ন গর্তগুলো ছোট ছোট নালায় পরিণত হয়েছে। কোন গর্তের কতটুকু গভীরতা এটা বুঝা যাচ্ছে না। ফলে গাড়িগুলো খুব সাবধানে চলাচল করছে। বিশেষ করে বান্দুরা ব্রিজের ঢালে সৃষ্টি হওয়ায় বড় গর্তের কারণে বিপাকে পড়েছেন গাড়িচালক ও যাত্রীরা।

খুব সর্তকতার সাথে গাড়ি চালালেও গত দুই দিনে পাঁচটি র্দুঘটনা ঘটেছে বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এছাড়া আলালপুর হয়ে দাউদপুর দিয়ে শিকারীপাড়া যাওয়ার সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। সড়কটির বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় শতাধিক গর্ত।

নূরনগর বাজার সংলগ্ন, মুন্সিনগর মসজিদের সামনে, দাউদপুর বাজার সংলগ্ন, হাগ্রাদি বাজারের সামনে এবং শিকারীপাড়া বাজারে যাওয়ার একটু দূরত্বে সৃষ্টি হওয়া গর্তগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। স্থানীয়রা জনপ্রতিনিধিরা দুই একটা গর্ত মাঝে মাঝে মাটি দিয়ে ভরাট করলেও যানবাহন চলাচলের ফলে আবারও গর্তের সৃষ্টি হয়। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন গড়ে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করে।

বান্দুরা বাজারের ব্যবসায়ী রঞ্জিত বণিক বলেন, বান্দুরা থেকে শিকারীপাড়া এবং বেড়িবাঁধ যাওয়ার একমাত্র সড়কটি এখন মৃত্যুফাঁদ। বিশেষ করে বান্দুরা সেতুর ঢালে সৃষ্টি হওয়ায় গর্তে প্রতিনিয়িন ঘটছে র্দুঘটনা। আমরা ব্যবসা ক্ষেত্রেও খুব ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে আমাদের দোকানেও কোন কাস্টমার আসে না।


ব্যবসায়ী প্রদীপ বণিক বলেন, বান্দুরা ব্রিজের ঢালে সৃষ্ট গর্তে যানবাহন উল্টে প্রায় র্দুঘটনা ঘটছে। কিন্ত সড়কটির মেরামতের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছে না কর্তৃপক্ষ। দিন দিন মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। মানুষের এত ভোগান্তি হলেও যেন দেখার কেউ নেই।


অটোরিক্সা চালক ইয়ারব হোসেন বলেন, বান্দুরা থেকে শিকারীপাড়া বা বেঁড়িবাধ যেতে মন চায় না। রাস্তাটি এতই খারাপ সব সময় ভয়ে থাকি কখন জানি গাড়ি উল্টে র্দুঘটনা ঘটে। এছাড়া বান্দুরা ব্রিজের কারনে যানজট সৃষ্টি হয়, তার উপর আবার ব্রিজের ঢালেই সৃষ্টি হয়েছে বিশাল গর্ত। ফলে যানজট বেড়ে গেছে।

একাধিক সিএনজি চালক জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজারো যানবাহন চলাচল করে। কিন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানে কাপেটিং উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ঝুঁকি নিয়েই আমরা চলাচল করছি। র্দুঘটনার শিকারও হচ্ছি মাঝে মাঝে। অনেকটা বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে সড়কটি দিয়ে চলাচল করছি আমরা।

দোহার-নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্র শামীম হোসেন বলেন, আমাকে কলেজে এই সড়কটি দিয়েই যেতে হয়। বৃষ্টি দিনে খুব সমস্যা হয় কারন গাড়ি পাওয়া যায় না। সড়কটি অবস্থা এতই খারাপ বৃষ্টি হলে অটো চালকরা আর বান্দুরা যেতে চায় না। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে আমার আমাদের। আমরা চাই অতি দ্রুত সময়ে সড়কটি মেরামত করা হোক।

শিকারীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলিমুর রহমান খান পিয়ারা বলেন, সড়কটি আসলে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আমি বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি আশা করি অবিলম্বে সড়কটি মেরামত করা হবে। বান্দুরা ইউপি চেয়ারম্যান হিল্লাল মিয়া বলেন, নবাবগঞ্জের পশ্চিমাঞ্চলের মানুষদের জন্য সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি সড়কটি মেরামতের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে কয়েকবার বলেছি। তারা গুরুত্ব সহকারে দেখলেই কাজটি হয়ে যায়।

নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আনোয়ার রহমান বলেন, আমি রাস্তাটি সম্পর্কে অবগত। দ্রুত সড়কটি মেরামতের উদ্যোাগ নেওয়া হবে।

টিআর/