ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

লাল কার্ডে ক্ষুব্ধ মেসি, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বয়কট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:৪১ পিএম, ৭ জুলাই ২০১৯ রবিবার

কোপা আমেরিকায় রেফারিং নিয়ে সমালোচনায় সবচেয়ে বেশি মুখর লিওনেল মেসি। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে লাল কার্ড দেখার পরই পুরো টুর্নামেন্টের সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মেসি। চিলির বিপক্ষে ওই ম্যাচে লাল কার্ড দেয়ার পর মেসি সরাসরিই বলেছেন, ‘আমার মনে হয় কাপটা ব্রাজিলকে জেতানোর জন্যই পাতানো হয়েছে, এই দুর্নীতি করা হয়েছে।’

মেসিকে কার্ড দেয়ার আগের দৃশ্যটাই ছিল অবিশ্বাস্য। ম্যাচের তখন ৩৭ মিনিট। চিলির বিপদসীমার মধ্যে বল দখলের লড়াইয়ে গ্যারি মেডেলকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। এর প্রতিক্রিয়ায় চিলি অধিনায়ক যা করলেন তা এক কথায় অবিশ্বাস্য! পেছনে ঘুরেই তিনি শরীর দিয়ে ধাক্কাতে শুরু করেন মেসিকে। হঠাৎ এ আক্রমণের পাল্টা জবাব দেননি মেসি। দুই হাত তুলে চিলি অধিনায়কের প্রতিটি ধাক্কায় পিছিয়েছেন দু-এক পা করে। এর মধ্যে সবচেয়ে অবিশ্বাস্য কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন রেফারি মারিও ডিয়াজ দে ভিভার। ছুটে এসে সরাসরি লাল কার্ড দেখালেন দুজনকেই!

কিন্তু মেসিকে লাল কার্ড দেয়ার ঘটনাটি পুরোটাই বিতর্কিত। যেখানে ভিডিও রিপ্লেতে দেখা গেছে, লাল কার্ড পাওয়ার মতো অপরাধই করেননি আর্জেন্টাইন তারকা। বড়জোর হলুদ কার্ড দেখানো যেত। কিন্তু রেফারি কী ভেবেছিলেন কে জানে!

৩২ বছর বয়সী মেসি পরের কোপা আমেরিকায় খেলবেন কি না, তা তোলা রইল সময়ের হাতে। আপাতত এটুকু বলা যায় যে, রেফারির কারণে কোপায় মেসির সবশেষ স্মৃতিটা হয়ে রইল বিতর্কিত, বিষাদমাখা। ‘লঘু পাপে গুরু দণ্ড’ পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে এ কিংবদন্তিকে।

এরপর ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানও বয়কট করেছেন মেসি। ভয়াবহ অভিযোগ করে বসলেন টুর্নামেন্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। মেসি বলেন, ‘এবারের কোপায় আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। আমরা ফাইনালে যেতে পারতাম, অন্যায়ভাবে আটকে দেয়া হয়েছে। এই দুর্নীতিতে আমরা অংশগ্রহণ করতে চাই না বলেই পদক নিতে যাইনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুর্নীতি এবং বাজে রেফারিংয়ের কারণে ফুটবল ভক্তরা বঞ্চিত হল সুন্দর খেলা উপভোগ করা থেকে। এরইসঙ্গে ফুটবলকেও তারা ধ্বংস করার চেষ্টাই করছে।’

নিজের লাল কার্ড পাওয়া প্রসঙ্গে মেসি বলেন, ‘আগের ম্যাচে সত্য কথা বলার জন্যই এটা আমার জন্যে বরাদ্দ ছিল।’  ‘এ ধরনের দুর্নীতির অংশ আমরা হতে চাই না।’ যদিও কোপা আমেরিকার তৃতীয় স্থান নির্ধারণী এ ম্যাচে চিলির বিপক্ষে ২-১ গোলে জয় পায় আর্জেন্টিনা।

এদিকে, স্বাগতিক হওয়াতে ব্রাজিলকে খুব বেশি সুবিধা দেয়া হয়েছে বলে মনে করেন মেসি। তিনি আরও বলেছেন, ‘বলতে গেলে পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই ছিল শ্রদ্ধাহীনতা। খারাপ লাগলেও বলতে হচ্ছে- এটা দুর্নীতি, এই রেফারি সব ফুটবলটাকে উপভোগ করতে দেয়নি। তারা তা ধ্বংস করেছে।’

সেমিফাইনালেও ভিডিও অ্যাসিসটেন্ট রেফারি নিয়ে সমালোচনা ছিল মেসির। ফাইনালের ম্যাচ নিয়ে তাই সন্দেহ প্রকাশ করলেন মেসি, ‘আশা করবো ফাইনালে ভিডিও রেফারি আর মূল রেফারির যাতে কোনও ভূমিকা না থাকে। যাতে করে পেরু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। তবে আমার মনে হচ্ছে সেটাও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।’

সেমিফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে দুটি স্পষ্ট রিভিউ নেওয়া হয়নি বলে দাবি আর্জেন্টিনার। এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানানোর কথা বলেছে তারা। আবার তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচের পর লাল কার্ডের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মেসি। অথচ ম্যাচটায় ফাউলের ঘটনা ঘটেছে ৩৭টি, বিপরীতে হলুদ কার্ড বের হয়েছে ৬টি।

আর্জেন্টিনা টিম ম্যানেজমেন্ট জানায়, ‘আপনারা দেখেছেন কী হয়েছে। হলুদ কার্ডেই তা যথেষ্ট হতে পারতো। তবে আশার কথা ১০ জনের দল নিয়েও ম্যাচটা জেতা গেছে।’

এনএস/