কিছু ওসি-ডিসি নিজেদের জমিদার মনে করেন: হাইকোর্ট
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:১৮ পিএম, ৯ জুলাই ২০১৯ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৯:২৯ পিএম, ৯ জুলাই ২০১৯ মঙ্গলবার
দেশে এমন কিছু ওসি-ডিসি আছেন, যারা নিজেদের জমিদার মনে করেন বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার হাইকোর্টে ফেনীর সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন শুনানিকালে মোয়াজ্জেমের আইনজীবীকে উদ্দেশ্যে করে বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অন্যদিকে মোয়াজ্জেমের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. আহসান উল্লাহ ও সালমা সুলতানা।
এছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. আব্বাস উদ্দিন।
আদালতকে মোয়াজ্জেমের আইনজীবী আহসান উল্লাহ বলেন, নুসরাতের যে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে, তা ওসি মোয়াজ্জেমের ফোন থেকে নয়, এক সাংবাদিক সেটি ছড়িয়েছে।
জবাবে আদালত বলেন, ওসি মোয়াজ্জেমের আগে যদি সাংবাদিকের হাতে ভিডিওটি যেত, তাহলে নুসরাত মারা যেত না।
মোয়াজ্জেমের আইনজীবী বলেন, ‘দেশে সাংবাদিকদের সংখ্যা বেশি হয়ে গেছে। ওই সাংবাদিক ওসির মোবাইল থেকে ভিডিওটি নিয়ে ছড়িয়েছে এবং তা স্বীকার করেছে। যে ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তার সাজার মাত্রা কম, অপরাধটি জামিনযোগ্য এবং তিনি অসুস্থ হওয়ার কারণে তার চিকিৎসা দরকার বলেই জামিন আবেদন করেছি।’
এসময় আদালত বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি গুরুতর। সে অপরাধে সাজা বেশি না কম তা বড় কথা নয়।’
এরপর মোয়াজ্জেমের আইনজীবী মামলার বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের ব্যক্তিগত বিষয়ে মন্তব্য করলে আদালত বলেন, ‘সাংবাদিকরা সমাজের দর্পনের মতো, ব্যারিস্টার সুমনও সমাজের দর্পন।’
তখন মোয়াজ্জেমের আইনজীবী বলেন, ‘সরকারি চাকরি যারা করেন তারাই জানেন তাদের কি কষ্ট!’
এরপর শুনানি করতে গিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতকে বলেন, ‘সরকারি অফিসার হয়ে তিনি (মোয়াজ্জেম) ভিডিও করলেন, তা ভাইরাল হলো। তাকে জামিন দিলে জনমনে কী মেসেজ যাবে?
সে অসুস্থ থাকলে জেল অথরিটি রয়েছে, তারাই তাকে চিকিৎসা করাবেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রিজনারস সেলে চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ আছে।’
পরে শুনানি শেষে ওসি মোয়াজ্জেমের জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
আই/এসি