বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার স্বাধীনতার প্রতীক: বিশ্বব্যাংক নির্বাহী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:১৫ পিএম, ১০ জুলাই ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ১২:০৬ এএম, ১১ জুলাই ২০১৯ বৃহস্পতিবার
বিশ্বব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারকে সারা বিশ্বের জন্য স্বাধীনতা ও সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে অভিহিত করেছেন।
গ্লোবাল কমিশন অন এ্যাডাপটেশন সংক্রান্ত দুই দিনব্যাপী ঢাকা সম্মেলনের ফাঁকে ক্রিস্টালিনা আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাতকালে এ কথা বলেন।
বিশ্বব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, ‘আপনার পরিবার সারা বিশ্বের জন্য স্বাধীনতা ও সংগ্রামের প্রতীক।’
বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি ছাত্রী ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর ক্যারিশমাটিক নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশে সব ধরনের উন্নয়ন বিশেষত নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষায় অগ্রগতির জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশি মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় লেখাপড়ায় এগিয়ে আছে। তারা অপেক্ষাকৃত ভাল করছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশের আরো উন্নয়নের লক্ষে বিশ্বব্যাংক আইডিএ’র মাধ্যমে সর্বোচ্চ সহায়তা অব্যহত রাখবে।
তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রতি সহায়তা অব্যাহত রাখারও আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া থেকে মানুষকে রক্ষা করতে চায়।
তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নের জন্য নৌপথে আঞ্চলিক যোগাযোগ উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে ক্রিস্টালিনা বলেন, মিয়ানমারের উচিত রোহিঙ্গাদেরকে তাদের দেশে ফেরত নিয়ে যাওয়া। কারণ, রাখাইন রাজ্য থেকে তাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে।
বৈঠককালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর পরই যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি পুনর্গঠন করেন।
এই কাজকে তিনি ‘বিরাট কাজ’ বলে অভিহিত করে আরো বলেন, কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালো রাতে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর দেশের সকল উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
দেশের সার্বিক উন্নয়নে সরকারের গৃহীত ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে এখন ব্যাপক অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশেষত নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র দূরীকরণ, শিক্ষা, কৃষি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা নিশ্চিত করা। তাঁর সরকার এ লক্ষ্যে অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যাপারে বলেন, তার সরকারের আমলে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৬০০ মেগাওয়াট থেকে বেড়ে ৪২০০ মেগাওয়াটে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু বিএনপি-জামাত সরকারের আমলে তা আবার হ্রাস পেয়ে ৩২০০ মেগাওয়াটে দাঁড়ায়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই খাতে ব্যাপক কাজ করার ফলে বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার মেগাওয়াটে।
প্রধানমন্ত্রী কৃষি খাতে ব্যাপক উন্নয়নের জন্য গবেষণা কর্মকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী দারিদ্র দূরীকরণের ব্যাপারে বরেন, তাঁর সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দারিদ্রের হার ৪২ শতাংশ থেকে ২১ শতাংশে নামিয়ে এনেছে।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজিএস বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন। বাসস
এসি