টানা দরপতনে পুঁজিবাজার
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:২২ পিএম, ১১ জুলাই ২০১৯ বৃহস্পতিবার
অব্যাহত বড় দরপতন হচ্ছে দেশের দুই শেয়ারবাজারে। বৃহস্পতিবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২২২ পয়েন্টে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৫৭ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর শরিয়াহ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৯৪ পয়েন্টে। এদিন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)তেও সবক’টি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসেই দরপতন হলো।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, এদিন সব সূচকের পতনের পাশাপাশি বাজারে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ১০৮ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার বিপরীতে কমেছে ২১৯টি। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬ টির।
এদিকে মূল্য সূচকের পতন ও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। ১১ কার্যদিবস পর বাজারে আবারও লেনদেনের পরিমাণ তিনশ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। দিনভর বাজারে ৩৫১ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪০৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ লেনদেন কমেছে ৫৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
টাকার অংকে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের। কোম্পানিটির ১৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফেডারেল ইনস্যুরেন্সের ১০ কোটি ৬৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে গ্রামীণফোন।
এছাড়া বাজারে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- রূপালী ইনস্যুরেন্স, মুন্নু সিরামিক, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, এশিয়ার টাইগার সন্ধানী লাইফ গ্রোথ ফান্ড, রানার অটোমোবাইল, সিঙ্গার বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল টিউবস।
অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৯৭২ পয়েন্টে। বাজারে হাত বদল হওয়া ২৬৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৬টির, কমেছে ১৭৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪টির দাম। লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ২২ লাখ টাকা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজাটে শেয়ারবাজারের জন্য বেশকিছু প্রণোদনা দেয়া হলেও বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকটে তা খুব একটা কাজ করছে না। এর সঙ্গে সম্প্রতি গ্রামীণফোন ও পিপলস লিজিংয়ের বিষয়ে খারাপ সংবাদ এসেছে। ফলে চতুর্মুখী প্রভাবে শেয়ারবাজারে টানা দরপত্র হচ্ছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মো. রকিবুর রহমান বলেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও তারল্য সংকটের কারণে বাজারে দরপতন হচ্ছে। বাজেটে শেয়ারবাজারের জন্য বেশি কিছু প্রণোদনা দেওয়া হলেও তারল্য বাড়েনি। বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট কেটে শেয়ারবাজার ভালো হতে সময় লাগবে।
এদিকে টানা দরপতনে বিক্ষোভ করেছে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এ বিক্ষোভ করে। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত এ বিক্ষোভ থেকে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি জানান।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান উর রশিদ চৌধুরী বলেন, বিএসইসির এই চেয়ারম্যানকে দায়িত্বে রেখে শেয়ারবাজার ভালো করা যাবে না। আমরা বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চায়।
তিনি বলেন, দরপতনের প্রতিবাদে আমরা রোজার ঈদের আগেও মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ করেছি। প্রতীকী গণঅশন করছি। শেয়ারবাজারের জন্য বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরেছে। কিন্তু পতন ঠেকাতে কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা যে দাবিগুলো জানিয়েছি তা বাস্তবায়ন করতে হবে। না হলে লাগাতার কঠোর আন্দোলন করতে বাধ্য হবো।
আরকে//