ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী মালয়েশিয়ান ব্যবসায়ীরা

শেখ আরিফুজ্জামান, মালয়েশিয়া থেকে

প্রকাশিত : ০৯:৫৩ পিএম, ১১ জুলাই ২০১৯ বৃহস্পতিবার

বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়নে অদম্য অগ্রযাত্রার চিত্র ফুটে ওঠেছে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত শোকেস বাংলাদেশ গো-গ্লোবাল সম্মেলনের মাধ্যমে। এ সময় বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মালয়েশিয়ান ব্যবসায়ীরা। তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

বৃহস্পতিবার ১১ জুলাই কুয়ালালামপুর রয়েল চোলান হোটেলের বলরুমে দিনব্যাপী গো-গ্লোবাল সম্মেলনে বাংলাদেশের উন্নয়নের এই চিত্র তুলে ধরা হয়।

সম্মেলনে মালয়েশিয়ার আড়াই শতাধিক শিল্প বিনিয়োগকারীদেরকে বাংলাদেশের উন্নত সড়ক যোগাযোগ, বিমান যোগাযোগ, সমুদ্রবন্দর ও গভীর সমুদ্রবন্দর, মহাকাশে বংঙ্গবন্ধু ১ স্যাটেলাইট এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট দেখানো হয়েছে। এছাড়াও তাদেরকে দেখানো হয়েছে এশিয়ার যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ব্যবসা করার খরচ কত কম।

দেখা যায়, যেখানে কুয়ালালামপুরে ব্যবস্থাপনা খরচ ৩৪৫ মার্কিন ডলার সেখানে বাংলাদেশে মাত্র ১১ মার্কিন ডলার।  বাংলাদেশে একজন কর্মীর বেতন যেখানে ১১০ মার্কিন ডলার সেখানে চীনে ৩৪৫ মার্কিন ডলার।  কীভাবে বাংলাদেশ পণ্য ডিউটি ফ্রি, কোটা ফ্রি সুবিধা নিয়ে পৌঁছে গেছে ইউরোপ ও বড় বাজারগুলোতে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত মালয়েশিয়ার ডেপুটি ইন্টা: ট্রেড মিনিস্টার অং কিয়াং মিং বাংলাদেশের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ আর পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মডেল। বর্তমান নেতৃত্ব, সরকারে দূরদর্শী পরিকল্পনায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার অ্যাক্টিং হাইকমিশনার আমির ফরিদ আবু হাসান বাংলাদেশে তার দেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশের শিল্পমন্ত্রী টিপু মুন্সী এমপি প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের দ্রুতবর্ধনশীল খাতগুলোতে মালয়েশিয়াকে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান।

টিপু মন্সী বলেন, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রকৃতিগতভাবেই সুসম্পর্ক বজায় আছে। বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার হলে দুই দেশেরই উন্নয়ন হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দেশব্যাপী ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করেছে সরকার। ইতোমধ্যে ২২টি অঞ্চলের কাজ শুরু হয়েছে। যার মধ্যে সরকারিভাবে ১৯টি এবং বেসরকারিভাবে তিনটি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ব্যবসার জন্য একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্বাচন করে নেয়ার সুযোগ রয়েছে মালয়েশিয়ার জন্য।

প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, মালয়েশিয়া বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত বন্ধু রাষ্ট্র ও ব্যবসায়িক পার্টনার। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে মালয়েশিয়া বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে আসছে। দেশটি বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির বড় বাজার। বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞ।

মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ বিরাজ করছে। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য দুই বিলিয়ন ডলার।  মালয়েশিয়ার বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে লাভবান হতে পারেন। বাংলাদেশ সরকার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণীয় সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে।

সম্মলনে আরও বক্তব্য রাখেন বায়রা সভাপতি বেনজীর আহমেদ এমপি, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিএমসিসিআই) সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, শোকেস বাংলাদেশের অর্গানাইজার কমিটির চেয়ারম্যান মো. আলমগীর জলিল প্রমুখ।

সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মালয়েশিয়ার শিল্প উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী, ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা মতবিনিময় করেন। অর্থনীতিবিদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ৭০ জন কর্মকর্তা মালয়েশিয়ার এ সম্মেলনে অংশ নেন। মালয়েশিয়ার প্রায় তিন শতাধিক বিনিয়োগকারী সম্মেলনে উপস্থিত রয়েছেন।

এসি