জুম’আর দিনের আমল
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৫৬ এএম, ১২ জুলাই ২০১৯ শুক্রবার
জুমার দিন যোহরের নামাযের পরিবর্তে দুই রাকাআত জুমআর নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানদের উপর ফরজ। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যারা পড়েন না তারাও জুমার নামাজ আদায় করেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না জুম’আর দিনের আমলগুলো কি?
জুমা’আর দিনে মুসলমানের জন্য রয়েছে বেশ কিছু আমল। যেমন ধরুন- যে ব্যক্তি গোসল করে পূর্বাহ্ণে প্রথম ভাগে মসজিদে গমন করে, পায়ে হেঁটে মসজিদে যায় (অর্থাৎ কোনো কিছুতে আরোহণ করে নয়), ইমামের খুব কাছাকাছি গিয়ে বসে, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, কোনো কিছু নিয়ে খেল তামাশা করে না, সেই ব্যক্তির প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য রয়েছে বছরব্যাপী রোজা পালন এবং সারা বছর রাত জেগে ইবাদত করার সমতুল্য সওয়াব।
জুম’আর নামাজের সময় অর্থাৎ জুম’আর দিন যোহরের নামাযের পরিবর্তে দুই রাকাআত জুমআর নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানদের উপর ফরজ। এর ওয়াক্ত যোহরের ওয়াক্তের সময়। জুম্মার দিন দুপুরে গোসল করে পরিষ্কার পোষাক পরিধান করে আযানের সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে উপস্থিত হয়ে জুম্মার নামাজ আদায় করা উত্তম।
১। পবিত্র হতে গোসল করা : (বুখারি ৮৫০/৮৫১, মুসলিম ১৮২৫, তিরমিযী ৪৯২, নাসাই ১৩৮০)।
- বুখারি ৮৫০– আবূল ইয়ামান (রহঃ)– আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসূল (স:) কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যাক্তি জুম্মার নামাযে আসবে সে যেন গোসল করে আসে।’
- বুখারি ৮৫১– আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ)- আবূ সায়ীদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (স:) বলেছেন, ‘প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্কের জন্য জুম্মার দিন গোসল করা কর্তব্য।’
- মুসলিম ১৮২৫– কুতায়বা ইবনু যাঈদ ও ইবনু রুমহ (রহঃ)- আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ (স:) একবার মিম্বরে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘তোমাদের কেউ জুম’আয় এলে সে যেন গোসল করে নেয়।’
- নাসাই ১৩৮০– আবূল আশআস (রহঃ)- নামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (স:) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুম’আর দিন অযু করে তা তার জন্য যথেষ্ট এবং তা উত্তম কাজ; আর যে ব্যক্তি গোসল করে তবে তা পরমোত্তম কাজ।’
২। সুগন্ধি/তেল ব্যবহার করা (বুখারি ৮৩৬/৮৩৯, মুসলিম ১৮৩৭)।
৩। জুমু’আর সালাতে শীঘ্র উপস্থিত হওয়া (বুখারি ৮৮২, মুসলিম ১৮৪১, তিরমিযী ৪৯৯)।
৪। পায়ে হেঁটে মাসজিদে যাওয়া (বুখারি ৮৬১/৮৬২, তিরমিজি ৪৯৬)।
৫। ২ রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ এর নামাজ পড়া (মুসলিম ১৮৯৭, তিরমিযী ৫১০)।
৬। মনোযোগ সহকারে খুত্বা শোনা (বুখারি ৮৮৭, মুসলিম ১৮৪২, ১৮৬৫, তিরমিযী ৫১২)।
৭। দু’আ কবুলের মুহুর্ত অন্বেষণ (বুখারি ৮৮৮, মুসলিম ১৮৪৭, তিরমিযী ৪৮৯, আবু দাউদ ১০৪৮)।
- তিরমিযী ৪৮৯ – আবদুল্লাহ ইবনুল সাববাহ আল-হাশিমী আল-আত্তার (রহঃ)- আনাস ইবনু মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ জুমাবারের যে মুহূর্তটিতে দু’আ কবূলের আশা করা যায়, তোমার সে মুহূর্তটিকে বাদ আসর সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়টিতে তালাশ কর।’
- তিরমিযী ৪৯০ – যিয়াদ ইবনু আয়্যূব আল-বাগদাদী (রহঃ)- আমর ইবনু আওফ আল-মুযানী থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ জুম’আর দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে। কোন বান্দা যদি সেই মুহূর্তে আল্লাহর কাছে কিছু দু’আ করে, তবে অবশ্যই তিনি তার দু’আ বাস্তবায়িত করেন। সাহাবীগণ আরয করলেন : হে আল্লাহর রাসূল! কোনটি এই মুহূর্ত? তিনি বললেনঃ জুমুআর ইকামতে সালাত থেকে নিয়ে তা শেষ হওয়া পর্যন্ত।
৮। সূরাহ কাহফ তিলাওয়াত (হাকিম ২/৩৯৯,বায়হাকি ৩/২৪৯)।
মুসতাদারেক হাকিম ২/৩৯৯, বায়হাকী ৩/২৪৯, ফয়জুল ক্বাদীর ৬/১৯৮ : আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন, ‘রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ পড়বে তার জন্য এক জুমা থেকে আরেক জুমা পর্যন্ত আলো বিচ্ছুরিত হবে।’
আত তারগীব ওয়া তারহীব ১/২৯৮ : হযরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শুক্রবারের দিন সূরা কাহফ পাঠ করবে তার পা থেকে আকাশের উচ্চতা পর্যন্ত নূর হয়ে যাবে, যা কেয়ামতের দিন আলো দিবে এবং বিগত জুমা থেকে এ জুমা পর্যন্ত তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।’
এসএ/