যমুনার ভাঙ্গনে চৌহালীতে বিলীনের পথে ৩ গ্রাম
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৭:৫১ পিএম, ১২ জুলাই ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৭:৫৫ পিএম, ১২ জুলাই ২০১৯ শুক্রবার
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় নদী ভাঙ্গনে বোয়ালকান্দি, মহেশপুর ও বারবালা গ্রাম এখন অনেকটাই বিলীনের পথে। যমুনার অব্যাহত ভাঙ্গন থেকে রেহাই পাচ্ছে না বাকি গ্রামগুলো। এ নিয়ে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ৫’শতাধিক ঘর-বাড়ি,আবাদী জমি বিলীন হয়েছে।বোয়ালকান্দি, মহেশপুর ও বারবালা এসব গ্রামের ৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাখিল মাদ্রাসাসহ ৫’শতাধিক ঘরবাড়ি রয়েছে যমুনার গ্রাসে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। ক্ষোভ, হতাশা ও নিরুপায় মানুষগুলো বর্ষায় বিপদে পড়েছেন।
এ অবস্থায় তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম সরেজমিনে ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
বোয়ালকান্দি, মহেশপুর ও বারবালা গ্রামে যমুনায় পানি বৃদ্ধির সাথে-সাথে নদীতে তীব্র ঘুর্নাবর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রতি মুহূর্তেই ভাঙ্গছে গ্রামগুলো। মুহুর্তের মধ্যেই বিলীন হচ্ছে ঘর-বাড়ি, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ বিস্তৃন্ন এলাকার ফসলের মাঠ। সর্বশান্ত হওয়া এ মানুষগুলো যমুনার ভাঙ্গনের কাছে অসহায় হয়ে এখন খুঁজে ফিরছে নতুন আশ্রয়।
সরেজমিনে শুক্রবার সকালে বোয়ালকান্দি গিয়ে দেখা যায় গ্রামের আজমত আলী মেম্বার, বৃদ্ধ খলিলুর রহমান, আব্দুল বারেক, হাই মোল্লার স্ত্রী লাইলী খাতুন, মৃত. আমজাদ আলীর স্ত্রী বৃদ্ধ হাজেরা খাতুন ও মতি প্রামানিকের স্ত্রী হাজরা বেওয়া ভাঙ্গন কবলিত ঘর-বাড়ি, গাছপালা ও আসবাবপত্র স্থানান্তরে ব্যস্ত। তারা জানান, বর্তমানে যেভাবে সব বিলীন হচ্ছে এমন ভাঙ্গন তারা দেখেননি। এখন কোথায় তাদের যাওয়ার কোন ঠিকানা নেই।
এদিকে আর মাস খানেক পরেই এই এলাকার জমিতে থাকা আউশ ধান, পাট, তিল তলিয়ে যাওয়া ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। কৃষক আনিসুর রহমান জানান, এবার ধানের ফলন বেশ ভাল হয়েছিল। কিন্তু যমুনার ভাঙ্গনে সব শেষ হয়েছে।
বর্তমানে ভাঙ্গন তীব্রতর হবার কারণে রেহাই মৌশা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি মাত্র ৫০ গজ দুরে অবস্থান করছে। পাশেই রয়েছে বোয়ালকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোনাবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বোয়ালকান্দি দাখিল মাদ্রাসাসহ আরও ৫ শতাধিক ঘর-বাড়ি। যা রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ দাবি জানান স্থানীয়রা।
শুক্রবার দুপুরে এ এলাকা পরিদর্শন করেন তদারকির করেন টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। তিনি জানান, আপাতত ভাঙ্গন ঠেকাতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার মাধ্যমে প্রাথমিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এছাড়া আগামীতে টাঙ্গাইল ও চৌহালীকে স্থায়ীভাবে রক্ষায় ১ হাজার ৯৭০ কোটি টাকায় কাজ বাস্তবায়িত হলে এলাকার মানুষের নদী নিয়ে আর আতংকে থাককে হবে না।
এমএস/