ভারতীয় দলে ভাঙনের সুর!
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৫০ পিএম, ১৩ জুলাই ২০১৯ শনিবার
প্রথম সেমিতে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে দ্বাদশ বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়ে রীতিমত জ্বলেপুড়ে মরছে ভারত। হারের এ জ্বালা বয়ে বেড়াচ্ছেন কোহলিদের সমর্থকরাও। আর এরই মাঝে ভারতীয় দলে শোনা যাচ্ছে ভাঙনের খবর। শুধু তাই নয়, অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও ওপেনার রোহিত শর্মার সম্পর্কেও নাকি ফাটল ধরেছে। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
সে সব প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বকাপ থেকে দুঃখজনকভাবে বিদায়ের পর থেকেই টিম ইন্ডিয়ার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বগুলো প্রকাশ পেতে থাকে। কোহলি ও রোহিত শর্মার সম্পর্কে ভাঙন দেখা দেয়। দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যায় দল। এর এক দলে রয়েছেন অধিনায়ক কোহলি নিজে, অন্য দলে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মা।
দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমনিউজের খবরে বলা হয়, ভারতের ক্রিকেট দলে এখন দুটি গ্রুপ উদ্ভব ঘটেছে। যার একটির নেতৃত্বে আছেন কোহলি, অন্যটিতে রোহিত শর্মা। সংবাদমাধ্যমটি এসময় কোহলিদের সাবেক কোচ অনিল কুম্বলের পদত্যাগের বিষয়টি সামনে তুলে আনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে কুম্বলে পদত্যাগের সময় জানিয়েছিলেন, তাদের মাঝে ভালো জুটি গড়ে উঠুক কোহলি তা চাইতেন না। এছাড়া দলের রুটিন নিয়ে কোহলির আপত্তি ছিল। ফলে কোহলির সঙ্গে মতের মিল না হওয়ায় কোচ পদ থেকে সরে যেতে হয়েছিল অনিল কুম্বলেকে। যদিও এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন দলটির বর্তমান অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
আরেক সংবাদমাধ্যম ‘জাগরণ’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হেরে যাওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ কোচ রবি শাস্ত্রী ও কোহলির একতরফা চিন্তা। যা তারা দলের উপর চাপিয়ে দিয়ে থাকে। ভয়ে এর বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পায় না কেউই। কারণ, সবাই জানে, বিরাট কোহলি সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক নিযুক্ত বিসিসিআই প্রধান বিনোদ রাইয়ের পছন্দের লোক। কোহলির সঙ্গে তার মতের খুব একটা পার্থক্য নেই। আর বিসিসিআইয়ের বাকি তিন কর্মকর্তাদের নাকি দলের ইস্যু নিয়ে কথা বলার পর্যাপ্ত ক্ষমতাই নেই।
এমএসকে প্রসাদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটিও শাস্ত্রী ও কোহলিকে কোনো ব্যাপারে থামাতে পারছেন না। আর এসব কারণেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে হারের পর কোহলির সঙ্গে মতের মিল না হওয়ায় কোচ পদ থেকে সরে যেতে হয়েছিল অনিলকে (কুম্বলে)।
এমনকি খেলোয়াড় নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, দল এখন দুটি গ্রুপে বিভক্ত। একটি সহকারী অধিনায়ক রোহিতের নিয়ন্ত্রণে, অন্যটি অধিনায়ক বিরাটের অধীনে। তবে এ বিরোধ এখনো সেভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেনি।
বিশ্বকাপে খেলার সময় এক সাংবাদিককে ভারতীয় দলের এক ক্রিকেটার বলেন, ‘রাহুল যত খারাপই খেলুক, তবু সে দলে ফিরবেই। ওপেনিংয়ে সুযোগ থাকলে তাকে সেখানে খেলানো হবে, চারে সুযোগ থাকলে সেখানেও জায়গা হবে। আর যদি কোনো সুযোগই না থাকে, তাহলেও ১৫ সদস্যের দলে থাকবে। যদি কেউ চোট পায় কিংবা বাজে পারফর্ম করে তাহলে তাকে (রাহুল) একাদশে ফেরানো হবে।’
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শুধু তাই নয়- কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহালের মধ্যে যে স্পিনারই বাজে পারফর্ম করুক না কেন, একাদশ থেকে বাদ পড়তে হয় কুলদীপকে।
কোচ ও অধিনায়কের সঙ্গে বাকি ক্রিকেটারদের সমস্যার কথা বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়, টিম ইন্ডিয়া খেলোয়াড়দের বেশির ভাগই চায় কোচ ও অধিনায়কের প্রস্থান। এমনকি দলের এক ক্রিকেটার প্রশ্নও করেন, ‘তারা কবে যাবে?’ অর্থাৎ কোচ ও অধিনায়ক কবে পদত্যাগ করবেন।
প্রতিবেদনটির শেষের দিকে বলা হয়, দলে এসব সমস্যা ও খেলোয়াড়দের বনিবনা না হওয়ার কারণে বিশ্বকাপে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি ভারত। আর এর জন্য কোচ রবি শাস্ত্রী ও কোহলিই দায়ী বলে উল্লেখ করা হয়।
এনএস/আরকে