ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

কেমন ছিল ইংল্যান্ডের আগের তিন ফাইনাল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:২৫ পিএম, ১৪ জুলাই ২০১৯ রবিবার

১৯৭৯, ৮৭ আর সবশেষ ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের পঞ্চম আসরে ফাইনালের টিকিট পেয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু তিনবারই পরাজয়ের তীক্ততা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ইংলিশদের।

দীর্ঘ ২৭ বছর পর দলটি আবারো ফাইনালে উঠেছে। ফেভারিটের তকমা নিয়েই বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে স্বাগতিক দলটি। সফলও হয়েছে।

তাই ক্রিকেটের অভিভাবক দেশটির এবার এবার শিরোপা ঘরে তোলার পালা। কিন্তু পারবে তো?

রোববার লর্ডসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসরের ফাইনালে মাঠে নামছে দলটি। ফাইনাল ম্যাচ মাঠে গড়ার আগে দেখে নেয়া যাক কেমন ছিল ইংলিশদের আগের তিন ফাইনাল।

২৩ জুন, ১৯৭৯

ওয়েস্ট উইন্ডিজ-ইংল্যান্ড, লন্ডন

১৯৭৫ সালে প্রথম বিশ্বকাপের মতো এ আসরও জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে শুরু হয়। আসরে ফাইনালে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের প্রতিপক্ষ হয়ে আসে আজকের স্বাগতিকরা।

লন্ডনের লর্ডসে ম্যাচটি শুরু হয়। কিন্তু দর্শকদের হতাশায় ডুবিয়ে টানা দ্বিতীয়বার শিরোপা ঘরে তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল করতে পারেনি ক্যারিবিয়নরা। মাত্র ৯৯ রানেই হারিয়ে ফেলে মূল্যবান ৪টি উইকেট।

কিন্তু পঞ্চম উইকেটে ভিভ রিচার্ডস ও কলিস কিংয়ের অনবদ্য ১৩৯ রানের পার্টনারশিপে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় উইন্ডিজ।

শেষ পর্যন্ত  ভিভ রিচার্ডসের অপরাজিত ১৩৮ ও কলিস কিংয়ের ৮৬ রানে ভর করে ৬০ ওভারে তারা করে ৯ উইকেটে ২৮৬ রান তোলে ক্যারিবিয়নরা।

জবাবে মাইক ব্রিয়ারলি (৬৪) ও জিওফ বয়কটের (৫৭) উদ্বোধনী জুটিতে ১২৯ রান তুলে জয়ের পথেই ছিল ইংল্যান্ড। ১৮৩ রানে চতুর্থ উইকেট পতনের পর ভেঙে পড়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ। জোড়ায় জোড়ায় উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রানেই মুখ থুবড়ে পড়ে তারা।

উইন্ডিজ ম্যাচ জেতে ৯২ রানে। জোয়েল গার্নার নেন ৩৮ রানে ৫ উইকেট। তবে ম্যাচসেরা হন রিচার্ডস। এ আসরে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি।

৮ নভেম্বর, ১৯৮৭

অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড, কলকাতা

প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের আসর বসেছিল ইংল্যান্ডের বাইরে। আয়োজক ছিল এশিয়ার দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তান। ততোদিনে ওয়ানডে ক্রিকেটের ব্যাপ্তি ৬০ ওভার থেকে কমে হয় ৫০ ওভার। কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে ফাইনালে টস জিতে আগে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া।

ডেভিড বুনের ৭৫ ও মাইক ভেলেট্টার অপরাজিত ৪৫ রানে ভর করে অজিরা তোলে ৫ উইকেটে ২৫৩। জবাব দিতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলে আউট হয়ে ফেরেন টিম রবিনসন। বিল অ্যাথে (৫৮), মাইক গ্যাটিং (৪১) ও অ্যালান ল্যাম্বের (৪৫) রানে জয়ের পাল্লা ভারী ছিল ইংলিশদের পক্ষেই।

জিততে শেষ ওভারে তাদের দরকার ছিল ১৭ রান। কিন্তু ৮ উইকেটে ২৪৬ রানে আটকে যায় ইংল্যান্ড। ৭ রানে ফাইনাল জিতে অস্ট্রেলিয়ার ৫ শিরোপার অভিষেক ঘটান অ্যালান বোর্ডার। ম্যাচসেরা হন ডেভিড বুন।

২৫ মার্চ, ১৯৯২

পাকিস্তান-ইংল্যান্ড, মেলবোর্ন

ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া নিজ দেশে শিরোপা ধরে রাখার সুযোগ পায়। সঙ্গে আয়োজক ছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু আয়োজকদের কেউই ছিল না শিরোপা লড়াইয়ে। বিশ্বকাপের পঞ্চম আসরের আয়োজক ছিল অস্ট্রেলিয়া। সেবারই প্রথম রঙিন পোশাকে হয় বিশ্বকাপ।

টসজয়ী পাকিস্তান আগে ব্যাট করে অধিনায়ক ইমরান খানের (৭২), জাভেদ মিয়াদাঁদের (৫৮), ইনজামাম-উল-হকের (৪২) এবং ওয়াসিম আকরামের (৩৩) রানে ৬ উইকেটে ২৪৯ রানের পুঁজি পায়। ইংল্যান্ড ইনিংসের শুরুতেই ইয়ান বোথামকে (০) ফেরান ওয়াসিম।

৬৯ রানে ৪ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ৩৫তম ওভারে আবার বোলিংয়ে আসেন ওয়াসিম। পরপর দুই বলে অ্যালান ল্যাম্ব (৩১) ও ক্রিস লুইসকে (০) ফেরান তিনি। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ইংল্যান্ড। অলআউট ২২৭ রানে। পাকিস্তান ২২ রানে ম্যাচ জিতে প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপার স্বাদ পায়।

তিনবার ফাইনালে উঠেও শিরোপা ঘরে তুলতে না পারার আক্ষেপ অবশ্য ফাইনালের আগে জানিয়েছেন ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মর্গান। বলেছেন, ট্রফি জিততে আমরা মরিয়া। যে কোনোভাবেই হোক আমাদের জয় পেতেই হবে। এর বিকল্প কিছু নেই।

অপরদিকে, গতবার ফাইনালে উঠেও শিরোপা জিততে পারেনি প্রথমবার ফাইনালে ওঠা নিউজিল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে পরাজয়ের তীক্ততা নিয়ে রেব মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।

এবারের আসরে দারুন সূচনা দিয়ে শুরু করা নিউজিল্যান্ড সেমি ফাইনালে ওঠার আগে পরপর দুই ম্যাচে হেরে যাওয়ায় বড় ধাক্কা খেলেও, ফাইনালযুদ্ধে ভারতকে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করে ফাইনালের টিকিট নিশ্চত করে উইলিয়ামসনরা। তারাও চাইবে এবার শিরোপা কোনভাবেই যাতে হাতছাড়া না হয়।

তবে গোটা আসরের পারফর্মেন্স পর্যালোচনা করলে ট্রফির লড়াইয়ে স্বাগতিকরাই নিঃসন্দেহে ফেভারিট। সবশেষে লিগপর্বে উইলিয়ামসনদের  বিপক্ষে জিতে তাদের আগে সেমি নিশ্চিত করেছিল মর্গানরা।

কিন্তু খেলাটা যখন বিশ্বকাপের ফাইনাল। তখন ফেভারিটের দৌঁড়ে উভয়ে সমানভাবেই বলতে হবে। কেননা, কোন ম্যাচে কে জ্বলে উঠবে বলা ‍মুশকিল।

এখন বল মাঠে গড়ার অপেক্ষা। বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় লন্ডনের লর্ডসে ম্যাচটি শুরু হবে।

আই/