ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

ফাইনালের ওভার-থ্রো নিয়ে তুমুল বিতর্ক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:১৮ পিএম, ১৫ জুলাই ২০১৯ সোমবার

বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসরে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্ত আর নাটকীয়তা যতটা দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব, এর আগে কখনো দেখেনি।

আসরের শুরু থেকে আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক ছিল উল্লেখ করার মতো। লিগপর্ব থেকে শুরু হয়ে সেমিফাইনাল পর্যন্ত গড়িয়েছে। কিন্তু ফাইনালের মতো ম্যাচে এমন অবস্থা দেখতে চায়নি ক্রিকেটপ্রেমীরা।

কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। ফাইনাল ম্যাচেও এমন বিতর্কে জড়ায় আম্পায়ার। প্রশ্নের মুখে পড়ে আইসিসির অদ্ভুত নিয়ম। যা ম্যাচের ফল নির্ধারণে ভূমিকা রাখে।

ফলে বিতর্কের কেন্দ্র এখন ফাইনাল ম্যাচের ওভার-থ্রো। ম্যাচের ৪৯ তম ওভারে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ১৫ রান। স্ট্রাইকে বেন স্টোকস ও আদিল রশিদ। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে জয়ের ভার তখন স্টোকসের কাঁধে।

প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হওয়ার মতো বল না পাওয়ায় কোনও রান না নিয়েই ক্ষান্ত থাকেন স্টোকস। তৃতীয় বলে মিড উইকেটের উপর দিয়ে বল সীমানা ছাড়া করেন তিনি।

পরের বলে আবার মিড উইকেটে ঠেলে দিয়ে দুই রান নেয়ার চেষ্টা করেন স্টোকস। ওপার থেকে বল থ্রো করেন মার্টিন গাপটিল। শেষ প্রান্তে পৌঁছাতে ড্রাইভ মারেন ইংলিশ অলরাউন্ডার স্টোকস।

বলটি তার ব্যাটে লেগে বাউন্ডারিতে চলে যায়। ব্যাট হাতে ২ আর ওভার-থ্রো তে ৪ রান মিলে ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে ৬ রান যোগ করার নির্দেশ দেন শ্রীলংকান আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা।

শেষ দু’বলে প্রয়োজন ৩ রান। পঞ্চম বলে একইভাবে দু’রান নিতে গিয়ে রান আউটের শিকার হোন আদিল রশিদ। ফলে, ইংলিশদের শিরোপা জয়ের জন্য শেষ বলে করতে হয় ২ রান। শেষ বলেও একইভাবে ২ রান নিতে গিয়ে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন মার্ক উড। ফলে, দুই বলে ২ রান করে কোনোরকম টাই করে বেঁচে যায় ইংলিশরা।

এখন প্রশ্ন হলো, ওভার-থ্রোর সৌজন্যে ৬ রান না পেলে ম্যাচ টাই হতো কি না সন্দেহ। টিভি রিপ্লেতে দেখা যাচ্ছে, চতুর্থ বলে যখন মিড উইকেট থেকে মার্টিন গাপটিল বলটি ছুঁড়ে ছিলেন, তখন নন স্ট্রাইকে থাকা আদিল রশিদ ও স্ট্রাইকে থাকা বেন স্টোকস পরস্পর ক্রসিং করেননি।

আইসিসির নিয়ম অনুসারে ওভার-থ্রোর বাউন্ডারির ক্ষেত্রে, বল ছোঁড়ার আগেই পরস্পরকে ক্রস করলেই কেবল ওভার বাউন্ডারির সঙ্গে ওই রান যোগ হবে।

সে অনুযায়ী ইংল্যান্ডের ওভার-থ্রোতে দুই রানের পরিবর্তে ১ রান, আর ওভার-থ্রোর বাউন্ডারি থেকে ৪ রান নিয়ে মোট ৫ রান যোগ হওয়ার কথা। কিন্তু আম্পায়ার তাতে পুরো ছয় রান যোগ করার নির্দেশ দেন।

যদি তাই হতো তাহলে স্টোকসদের শেষ ২ বলে করতে হতো ৪ রান। তখন, ম্যাচের ফলও অন্যরকম হতে পারত।

ইংলিশদের জয়ের নায়ক বেন স্টোকস অবশ্য এ ঘটনায় কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসন তথা নিউজিল্যান্ডের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। বলেন, এই ওভার-থ্রোর জন্য তিনি সারাজীবন নিউজিল্যান্ডের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী থাকবেন। যদিও কিউই অধিনায়ক এটাকে খেলার অংশ হিসেবেই মনে করেন বলে জানান।

ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগানতো প্রকাশ্যে বলেই ফেললেন, এটা এমন একটা বিষয়, যার জন্য আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই। নিউজিল্যান্ডের জায়গায় যদি আমরা হতাম, পরিস্থিতি কেমন হতো ভাবতেই খারাপ লাগে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ২৩ বছর পর ফাইনালে খেলার সুযোগ পেল স্বাগতিক ইংল্যান্ড। সে ম্যাচে ও সুপার ওভারের ম্যাচ টাই হওয়ায় বাউন্ডারির ব্যবধানে দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান হয় মরগানদের। বিশ্বকাপের ১২ তম চ্যাম্পিয়নের তালিকায় নাম লেখায় ইংলিশরা। 

আই/