গ্রামবাংলার ফল শরিফা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:২৭ পিএম, ১৬ জুলাই ২০১৯ মঙ্গলবার
শরিফা অত্যন্ত সুস্বাদু ও উপাদেয় ফল। গ্রামগঞ্জে এই ফল বেশি দেখা যায় তবে শহর অঞ্চলে এর চাহিদা কম। এই ফলটি দেখতে অতি সুন্দর। কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকলে সবুজাভ হলদে রংঙের হয়ে থাকে। আম কাঁঠালের মৌসুম শেষ হলেই বাজারে দেখা যায় শরিফা।
অপ্রধান এবং স্বল্পপ্রচলিত এ ফলটির গাছ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বসতবাড়ির আঙিনায় দেখা যায়। তবে বর্তমানে ফলের চাহিদা মেটাতে বাগান আকারে শরিফার চাষ শুরু হয়েছে। শীতকালে পাতা ঝরে যায় এবং বসন্তকালে নতুন পাতা গজায় ও ফুল আসে।
শরিফার ইংরেজি নাম Custard apple, sugar apple. এটি অ্যানোনেসি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Annona squamosa. পর্তুগিজ ভাষায় ফলটিকে আতা বলে। পর্তুগিজরা কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের আগে এ ফলটিকে আমাদের দেশে নিয়ে আসেন। গাছের উচ্চতা প্রায় ১০ মিটার।
শরিফা গোলাকার, ডিম্বাকার ও হৃদপিণ্ডের মতো আকারের হয়ে থাকে। সাধারণত একটি ফলের ওজন ১০০ গ্রাম থেকে ৩০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। খাবারযোগ্য শাঁস বা পাল্পের পরিমাণ ফলের মোট ওজনের প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ। শাঁসের রঙ সাদা ও ক্রিম ধরনের। শাঁস মিষ্টি ও সুস্বাদু। এতে চিনির মত মিহি দানা থাকে।
ফলের আকার ও প্রকার ভেদে কোষের সংখ্যা ভিন্ন ভিন্ন হয়। বীজ কালো, শক্ত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ বছর পর্যন্ত এর অংকুরোদগম ক্ষমতা বজায় থাকে। উঁচু জমিতে, বসতবাড়ির খোলা জায়গায় এবং অল্প ছায়াযুক্ত স্থানে শরিফা গাছ ভালো জন্মে।
শরিফার শাঁসের প্রতি ১০০ গ্রামের মধ্যে ৭০.৫ থেকে ৭৩.৩ গ্রাম পানি, ১.৬ গ্রাম আমিষ, ২৩.৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৩.১ গ্রাম আঁশ, ১৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১.০- ৪.৩১ মিলিগ্রাম লৌহ, ৮৪ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, ৪৭ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ০.৮ মিলিগ্রাম জিংক ও ০.৬৪ মিলিগ্রাম ম্যাঙ্গানিজ এবং ১০৪ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়।
এছাড়াও এতে অল্প পরিমাণে থায়ামিন, রাইবোফ্লাবিন, নায়াসিন, ভিটামিন সি পাওয়া যায়। শরিফা দেহে রক্ত ও মাংস বৃদ্ধি করে এবং বাত ও পিত্তনাশক রোগে উপকারে আসে। আয়ুর্বেদী চিকিৎসা শাস্ত্রে ওষুধ হিসেবে এর মূল্য অনেক।
এএইচ/কে আই