ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

আদালতে বিচারকের প্রশ্নে যে উত্তর দেন মিন্নি 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২৫ পিএম, ১৭ জুলাই ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ১১:৫৯ পিএম, ১৭ জুলাই ২০১৯ বুধবার

বরগুনায় বহুল আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় অধিকতর তদন্তের জন্য মামলার এক নম্বর স্বাক্ষী ও হত্যকান্ডের প্রত্যক্ষদর্শী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে দিয়েছে আদালত। এসময় আদালতের বিচারকের বেশ কয়েকটি প্রশ্নের মুখোমুখি হন মিন্নি। এর একটির জবাবে নিজেকে নিরাপরাধ দাবি করে স্বামীর খুনীদের ফাঁসি চান মিন্নি। 

বুধবার (১৭ জুলাই) বিকেল ৩টায় বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। সে আবেদনের প্রেক্ষিতে মিন্নির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক মোহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম গাজী। 

এসময় আদালতে উপস্থিত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত কৌশলী অ্যাড. সঞ্জিব দাস বলেন, আদালতের কাছে পুলিশ রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক মিন্নির পক্ষে কোন আইনজীবী না থাকায় মিন্নিকেই কথা বলার সুযোগ দেন। 

আদালতের বিচারক মিন্নিকে প্রশ্ন করেন, এই মামলায় আপনার কোন কৌশলী না থাকায় আপনার বক্তব্য কি?  

এসময় মিন্নি বলেন, রিফাত শরীফ আমার স্বামী। আমি আমার স্বামী হত্যার সঙ্গে জড়িত না। আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার চাই। আমি এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত না, আমাকে ষড়যন্ত্র করে এই মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। আমি স্বামীর খুনিদের ফাঁসি চাই।

এরপর এজাহারভুক্ত আসামিদের সঙ্গে আগে থেকেই আপনার যোগাযোগ ছিলো এবং আসামি নয়ন বন্ডের সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সম্পর্ক ছিলো সে বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি? 

বিচারকের এমন প্রশ্নের জবাবে কোন কিছুই বলেননি মিন্নি, একেবারে চুপচাপ নিরুত্তর ছিলেন বলে উল্লেখ করেন আইনজীবী সঞ্জিব দাস। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শাহজাহান হোসেন বলেন, রিফাত হত্যা মামলা দেশ ব্যাপি একটি আলোচিত হত্যা মামলা। এ মামলায় মিন্নির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ায় তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এই পাঁচ দিন মামলার রহস্য উদঘাটনের জন্য আমরা তাকে পুলিশি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করবো। 

ঠিক কি কি কারণে বা কোন কোন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে মিন্নিকে এই হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হুমায়ন কবির বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে রিফাত হত্যাকান্ডের সঙ্গে মিন্নির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছি। মিন্নির সঙ্গে মামলার আসামিদের কল লিস্ট, বিভিন্ন সময় যোগাযোগ, নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নির বিয়ের বিষয় ও এজাহারভুক্ত আসামি টিকটক হৃদয়ের স্বীকারোক্তিমূলক তথ্যাদি থেকে আমাদের হাতে রয়েছে। যেগুলো হত্যাকান্ডের সঙ্গে মিন্নির সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করে।

তিনি আরও বলেন, এসব সংশ্লিষ্টতার বিষয়সহ মামলার রহস্য উদঘাটন ও অধিকতর তদন্তের স্বার্থে আমরা মিন্নিকে পুলিশি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলাম। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। 

এদিকে বহুল আলোচিত রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২ জুলাই ভোরে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এছাড়া এখন পর্যন্ত ১০ জন আসামি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় হত্যাকান্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

এনএস/আরকে