ঢাকা, শনিবার   ৩০ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১

‘আইনি সহায়তা পাওয়া মিন্নির সাংবিধানিক অধিকার’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:০১ এএম, ১৮ জুলাই ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:০৩ এএম, ১৮ জুলাই ২০১৯ বৃহস্পতিবার

বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় নিহতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মিন্নিকে গ্রেফতারের পর গতকাল বুধবার আদালতে নেয়া হলে তার পক্ষে কোনও আইনজীবী লড়তে রাজী হননি। প্রভাবশালী মহলের চাপে কোনও আইনজীবী তার পক্ষে লড়তে রাজী হননি বলে অভিযোগ মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেনের।

অবশ্য মিন্নির বাবার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান নান্টু। বলেন, মোজাম্মেল হোসেন আইনজীবী পাওয়ার বিষয়ে তাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগই করেননি।

তবে এ মামলায় আইনি সহায়তা পাওয়া মিন্নির সাংবিধানিক অধিকার বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার আইনজীবী সালমা আলী। বিবিসিকে তিনি বলেন,কোনও কারণে একজন নাগরিক আইনগত সহায়তা না পেলে তার জন্য আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।

সালমা আলী বলেন, এই বিষয়টি যে রকম আমাদের সংবিধানে আছে, সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টের অনেক জাজমেন্টে রয়েছে, তেমনি আন্তর্জাতিক আইনের অনেক ধারাতেও স্পষ্ট বর্ণিত রয়েছে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় এ রকম ক্ষেত্রে অভিযুক্ত হিসেবে একজন নারী থাকলে পরিস্থিতি আরো জটিল হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি মনে করেন, বরগুনার মতো অঞ্চলে যথেষ্ট পরিমাণ নারী আইনজীবী না থাকা এবং বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলা শহরগুলোর মতো সেখানেও আইনজীবীদের মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব ব্যাপক হওয়ায় মিন্নির জন্য আইনজীবী পাওয়ার বিষয়টি কঠিন হচ্ছে। বরগুনার মতো ছোট শহরে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকার কারণে অনেক সময় চাইলেও সাহস করে এগিয়ে আসেন না অনেক আইনজীবী।

তিনি বলেন, একজন ব্যক্তির পক্ষে আইনজীবী নিয়োজিত না থাকলে তার ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে। আর এ রকম একটি মামলার ক্ষেত্রে আয়শা সিদ্দিকার পক্ষে কোনও আইনজীবী না থাকলে তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য বা স্বচ্ছ বিচার হিসেবে গৃহীত হবে না বলে মনে করেন এই মানবাধিকার আইনজীবী।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে হত্যার ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। এই মামলার প্রধান আসামি ‘নয়ন বন্ড’ গত ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। এ মামলার তদন্তে এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া, হত্যাকাণ্ডের আগে মামলার আসামিদের কয়েকজনের সঙ্গে মিন্নির কথোপকথনের একটি কললিস্ট আদালতে উপস্থাপন করা হয়। পরে মামলার একজন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে মিন্নিকে গ্রেফতার করা হয়।