কুড়িগ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৭:০৩ পিএম, ১৯ জুলাই ২০১৯ শুক্রবার
কুড়িগ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে দেড় বছরের শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকালে এই শিশুর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৫ জনে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে বন্যার পানি নামতে শুরু করলে কুড়িগ্রামের বানবাসী মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এখনও নিজ বাড়িতে ফিরতে পারেনি বন্যা দুর্গত মানুষ।
জানা যায়, বন্যার কারণে গত ১০ দিনে ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। বানভাসী মানুষদের জন্য ত্রাণ পরিমানও অপ্রতুল। এতে বিপাকে পড়েছে স্থানীয় প্রশাসন। বন্যার ত্রান দুর্গত সকল মানুষের কাছে পৌঁছায়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ অবস্থায় বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে আগামীকাল শনিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন কুড়িগ্রাম আসছেন।
শুক্রবার সকালে পানিতে পড়ে মারা যাওয়া দেড় বছরের শিশুটির নাম সীমা খাতুন। সে উলিপুর পৌরসভার খাওনারদরগা গ্রামের ভাটিয়াপাড়ার সাদেক মিয়ার কন্যা। এ নিয়ে গত দশ দিনে পানিতে ডুবে মৃতের সংখ্যা ১৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, বন্যার ফলে ৫৭টি ইউনিয়নের ৮৯৪টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ২ লাখ পরিবারের ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়েছেন। এতে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর ফসলী জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ৫’শ কিলোমিটার রাস্তা, ৪০ কিলোমিটার ও ৪১টি ব্রিজ ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬৪ হাজার মানুষ ১৮৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। ৯ হাজার ৭৩৪টি নলকূপ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
অন্যদিকে শুক্রবার সকাল থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। ব্রহ্মপূত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৪ কমে ১০৯ সেন্টিমিটার ও নুন খাওয়া পয়েন্টে ১১ কমে গিয়ে ৮৩ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীল পানি ব্রীজ পয়েন্টে ১৭ কমে গিয়ে বিপদসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যা দুর্গতদের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ৮৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। ৫টি ওয়াটার ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়াও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও স্যালাইন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিতরণ করা হচ্ছে বলে কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. এস এম আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন। বন্যা দুর্গতদের সহযোগিতায় প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ত্রাণ বিতরণ করছেন।
জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন,‘সকল বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসন থেকে ৮’শ মেট্রিকটন জিআর চাল, ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৬ হাজার ৪২৮ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
এমএস/কেআই