ঢাকা, শনিবার   ৩০ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১

বিয়ের প্রলোভনে দীর্ঘদিন সংসার, ফেঁসে যাচ্ছেন ইউএনও!

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৭:৩৯ পিএম, ২১ জুলাই ২০১৯ রবিবার

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: আসিফ ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে ফুসলিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন সংসার করার অভিযোগ করেছেন এক নারী। নারী কেলেঙ্কারীর বিষয়ে রোববার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দ্বিতীয় দফা স্বাক্ষী দিলেন ভিকটিম ওই নারী। 

রোববার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: হারুনূর রশিদের কার্যালয়ে অভিযুক্ত ইউএনও অসিফ ইমতিয়াজ ও অভিযোগকারী ওই নারীর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

শুনানীতে ভিকটিম নারীর পক্ষে আইনজীবি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন সুনামগঞ্জ সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এড. শামছুন্নাহার বেগম শাহানা রব্বানী, এড. নানু মিয়া, এপিপি নূরে আলম সিদ্দিকী, এড. মাজহারুল ইসলাম ও এডভোকেট হিমেল। 

পরে অভিযোগকারী নারী প্রকাশ্যে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে ইউএনও আসিফ ইমতিয়াজের প্রেম পরবর্তী তাকে ফুসলিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে দীর্ঘদিন সংসার করার কথা জানান। 

ওই নারী জানান, তাকে চাকুরী দেয়ার কথা বলে আসিফ ইমতিয়াজ তার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা নেন। পরবর্তীতে ১০ লাখ টাকা ফেরৎ দিলেও বাকি টাকা এখনও দেয়নি। এসময় তাদের মধ্যে সম্পর্কের এক পর্যায়ে কাবিননামা করে দীর্ঘদিন তারা স্বামী-স্ত্রীর মতো বাসা ভাড়া নিয়ে ঢাকার মিরপুরে একটি ফ্লাটে বসবাস করতে থাকেন। এর মধ্যে হঠাৎ ওই নারীর গর্ভে সন্তান আসায় ইউএনও তাকে সন্তান নষ্ট করার কথা বলেন। 

ভিকটিম নারী আরও জানান, এমন প্রস্তাবে রাজী না হলে তাকে বিয়ে না করার জন্য হুমকি দেন ইউএনও। পরে ওই নারী জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে ইউএনও এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এ কারণে ইউএনও তার লোক দিয়ে ময়মনসিংহে ওই নারীর উপর হামলা চালায়। অন্ত:স্বত্তা অবস্থায় তিনি একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে তার প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়ে গর্ভের সন্তান নষ্ট হয় বলে জানান ওই নারী। 

এদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে ইউএনওর বিরুদ্ধে করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রথম দফা সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (স্থানীয় সরকার বিভাগ শাখা) মো: এমরান হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু ওই নারী তদন্ত কর্মকর্তার আচরণে 'তিনি প্রভাবিত হয়েছেন' মর্মে আবারও তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করেন। 

ওই আবেদনের পর সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: হারুনূর রশিদকে বিষয়টির তদন্তাভার দেয়া হয় এবং আজকে নিয়ে দ্বিতীয় দফা তদন্ত কার্যক্রম চলে।

এ ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হারুনূর রশিদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আইনজীবীসহ গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষের স্বাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। উভয়ের স্বাক্ষ্য নিয়ে তদন্তে যা সঠিকভাবে প্রমাণিত হবে সেই আলোকেই তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে। 

এনএস/আরকে