ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

চিত্র পরিচালক এখন নিরাপত্তাকর্মী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫০ এএম, ২৩ জুলাই ২০১৯ মঙ্গলবার | আপডেট: ০২:০৫ পিএম, ২৩ জুলাই ২০১৯ মঙ্গলবার

সুব্রতরঞ্জন দত্ত। একজন পরিচালক। ৬২ বছরের এই মানুষটিকে টালিউডে অনেকেই চেনেন। জনজাতিদের জীবনযাত্রা নিয়ে নির্মাণ করেছিলেন ‘প্রবাহিণী’ নামের একটি চলচ্চিত্র। ২০১৬ সালে সে সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল নন্দনে। তার পরে পথশিশু মেয়েদের জীবন নিয়ে নির্মাণ করেন ‘কলি’। যা এখনও মুক্তি পায়নি। সেই চিত্র পরিচালক এখন নিরাপত্তাকর্মী।

সুব্রতরঞ্জন দত্ত ঋত্বিক ঘটকের কাছে ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ সিনেমাতে শিক্ষানবীশ হিসেবে কাজ শুরু করেন আশির দশকে। এরপর বহু সিনেমাতে তিনি সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। এমনকি মুম্বাইয়ে শশধর মুখোপাধ্যায়ের প্রোডাকশন হাউসেও কাজ করেছেন তিনি। তা সত্ত্বেও হাতে কাজ না থাকায় মাত্র সাড়ে ছ’হাজার টাকায় নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি করছেন এই চিত্র পরিচালক।

সুব্রত বলেন, ‘সময় পেলেই নতুন চিত্রনাট্যের খসড়া তৈরি করার চেষ্টা করি। তবে সময় বার করাটাই কঠিন।’ ১২ ঘণ্টার নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেই সময় চলে যায়। তা সত্ত্বেও নতুন কাজের আশায় সারা রাত ডিউটির পরেও সকালে ছুটে যাই টালিপাড়ায়। ফিরে এসে আবারও আবাসনের গেটের সামনে রাত পাহারার কাজে যোগ দেই।’

তিনি আরও জানান, ‘স্ত্রী, মেয়েকে নিয়ে সংসার। চলতে তো হবেই। বেশ কয়েক বছর বসে রয়েছি। শেষে এই কাজেই ঢুকে গেলাম। কোনও কাজই ছোট নয়।’

 

এদিকে এক জন চিত্র পরিচালকের দিন কাটবে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করে—মানতে পারেন না অনেকেই। পরিচালক রাজা সেন বলেন, ‘সুব্রত নতুন ভাবনা নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেন। ওঁর নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করাটা একেবারেই মানা যায় না।’

 

সুব্রতর যে বাড়িতে দারোয়ানের কাজ করেন সেই বাড়ির বাসিন্দারা প্রথমে তার পরিচয় জানতেন না। তাদের কথায়, ‘সুব্রত যে চিত্র পরিচালক আমাদের আবাসনের অনেকেই তা জানেন না। খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা যে তাকে দারোয়ানের কাজ করতে হচ্ছে।’

তবে হাল ছাড়ার মানুষ নন সুব্রত। তার কথায়, ‘জীবন সিনেমার চিত্রনাট্যের মতোই গতিশীল। ভাল কাজের সুযোগ নিশ্চয়ই পাব। চেষ্টা তো চালাতেই হবে।’

সূত্র : আনন্দবাজার

এসএ/