রেনু হত্যার নেতৃত্বদানকারী কে এই হৃদয়?
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:১৮ এএম, ২৪ জুলাই ২০১৯ বুধবার
রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনু নামে এক নারীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
গত শনিবার (২০ জুলাই) সকালে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় মেয়েকে ভর্তি করানোর তথ্য জানতে স্থানীয় একটি স্কুলে যান মা তাসলিমা বেগম রেনু (৪০)। এসময় তাকে ছেলেধরা সন্দেহে প্রধান শিক্ষকের রুম থেকে টেনে বের করে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনার পর এদিন রাতেই নিহতের বোনের ছেলে নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ৪ থেকে ৫শ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনার মূল আসামি হৃদয়কে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের ভূলতা থেকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
এ ঘটনার মূল আসামি হৃদয় নিয়ে কৌতুহল রয়েছে অনেকের। অনেকেই জানতে চান কে এই হৃদয়? কি তার পরিচয়?
রেনুকে পিটিয়ে হত্যার যেসব ভিডিও এখন পর্যন্ত প্রকাশ হয়েছে, সেখানে তিন/চার তরুণকে নির্মম এই হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে। তাদের ঘিরে ছিল শত শত উৎসুক জনতা, যাদের অধিকাংশই মোবাইল ফোনে ওই দৃশ্য ধারণ করছিলেন।
ভিডিও ফুটেজে যাদের হত্যাকাণ্ড ঘটাতে দেখা গেছে, তাদের মধ্যে একজন ছিল নীল টি-শার্ট পরিহিত। ওই তরুণই রেনুকে পিটিয়ে হত্যার নেতৃত্ব দিয়েছিল। রেনু যখন বেধড়ক পিটুনি খেয়ে নিস্তেজ হয়ে স্কুল কম্পাউন্ডে পড়ে ছিল, তখনও থামেনি ওই তরুণ।
হাতে থাকা লাঠি দিয়ে রেনুর মুখে, বুকে, পেটে, হাতে ও পায়ে নির্মম ও নৃশংসভাবে পিটিয়ে যাচ্ছিল। আশপাশের লোকজনের অনেকে ‘থামো থামো, আর মের না, মরে গেছে’ এসব বলে ওই তরুণকে থামানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু, পাশবিক রূপ ধারণ করে সে তখনও রেনুকে প্রহার করে যাচ্ছিল।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, রেনু হত্যায় নেতৃত্ব দেয়া নীল-শার্ট পরিহিত ওই তরুণের নাম হৃদয়। স্কুলের পাশেই তার একটি সবজির দোকান ছিল। তবে পড়াশোনা না জানা হৃদয় উত্তর বাড্ডায় বখাটে হিসেবেই পরিচিত। মাদক সেবন ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে মারামারি-কাটাকাটি করাই ছিল হৃদয়ের কাজ।
স্কুলের উল্টো দিকেই একটি মাদ্রাসা। মাদ্রাসার পাশেই বেশ কয়েকটি পানের দোকান। তাদের মধ্যেই একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আমি তো ভেতরে ঢুকি নাই। কিন্তু, টেলিভিশনে যে ভিডিও দেখাইছে তাতে দেখলাম তিন/চারজন পিটাইয়া মারতাছে। এর মধ্যে দু’জনরে চিনি, তারা এই বাজারেরই। ওই দু’জনের একজন হৃদয়, সে স্কুলের সামনে শাক বিক্রি করত। আরেকজন মহিউদ্দিন, সে একটু সামনে সবজির দোকান নিয়া বসত। ঘটনার পর থেইকা আর ওগো দেখি নাই।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ওয়ার্ল্ড হিউম্যানিটি নামে একটি মানবাধিকার সংস্থার কর্মী মেহেদী হাসান বলেন, হৃদয় এলাকায় বখাটে হিসেবেই পরিচিত। মাদক সেবন, ইভটিজিং, মারামারি-হানাহানি করে বেড়াত সে। মাসখানেক আগে উত্তর বাড্ডা এলাকায় কথা কাটাকাটির জের ধরে একজনকে ছুরিকাঘাতও করেছিল সে।