ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

ক্লান্তি দূর করতে এড়িয়ে চলুন সহকর্মীদের!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৪৫ এএম, ২৫ জুলাই ২০১৯ বৃহস্পতিবার

কর্মব্যস্ত থেকে নিখুঁতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তো যাচ্ছেন। এরই এক মুহূর্তে মনে হচ্ছে মাথা ঠিকভাবে কাজ করছে না, শরীর ভারী ভারী লাগছে। একটু রিল্যাক্স হলে ভালই হয়। পুনরায় পূর্ণ উদ্যমে কাজে ফেরা যাবে।

যে কথা সেই কাজ। ছুটলেন অফিস ক্যান্টিন বা ক্যাফেটেরিয়ায়। কিংবা অফিসের কোন স্পেসে বসে সহকর্মীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে। উদ্দেশ্য একটাই মাথার চাপ কমিয়ে আসা।

কিন্তু এই চাপ কমানোর পদ্ধতিতেই নাকি আছে গলদ। আধুনিক গবেষণা অন্তত তাই বলছে। অফিসে কোন কারণে সমস্যা বা মনোমালিন্য হলে অন্য কোনও সহকর্মীর সঙ্গে তা শেয়ার করলে মনে হয় কষ্ট লাঘব হল! সে ধারণা নাকি একেবারেই ভুল!

আমেরিকান হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণা ও বিশ্বের মনোবিদদের বক্তব্য হচ্ছে- সারাদিনের কাজের চাপ, ব্যস্ততা ও ব্যর্থতার হিসেবকে আরও বেশি করে সমস্যায় ফেলে দেয় সহকর্মীর সঙ্গ। 

তারা বলছে, চাপ নিয়ে কাজ করার সময় এমনিতেই মস্তিষ্কের কোষগুলো অতিরিক্ত দায়ভার বহন করে। এ সময় কাজ থেকে সরে আড্ডায় মাতলে মাথার কোষ সাময়িক মুক্তি পায় কিন্তু এর ফল হয় উল্টো। কিছু পরে ফের কাজে বসলে মস্তিষ্ক আর মোটেই মনঃসংযোগ করতে পারে না।

বিশেষ করে সহকর্মীদের সঙ্গে অফিসেরই নানা সমস্যা ভাগ করে নেয়ার সময় তাদের মতামত ও বিচার-বিশ্লেষণ এমনভাবে মনের উপর চেপে বসে, যা প্রভাব বিস্তার করতে থাকে মাথায়। 

এ ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বিশেষ করে প্রাইভেট ও কর্পোরেট অফিসে পদোন্নতির লবিং যোগসূত্র অনেক সহকর্মীর মধ্যেই থাকে। সেসব বাইরে প্রকাশ না পেলেও তা ভেতরে ভেতরে থাকে। এমন কারো সঙ্গ কখনও নিঃস্বার্থ ও লাভজনক নয়।

কারণ আপনার চাপের মুখে থাকাকে সেই সহকর্মী নিজের স্বার্থে ভুলভাবে ব্যবহার করতে পারে। ফলে নতুন করে আরও চাপে পড়তে পারেন বা ভুলে জড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

তা ছাড়া সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় অফিসের নানা সমস্যা উঠে আসতে পারে। আর এই সমস্যায় নিজের অজান্তেই জড়িয়ে যাচ্ছেন। এগুলোও আপনার চাপ বাড়িয়ে দিচ্ছে। 

সব মানুষ একরকম নয়। সহকর্মীর মধ্যে এমনও থাকতে পারে যে, আপনার সম্পর্কে অন্যরা কি বলে সেসব কথাবার্তা আলোচনার মধ্যে চালিয়ে দেয়। পরে তা নিয়ে মস্তিষ্ক ব্যস্ত হয়ে উঠতে পারে। যার ফলে চাপ আরও বাড়তে থাকে।

সুতরাং প্রতিযোগিতামূলক যুগে এসব আলোচনা নিয়ে মস্তিষ্ক কাজ করে চলে অবিরত, আপনার অবচেতনেই। তাই সহকর্মীদের সঙ্গে আড্ডায় সাময়িক আরাম পেলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না বরং কাজের চাপ বাড়ায়।

মনোবিদদের মতে, কাজের চাপ বাড়লে একটু উঠে পাঁয়চারি করে আসুন, চোখে-মুখে পানি দিতে পারেন। দরকারে কিছুক্ষণ হেডফোনে গান শুনুন। এতে চাপ কমবে এবং কাজের মান বাড়বে।

অথবা আড্ডা ও কফি খাওয়ার ইচ্ছে সারুন নিজস্ব কিছু বন্ধুর পরিসরে। সেখানে অফিস প্রসঙ্গ না উঠলেই মস্তিষ্ক বিরাম পাবে। 

সারাদিন অফিসের চাপ কাটাতে অফিসেরই কাউকে বেছে নেওয়া মোটেই ঠিক কাজ নয়। একান্তই তেমন সখ্য গড়ে উঠলে নিজেদের মধ্যে অফিস সংক্রান্ত আলোচনা এড়িয়ে চলুন।

এএইচ/