ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

তাঁতী পাখি বাবুই

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:২১ পিএম, ৩০ জুলাই ২০১৯ মঙ্গলবার

গ্রামগঞ্জে একসময় অতি সহজে দেখা যেত বাবুই পাখি। পরিবেশ ধ্বংসের কারণে আমাদের দেশ থেকে আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে এরা। বাবুই পাখি নিয়ে জীবনানন্দ দাস এবং রজনীকান্তর সৃষ্ট অনবদ্য সাহিত্য আজও মানুষকে আলোড়িত করে। সুন্দর বাসার জন্যই এরা বেশ পরিচিতি লাভ করে।

বাবুই মূলত শিল্পী পাখি। বাসা বুননো পদ্ধতি খুবই চমৎকার এবং শৈল্পিক। যা অতি সহজে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এজন্য এদেরকে তাঁতী পাখি বলেও ডাকা হয়।

বাবুই পাখির ইংরেজি নাম  Weaver, আর বৈজ্ঞানিক নাম  Ploceidae benghalensis. এদের বাসার গঠন বেশ জটিল আর আকৃতি খুব সুন্দর। কয়েক প্রজাতির বাবুই একাধিক কক্ষবিশিষ্ট বাসা তৈরি করতে পারে। অধিকাংশ বাবুই প্রজাতির আবাস সাব-সাহারান আফ্রিকায়, তবে কয়েকটি প্রজাতি এশিয়ায় স্থায়ী। অল্প কয়েকটি প্রজাতিকে বিভিন্ন দেশে অবমুক্ত করা হয়েছে।

বাবুই পাখি দলবদ্ধ হয়ে জীবন যাপনে অভ্যস্ত। স্ত্রী এবং পুরুষ পাখি উভয়ই হলুদাভ বাদামি রঙয়ের হয়। দেখেতেও প্রায় একই রকম।  কিছু প্রজাতি তাদের প্রজনন মৌসুমে বর্ণের ভিন্নতা প্রদর্শন করে। বাংলাদেশে তিন ধরনের বাবুই দেখা যায়- দেশি বাবুই, দাগি বাবুই ও বাংলা বাবুই।

আমাদের দেশে বাংলা ও দাগি বাবুই প্রজাতি বিলুপ্তির পথে, তবে দেশি বাবুই এখনো দেশের গ্রামগঞ্জে তাল, নারিকেল, খেজুর, রেইনট্রি গাছে দলবেঁধে বাসা বোনে।  এরা ঠোঁট দিয়ে তাল ও খেজুরের পাতা লম্বা করে কেটে সুন্দর করে বাসা তৈরি করে। ডালে বা পাতার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে বাবুইর বাসা।

পুরুষ পাখি একাই বাসা তৈরি করে। বাসা তৈরির পর পুরুষ পাখি বাসার উপর আনন্দে নাচে ও গান করে। এভাবে স্ত্রী পাখিকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। এ সময় স্ত্রী পাখি মাঝে মাঝে বাসায় এসে সম্পূর্ণ বাসা ঘুরে দেখে। পছন্দ হলে পুরুষ পাখির সঙ্গে জুটি বেঁধে একসঙ্গে বসবাস শুরু করে।

এরা সাধারণত বিভিন্ন ধরনের বীজ, ধান, ভাত, পোকা, ঘাস, ছোট উদ্ভিদের পাতা, ফুলের মধু ও রেণু ইত্যাদি খেয়ে জীবন ধারণ করে।

গ্রীষ্মকাল এদের প্রজনন ঋতু। ২ থেকে ৪টি ডিম দেয়। ১৫ থেকে ১৭ দিনের মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা হয়। বাচ্চারা কয়েক দিন বাবা-মার সঙ্গে ঘুরাঘুরি করে পরে আস্তে আস্তে নিজেরা অন্যত্র চলে যায়।

এএইচ/