ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

সৌদি বিবাহ সম্পর্কে যে তথ্যগুলো আপনার অজানা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:০৬ পিএম, ৩০ জুলাই ২০১৯ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:০৭ পিএম, ৩০ জুলাই ২০১৯ মঙ্গলবার

আপনি যদি গবেষণা বা অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেন, তাহলে দেখবেন- সৌদি আরব আসলেই একটি মজার দেশ। এটা এমন একটা দেশ যা অনন্য সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের অধিকারী এবং অন্যান্য দেশ থেকে আলাদা। তেমনি মধ্যপ্রাচ্যের প্রাচীন এ দেশের বিবাহ সংস্কৃতিও বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে ভিন্ন। তাই আপনি যদি সৌদির কোন বিবাহ অনুষ্ঠানে যোগ দেন, তাদের বিবাহ সম্পর্কে আপনার অভিজ্ঞতাটা আরও সমৃদ্ধ হতে পারে।

যদিও পারিবারিক রীতিনীতি এবং ঐতিহ্যগত কারণে সৌদি ভূখন্ডের একটা বিবাহের রীতিনীতি অপর বিবাহ থেকেও আলাদা হয়ে থাকে। তবুও একটা সাধারণ সৌদি বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানলে আপনি অবশ্যই বিস্ময়ে চমকে উঠবেন। 

তাহলে অপেক্ষা না করে চলুন জেনে নেয়া যাক, একটা সাধারণ সৌদি বিবাহে কত ধরনের মজার ও বিস্ময়কর বিষয় থাকে। 

১. কয়েক মাস ধরে বিয়ের পরিকল্পনা করা
সৌদি আরবের একটা বিবাহ এক সপ্তাহ বা তার কিছু বেশি সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে না। সৌদিদের বিয়ের পরিকল্পনার জন্য কমপক্ষে তিন মাস সময় প্রয়োজন হয়। তবে আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে- কয়েক মাস ধরে পরিকল্পনা করা ইভেন্টটি শেষ হয় মাত্র কয়েক ঘন্টায়। বিশেষত একটা লেডিস পার্টির মাধ্যমে, যেখানে বিয়ের কনে নিষ্ক্রিয় বসে থাকে এবং সবার কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে শুভেচ্ছা গ্রহণ করে!

২. আমন্ত্রিতদের উপর গুরুত্বপূর্ণ নোট
দ্বিতীয় মজার বিষয়টি হচ্ছে- সৌদি বিবাহে নিমন্ত্রকদের কাছে আমন্ত্রিত অতিথিদের ওপর একটি গুরুত্বপূর্ণ নোট থাকে যা বিবাহ অনুষ্ঠান ত্যাগ করার আগে পড়ে শুনানো হয়। তাতে বিবাহ অনুষ্ঠানে ডাকা অতিথিদের সংখ্যা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয় এবং ওই অনুষ্ঠানে শিশু, সেলফোন এবং ছবি তোলার ব্যাপারেও যে নিষেধাজ্ঞা থাকে সেসব বিষয়ে অবশ্যই একটা নোট থাকে!

৩. সৌদি সব বিবাহই খরুচে নয়
সৌদি আরব সম্বন্ধে একটা ধারণা প্রচলিত আছে যে, দেশটির সব বিবাহই খরুচে, ব্যাপক জাঁকজমকপূর্ণ হয়। কথাটা অনেকাংশে সত্য হলেও সেখানে কিছু সংখ্যক সাধারণ মানের বিবাহও অনুষ্ঠিত হয়। সেসব বিবাহ হোটেল বা বাড়িতে সাধারণ সাজসজ্জা এবং স্বল্প সংখ্যক অতিথির সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত হয়। 

৪. নাচের নিয়ম মনে রাখা
আপনি যদি সত্যিই কোনও বিয়েতে নাচের বিষয়টা সামনে আনতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই প্রবীণদের চলে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বড়রা চলে গেলেই আপনি নাচগান বা পার্টি করতে পারবেন। শুধুমাত্র সম্মান দেখানোর খাতিরেই আপনি বড়দের সামনে নাচতে পারবেন না। 

৫. বিবাহে রঙরস
অতীতে সৌদির বিবাহগুলোতে রঙিন থিম থাকত যেখানে সিদ্ধান্ত নিতে হত যে, কোন দিনে কোন রঙের পোশাক পরতে হবে। তবে সম্প্রতি প্রায় প্রতিটি সৌদি বিবাহই একটি নির্দিষ্ট থিম নিয়েই অনুষ্ঠিত হয়। সেটা হতে পারে একটা সিন্ডারেলা থিম অথবা একটা আশ্চর্যজনক থিম। যা সাজসজ্জা থেকে আমন্ত্রণ কার্ডগুলোতে কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়!

৬. বিশাল পরিমাণের যৌতুক
এই একটি কারণেই সৌদি আরবের অনেক পুরুষ ও মহিলা বর্তমানে বিয়ে করতে পারছেন না। সেটা হচ্ছে- উচ্চ পর্যায়ের মোহরানা। মোহরানা হলো বিয়ের সময় স্ত্রীকে দেওয়া এক প্রকার উপহার। বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার আগে এটা নিয়ে চলে ব্যাপক দরকষাকষি। যার ফলে এটা সৌদি রিয়ালে ৫০ হাজার থেকে পাঁচ লাখ পর্যন্ত ধার্য করা হয়। 

৭. পাত্রীকে একাই আসতে হয়
পশ্চিমা বিশ্বে এবং এশিয়ার বিয়েতে দেখা যায় কনে তাঁর পরিবারের বহুসংখ্যক সদস্যদের সঙ্গে পায়ে হেঁটে বা কোলে চড়ে আসেন। কিন্তু সৌদি আরবে বিষয়টি একেবারেই ভিন্ন। এখানে নববধূকে একাই বিয়ের আসরে আসতে হয়।

৮. সাদা পোশাক
সম্প্রতি সৌদি নববধূরা তাদের বিবাহের জন্য সাদা পোশাক বেছে নিতে শুরু করেছেন। দেশটির ঐতিহ্যবাহী সোনালী ও লাল পোশাকের পরিবর্তে সেখানে এখন সাদা রঙের পোশাক জায়গা করে নিয়েছে।

৯. বদলে গেছে মেহেদির সাজ
আমরা সবাই জানি যে, সৌদি কনেকে অবশ্যই তার হাত ও পায়ে মেহেদী থাকতে হয়। অতীতে দেশটির নববধূরা তাদের তালুতে ও পায়ে ভরাট করে মেহেদি ব্যাবহার করত, যা ছিল তাদের  ঐতিহ্যবাহী ডিজাইন। কিন্তু বর্তমানে সেখানে ভারতীয় এবং মরোক্কান ডিজাইনগুলো স্থান করে নিয়েছে। যা অতি সূক্ষ্ম এবং ফ্যাশনে বৈচিত্র এনেছে।

১০. বিবাহপূর্ব পার্টিতে ঐতিহ্যবাহী খাবার
সৌদিতে মূল বিয়ের দিনের আগে বিবাহ-পূর্ব কিছু পার্টি বা অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এই অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সর্বোত্তম অংশ হল- মান্ডি নামের বিশেষ কিছু ঐতিহ্যবাহী খাবার। যা সবাইকে পরিবেশন করা হয়।

এনএস/এসি