ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১

তামিম-বিজয়কে হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৫১ পিএম, ৩১ জুলাই ২০১৯ বুধবার

শ্রীলঙ্কার দেয়া ২৯৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা যেমন হওয়া উচিৎ ছিল, তার কাছ দিয়েও হাঁটতে পারেনি টাইগাররা। কারণ সেই ওপেনিং ব্যর্থতা। ফের ব্যর্থ মনোরথে ফিরলেন তামিম। যাতে শুরুতেই ধাক্কা খেল বাংলাদেশ।   

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৮ ওভারে তামিমকে হারিয়ে ২৯ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। ক্রিজে আছেন সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া ওপেনার এনামুল হক বিজয় ১৪ রানে এবং সৌম্য সরকার ১০ রানে। 

এর আগে টানা ছয় ম্যাচে বোল্ড হওয়া তামিম আজ আউট হয়েছেন উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে। অধিনায়ক হিসেবে ব্যর্থ তামিম এদিন সবাইকে হতাশ করে ফেরেন মাত্র ২ রান, ছয় বল থেকে। ফলে মাত্র ৪ রানেই প্রথম উইকেট হারায় দল।

এঞ্জেলো ম্যাথিউজ ও কুশল মেন্ডিসের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৯৫ রানের
চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় শ্রীলঙ্কা। আগেই দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ খোয়ানো বাংলাদেশকে তাই হোয়াইটওয়াশ এড়াতে হলে এ ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই। 

টাইগার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৯৮ রানে তিন টপ অর্ডারকে হারিয়ে কিছুটা চাপে পরে শ্রীলঙ্কা। তবে এঞ্জেলো ম্যাথিউজ ও কুশল মেন্ডিসের জুটিতে সেই চাপ কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে স্বাগতিকরা। এরইমধ্যে চতুর্থ উইকেটে একশ রান যোগ করেছেন এই দু’জন।  
 
দারুণ এক জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে দিয়েছেন এ দুই ব্যাটসম্যান। একশ পেরিয়েই বিচ্ছিন্ন হয় তাদের এ জুটি। চতুর্থ উইকেটে ১১৯ বলে একশ স্পর্শ করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। ফিফটি করা মেন্ডিস আউট হয়েছেন ৫৪ রান করে সৌম্যের বলে। ফলে ১৯৯ রানে গিয়ে চতুর্থ উইকেট হারায় লঙ্কা।

এরপরই টাইগার বোলারদের ওপর শুরু হয় লঙ্কান তাণ্ডব। শানাকা ও জয়সুরিয়াকে ফিরিয়ে সে তাণ্ডব কিছুটা কমানোর চেষ্টা করেন শফিউল। তবুও থামানো যায়নি সে ঝড়। কারণ তখনও যে ক্রিজে ম্যাথিউজ। যিনি রিভিউয়ে সৌম্যের শিকার হয়ে থামেন শেষ ওভারে। তবে তার আগেই মূল কাজটা করে গেছেন সাবেক এই অধিনায়ক। ফেরার আগে ৯০ বলে সাত চার ও এক ছয়ে সর্বোচ্চ ৮৭ রানের ইনিংস খেলেন ম্যাথিউজ।

তাঁর আগে ছোট্ট ঝড় তোলা শানাকা ফেরেন ১৪ বলে ৩০ করে। এছাড়া জয়সুরিয়া ৭ বলে ১৩ এবং ডি সিলভা অপরাজিত ৫ বলে ১২ করলে নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৪ রানে গিয়ে পৌঁছে লঙ্কার স্কোর। 

টাইগারদের হয়ে শফিউল ও সৌম্য ৩টি করে উইকেট তুলে নিতে সক্ষম হন। এর মধ্যে শেষ ওভারে পরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে হ্যাট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান পার্টটাইম বোলার সৌম্য সরকার। এছাড়া রুবেল ও তাইজুল একটি করে উইকেট লাভ করেন। তবে মাহমুদউল্লাহকে দিয়ে ৩ ওভার বল করালে ২২ রান দেন তিনি।   

বুধবার কলম্বোর রনসিংহ প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে করুনারত্নের দল। তবে শুরুটা ভালো হয়নি, মাত্র ১৩ রানেই উইকেট হারায় লঙ্কা। শফিউলের শিকার হয়ে ফেরেন আগের ম্যাচের সেরা স্কোরার আভিস্কা ফার্নান্ডো। আজ ৬ রান করেই ফিরতে হয় লেগ বিফোর হয়ে। 

এরপর অবশ্য দ্বিতীয় উইকেটে কুশল পেরেরাকে নিয়ে প্রাথমিক ধাক্কাটা ভালোভাবেই সামাল দেন অধিনায়ক কাম ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে। দুজনেই যখন সাবলীল খেলে ফিফটির কাছাকাছি চলে যান, তখনই বল হাতে টাইগারভক্তদের মুখে হাঁসি ফিরিয়ে আনেন তাইজুল ও রুবেল। এক ওভার ও ২ রানের ব্যবধানে এই দুই বোলার তুলে নেন লঙ্কান দুই সেট ব্যাটসম্যানকে। 

তাইজুলের শিকার হয়ে ৪৬ রান করে ফেরেন করুনারত্নে, আর ৪২ রানে রুবেলের শিকার হন কুশল পেরেরা। দুজনেই ক্যাচ দেন উইকেটের পিছনে মুশফিকের গ্লাভসে। প্রথমজন ছয়টি এবং পরেরজন পাঁচটি বাউন্ডারি হাঁকান। ফলে ৯৮ রানেই তিন উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। 

তিন ম্যাচের সিরিজ আগেই নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় শেষ ম্যাচে চারটি পরিবর্তন নিয়ে খেলছে শ্রীলঙ্কা। যা অনুমিতই ছিল। রিজার্ভ বেঞ্চ বাজিয়ে দেখতে চায় দলটির ম্যানেজমেন্ট। তাই একাদশের বাইরে রাখা হয়েছে নুয়ান প্রদিপ, ইসুরু উদানা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও লাহিরু থিরিমান্নেকে। তাদের জায়গায় একাদশে এসেছেন দাসুন শানাকা, শিহান জয়াসুরিয়া, ভানিদু হাসারাঙ্গা ও তাসুন রাজিথা।

অন্যদিকে বাংলাদেশের একাদশে নেই মোস্তাফিজ, ফিরলেন এনামুল হক বিজয় ও রুবেল হোসেন। 

এদিন টসের আগে গা গরমের সময় হালকা চোট পেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তাই বাধ্য হয়েই একটি পরিবর্তন করতে হয়েছে। তার জায়গায় একাদশে ফিরেছেন রুবেল হোসেন।

এছাড়া অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের জায়গায় ফিরেছেন এনামুল হক বিজয়। প্রায় এক বছর পর আবার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলছেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। 

এনএস/আরকে